কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের বাঁশজানি সীমান্তের ভারতীয় অংশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ সোমবার সকালে বাংলাদেশ-ভারত সীমার আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৭৮-এর সাবপিলার ৯ এসের পাশে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার ঝাকুয়াটারি গ্রামে এই সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে।

কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির পরিচালক লে.

কর্নেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে বিজিবির সদস্যরা সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বাঁশজানি সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার ভোরে বিএসএফের সদস্যরা সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। সীমান্ত এলাকায় বিপুলসংখ্যক বিএসএফ সদস্য উপস্থিত রয়েছেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। পতাকা বৈঠকগুলোতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

বাঁশজানি গ্রামের বাসিন্দা শামীম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী আমাদের মসজিদের পাশে ভারতীয় অংশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। ওই সিসি ক্যামেরা ভারতীয় অংশে হলেও ক্যামেরার মুখ বাংলাদেশের দিকে, এতে আমাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।’

কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভূরুঙ্গামারীর বাঁশজানি সীমান্তের ভারতীয় অংশে বিএসএফের সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। এখন পর্যন্ত তারা ওই ক্যামেরা সরিয়ে নেয়নি। আমরা পতাকা বৈঠকের জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এসএফ র স

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্তে গুলি করে ও পিটিয়ে দুই বাংলাদেশিকে হত্যার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার এবং ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। দোয়ারাবাজারে কৃষককে গুলি করে খাসিয়ারা এবং মহেশপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্র উভয় ঘটনা নিশ্চিত করেছে।

দোয়ারাবাজার সীমান্তে নিহতের নাম কুটি মিয়া (৫০)। শনিবার রাতে বাগানবাড়ি-রিংকু সীমান্ত হাট দিয়ে নিহতের লাশ হস্তান্তর করার কথা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এখনও জানা যায়নি। লাশ হস্তান্তরের পর বলতে পারব।’

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে দোয়ারাবাজারের পেকপাড়া এবং ভারতের মোকামছড়া দিয়ে সাত বাংলাদেশি ভারতে যান। তারা হলেন– মনিরুল্লার ছেলে কুটি মিয়া (৫০), আইয়ুব আলীর ছেলে হানিফ মিয়া (৩০), এরাবুল্লাহর ছেলে জরিফ উদ্দিন (৪৫) ও আকবর আলী (৩১), অজুদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৫), ময়না মিয়ার ছেলে ইসহাক (৫০) ও চাঁন মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া (৫৫)। তাদের সবার বাড়ি পেকপাড়ায়।

তারা সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭ কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে নথরাইয়ের সুপারি বাগানে যান। সেখানে ভারতীয় খাসিয়াদের সঙ্গে কলহে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে খাসিয়ারা ধাওয়া দিলে কুটি মিয়া ছাড়া বাকি ছয়জন ফেরত আসেন। তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেনি। ভারতের ভেতরে ৭ কিলোমিটার দূরে ঘটেছে। সেখানকার পুলিশ বিষয়টি দেখভাল করছে। বাংলাদেশ পুলিশও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে নিহতের লাশ শিলং হাসপাতালে আছে।

কুটি মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম জানান, তাঁর স্বামী বৃহস্পতিবার সকালে ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে বের হন। এখন শুনতে পাচ্ছেন, খাসিয়ারা গুলি করে হত্যা করেছে। স্বামীর লাশ ফেরত চান তিনি।

এদিকে, মহেশপুর সীমান্তে ইছামতী নদীর ভারতীয় অংশে বাংলাদেশি যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। জায়গাটি পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার ধানতলা থানার হাবাসপুর গ্রামে। তাঁকে বিএসএফ সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। বিকেলে মৃতদেহ ভেসে উঠলেও শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সেটি উদ্ধার করে বিএসএফ নিয়ে যায়।

মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম মৃধা জানান, নানাভাবে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, এটি বাংলাদেশি যুবকের মৃতদেহ। তবে নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তাঁর বয়স আনুমানিক ২৪ বছর। মৃতদেহটি বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার ওয়াসিম আলীর কিনা, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ নিয়ে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক হলে বিস্তারিত জানা যাবে।

বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার রমজান আলী অভিযোগ করেন, কয়েক দিন আগে ভারতে যাওয়ার সময় তাঁর ছেলে ওয়াসিম বিএসএফের হাতে আটক হয়েছিল। ঘটনাটি তিনি স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে জানিয়েছেন। নিহত যুবক তাঁর ছেলে বলে তিনি দাবি করেন।

ঝিনাইদহ বিজিবি-৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, মৃতদেহটি নদীর ভারতীয় অংশে ছিল। রাতে বিএসএফ সেটি নিয়ে গেছে। তারা (বিএসএফ) না জানানো পর্যন্ত পরিচয় সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না।

তিনি আরও জানান, রমজান আলীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তারা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সীমান্তে গুলি করে ও পিটিয়ে দুই বাংলাদেশিকে হত্যার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে