পোড়ানো হলো ২টি শ্যালো মেশিন, ধান আবাদ অনিশ্চিত
Published: 10th, February 2025 GMT
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এক কৃষকের দুটি শ্যালো মেশিন পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের দিয়াড় মানিকচক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ১৬ বিঘা জমির ধান আবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মো. ইসরাইল নামের ভুক্তভোগী কৃষক।
ইসরাইলের বাড়ি দিয়াড় মানিকচক গ্রামেই। অভিযোগে একই গ্রামের মৃত মসলেম উদ্দিনের ছেলে মো.
অভিযোগে বলা হয়, দিয়াড় মানিকচক মৌজার ৩৪০৪, ৩৪০৬, ৩৪০৭ ও ৩৪০২ নম্বর আরএস দাগের ২ দশমিক ৬৫ একর জমি কিনে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করছেন ইসরাইল। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্তরা জাল দালিল করে এ জমি দখলের চেষ্টা করেছেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তারা দফায় দফায় জমিগুলো দখলের চেষ্টা করে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার ভোরে তারা জমিতে থাকা দুটি শ্যালো মেশিন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
হাওর পাড়ের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
মাঠভরা সবুজের হাসি, মাঘের বৃষ্টিতে বেড়েছে ঝিলিক
কৃষক ইসরাইল জানান, শ্যালো মেশিন দুটির মাধ্যমে তার নিজের এবং অন্যের মিলিয়ে মোট ১৬ বিঘা জমি চাষাবাদ হয়। তাদের জমিগুলোতে ধানচাষ করা হয়েছে। ধানগাছ এখন ছোট। প্রতিনিয়ত সেচ দিতে হচ্ছে। শ্যালো মেশিন দুটি পুড়িয়ে দেওয়ায় সেচ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এরফলে প্রায় ১৬ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলেও জানান ইসরাইল।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. জয়নাল জানান, তারা জমির দিকে যাননি। কে বা কারা শ্যালো মেশিন পুড়িয়েছে তা তিনি জানেন না। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, সকালে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল, বিক্ষুব্ধ জনতার থানা ঘেরাও
মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলার আসামি জামিনে ছাড়া পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত অফিসারের শাস্তির দাবিতে মেহেরপুর সদর থানা ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী কয়েকশ ছাত্র ছাত্রী সদর থানা ঘেরাও করে রাখে। পরে পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম তদন্ত কর্মকর্তা সুজয় কুমারকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এছাড়া মেহেরপুর সেনাবাহিনীর মেজর ফারহানের নেতৃত্বে একটি টিম থানায় গিয়ে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ধর্ষকের বিচার হবে বলে আশ্বাস দেন।
জানা যায়, গেল বছরের ৯ সেপ্টেম্বর চকলেট দেওয়ার নাম করে মেহেরপুরে ৯ বছরের শিশুকে এক তরুণ তাদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় ওই ছেলের এক বন্ধু এই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। পরে ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। এরপর আবারও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবি করা চাঁদার টাকা না দেওয়ায় আসামিরা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে শিশুটির মা বাদী হয়ে ৩ জনের নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়।
জামিনের পর তারা আবারও ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে বলে। এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলার বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এসময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত চাপ দিতে থাকেন।
খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী তুষার ইমরান ও সিয়াম আহাম্মেদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তুষার ও সিয়ামের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে উপস্থিত হন পুলিশ সুপার মাকসুদা খানম। বিচারের আশ্বাস দিয়ে পুলিশ সুপার স্থান ত্যাগ করতে চাইলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের শর্ত মেনে মধ্য রাতে এসআই প্রত্যাহার, আসামীর জামিন বাতিলে উদ্যোগী হওয়া ও আসামিদের পুনরায় গ্রেপ্তারের আশ্বাসে ছাত্র-জনতা স্থান ত্যাগ করেন।
পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার খানম বলেন, ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী উপরিদর্শক (এসআই) সুজয় কুমার মল্লিককে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য দুজনকে আটক করতে সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।