যশোরে রাতভর ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে আওয়ামী লীগের ৯ নেতাকর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জেলার বিভিন্ন এলাকায় রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী বাবুল।

আটককৃতরা হলেন— বলরামপুরের মৃত হাজী খোরশেদ আলম বিশ্বাসের ছেলে ফেরদৌস আলম, যশোরের উপশহর ডি-ব্লকের মনিরুজ্জামানের ছেলে মিজানুর রহমান রাফি, শেখহাটি তরফ নওয়াপাড়া মৃত বজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল হামিদ খোকন; ফতেপুরের ভায়না গ্রামের মৃত শুকুমার ঘোষের ছেলে মদন কুমার ঘোষ, একই গ্রামের মৃত বদর উদ্দীনের ছেলে শেখ হারুন অর রশীদ, রামকুঞ্চপুরের মৃত হোসেন আলী মোল্যার ছেলে সোহরাব হোসেন শিহাব, লেবুতলার এনায়েতপুরের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহিনুর রহমান, একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে তুষার ও লেবুতলার মৃত আকমলের ছেলে জাহাদায়।

আরো পড়ুন:

মাকে গাছে বেঁধে ঘরে আগুন, ছেলে গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট: সুনামগঞ্জে গ্রেপ্তার হলেন যারা

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী বাবুল বলেন, ‘‘আটকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে বোমাবাজির অভিযোগে গত ১৯ নভেম্বর কোতোয়াালি থানায় মামলা করেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মঞ্জুরুল ইসলাম। মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জন। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই নয়জনকে আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’’

রিটন/এনএইচ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রামে মোগল স্থাপত্যরীতির এক মসজিদ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাঁথী তিন গম্বুজ মসজিদ। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদের তীরে অবস্থিত মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। মসজিদের পাশেই আছে কারুকার্যখচিত একটি মঠ। প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন এই স্থাপনা দুটি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে স্থাপনা দুটি।

পুরোনো এই মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। মসজিদটি ঠিক কত সালে বা কে নির্মাণ করেছিলেন, এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নওগাঁ জেলা তথ্য বাতায়ন ও আত্রাই উপজেলা তথ্য বাতায়নেও এই মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই।

বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদ সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল আমলে নির্মিত। সুবেদার ইসলাম খানের আমলে (১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সাল) মসজিদটি স্থাপন করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। মসজিদের পাশে অবস্থিত মঠটিও একই সময়ে নির্মাণ করা হয়। লোকশ্রুতি আছে, এই মসজিদ ও মঠটি এক রাতেই জিনেরা নির্মাণ করেন। এ জন্য মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে জিনের মসজিদ নামে পরিচিত।

মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট। এর স্থাপত্যশৈলী মধ্যযুগীয় অন্য সব স্থাপনার মতোই। মসজিদের মূল ভবনটি উত্তর-দক্ষিণ লম্বায় ১৭ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৪ হাত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল প্রায় এক ফুট পুরু। মসজিদের সম্মুখভাগে আছে একটি দরজা। ছাদের ওপর একই সারিতে আছে তিনটি গম্বুজ। তিনটি গম্বুজের আকৃতি একই সমান। দুই কাতারে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। পরে ১৯৮০ সালের দিকে মসজিদের পূর্ব দিকে নতুন আরেকটি মসজিদ ভবন তৈরি করেন স্থানীয়রা। নতুন এই মসজিদে শতাধিক মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।

ইসলামগাঁথী গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমার তো দূরের কথা, আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এই মসজিদ ও মঠ কবেকার।’

১০ বছরের বেশি সময় মসজিদটিতে ইমামতি করেন আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। এখানে নামাজ আদায় করেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দা ও আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘শুনতেছি মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য নাকি মসজিদ ও মঠ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মসজিদ ও মঠ ভেঙে না ফেলে বরং এই স্থাপনা দুটি সংরক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা নেওয়া উচিত। যেহেতু ইসলামে মসজিদ স্থানান্তরের বিধান আছে, তাই প্রয়োজনে অন্যত্র নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ