মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় মো. ইদ্রিস আলী নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সন্ধ্যায় তাকে অপহরণ করা হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

অপহরণের শিকার ইদ্রিসের স্ত্রী জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছে অপহরণকারীরা। এই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হবে। আর কাউকে জানালে তার স্বামীর লাশ পাঠানো হবে।
 
ইদ্রিস উপজেলার বালিয়াটি শিমুলিয়া গ্রামের মো.

নজর আলী ছেলে। এ ঘটনায় রোববার সাটুরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তার ভাই আমিনুর ইসলাম।

ইদ্রিস আলীর স্ত্রী নিপা আক্তার বলেন, রোববার তিনবার ফোন দিয়েছে অপহরণকারীরা। তারা ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে। মুক্তিপণ না দিলে তার স্বামীকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। একইভাবে আজ সোমবার অপহরণকারীরা ইদ্রিসের স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে জানতে চাই টাকা যোগাড় করা হয়েছে কিনা? পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানালে তোমার স্বামীর লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। 

এ সময় অপহরণের শিকার ইদ্রিসের সঙ্গে তার স্ত্রীর কথা বলার সুযোগ দেয় অপহরণকারী। এ বিষয়ে নিপা বলেন, ফোনে তার স্বামী জানান, তিনি কোথায় আছেন তা জানেন না। টাকার জন্য ওরা চাপ দিচ্ছে। ওরা বলেছে, টাকা না দিলে তার স্বামীকে মেরে ফেলবে।

নিপা আক্তার আরও বলেন, মুক্তিপণের টাকা কোথায় দেব জানতে চাইলে তারা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে বলে জানায়। অপহরণকারীরা বারবার আমার স্বামীর মোবাইল দিয়ে টাকাসহ হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। 

এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালু বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের ধরার চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ অপহরণ অপহরণক র র

এছাড়াও পড়ুন:

উদ্ধার হওয়া খুলি-হাড় নিখোঁজ শিশু সাদিয়ার, দাবি পরিবারের

কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় প্রায় ৯ মাস আগে নিখোঁজ হয় ৫ বছরের শিশু হালিমাতুছ সাদিয়া। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার সাদিয়ার বাড়ির পাশে শুকিয়ে যাওয়া একটি দিঘির খাদ (গর্ত) থেকে শিশুর মাথার খুলি ও চারটি হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। বাবা আকতার হোসেন ও মা আয়েশা ছিদ্দিকার দাবি, উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি ও হাড় তাদের মেয়ে সাদিয়ার। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও পুলিশ বলছে, ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় করতে হবে। 

রোববার উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের মধ্যম ছিলোনিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা দিঘির গর্তে মাছ খুঁজতে গিয়ে শিশুর মাথার খুলি ও চারটি হাড় পান। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম ঘটনাস্থল গিয়ে হাড় ও খুলি উদ্ধার করেন। এ সময় শিশু সাদিয়ার বাবা আকতার হোসেন ও মা আয়েশা ছিদ্দিকা উপস্থিত ছিলেন।

আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। তখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে পুলিশি কার্যক্রম তেমন ছিল না। মেয়েকে উদ্ধারে তখন পুলিশের কোনো সহায়তা পাইনি। থানায় শুধু নিখোঁজের একটি ডায়েরি (জিডি) করেছি। গত বছরের নভেম্বরে আমি বাদী হয়ে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে প্রতিবেশী হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহারের নামে অপহরণের একটি মামলা করি। তাদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। 

মামলার পর হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহার পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত উল্যাহ বলেন, শিশুটি নিখোঁজের খবর পেয়ে গত বছরের ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাকসামের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিঘিসহ গ্রামের তিনটি পুকুরে সন্ধান করেন। ওই সময় দিঘির পাড়ে শিশুটির পায়ের জুতা পাওয়া গিয়েছিল। এখন দিঘির একটি অংশের খাদে শিশুর মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া গেছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করবে, এটাই আমাদের দাবি।

মঙ্গলবার লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, উদ্ধার করা খুলি ও হাড় সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য ওই শিশুর বাবা-মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। 

ওসি আরও বলেন, শিশুটি অপহরণের অভিযোগে যেহেতু আদালতের একটি মামলা পিবিআইয়ের তদন্তাধীন, সেহেতু আমরা নতুন করে এখনই কোনো মামলা নেব না।

পিবিআই কুমিল্লার এস আই মো. ইব্রাহিম সমকালকে জানান, গত বছরের নভেম্বরে শিশুটি অপহরণের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়। অপহরণের বিষয়ে একটি অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরে আদালতের নির্দেশে রোববার সকালে খাদিজা জাহান রিয়া নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার খাদিজা একই উপজেলার ভুশ্চি গ্রামের ইমাম হোসেনের স্ত্রী এবং নিখোঁজ সাদিয়ার বড় বোন ফাতেমার প্রাক্তন স্বামীর বড় বোন। অপহরণ ঘটনার বিষয়ে আসামিদের সঙ্গে তার কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে। তবে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালগুলো নিখোঁজ ওই শিশুর কি-না, তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে চবির ৫ শিক্ষার্থী অপহরণের অভিযোগ
  • বেড়ানোর কথা বলে অপহরণ, মুক্তিপণ না পেয়ে মামার হাতে ভাগনে খুন
  • উদ্ধার হওয়া খুলি-হাড় নিখোঁজ শিশু সাদিয়ার, দাবি পরিবারের
  • পাহাড়ে শণ কাটতে গিয়েছিলেন যুবক, অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
  • অপহরণকারী আখ্যা দিয়ে বাবাকে পেটাচ্ছিল, পাশে কাঁদছিল শিশু রাইসা
  • মেয়েলি কণ্ঠে সম্পর্ক করে অপহরণ, যুবক গ্রেপ্তার
  • যশোর থেকে অপহৃত যুবক গোপালগঞ্জে উদ্ধার, অপহরণকারী আটক
  • টেকনাফে যুবক অপহরণ, দশ লাখ মুক্তিপণ দাবি  
  • টেকনাফে পাহাড়ি এলাকায় দিনমজুর অপহৃত
  • মায়ের জন্য কাঁদছিল শিশুটি, অপহরণকারী ভেবে বাবাকে পেটালেন জনতা