এজেন্সির অবহেলায় কেউ পবিত্র হজ করতে না পারলে ব্যবস্থা: ধর্ম উপদেষ্টা
Published: 10th, February 2025 GMT
ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এজেন্সির অবহেলা বা গাফিলতির কারণে কোনো হজযাত্রী পবিত্র হজ করতে না পারলে সেই দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। আর এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লিখিত বক্তব্যে উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বেসরকারি এজেন্সিগুলোও তাদের অধীন নিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য সৌদি সরকারের গাইডলাইন অনুসারে কাজ করে যাচ্ছে। অনেকের কার্যক্রম বেশ সন্তোষজনক, আবার অনেকে ধীরগতিতে চলছে। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে হজ সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব চুক্তি সম্পাদনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল রোববারও বার্তা পাঠানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, চুক্তি সম্পাদনের গতি খুবই শ্লথ এবং অনেক ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। ডেডলাইন ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং এটি কোনোভাবেই বাড়ানো হবে না।
উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, হজ সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চুক্তি করার বিষয়টি গত বছরের ২৩ অক্টোবর সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। পরে আরও কয়েকবার পত্র দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়েছে। গতকালই এজেন্সিকে তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। আজ সকালেও সংশ্লিষ্ট এজেন্সির মালিক বা পরিচালকদের সঙ্গে সভা হয়েছে।
এজেন্সিগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তারা যেন সৌদি সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই মিনায় ও আরাফায় তাঁবু ও ক্যাটারিংয়ের জন্য সার্ভিস কোম্পানি, বাড়ি বা হোটেল কর্তৃপক্ষ, পরিবহন কোম্পানি এবং ক্যাটারিং নিতে আগ্রহী হলে ক্যাটারিং সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিগুলো সম্পাদন করে। এজেন্সির অবহেলা বা গাফিলতির কারণে কোনো হজযাত্রী হজ করতে না পারলে সে দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। এ দায় কোনোভাবেই সৌদি সরকার কিংবা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বহন করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। তার মধ্যে এবার নিবন্ধিত মোট হজযাত্রী ৮৭ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন।
বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর চুক্তির বিষয়ে ধীরগতি নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম সচিব (হজ অনুবিভাগ) মো.
হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের বিষয়ে চুক্তির কাজ হয়েছে উল্লেখ করেন মঞ্জুরুল হক জানান, বেসরকারি ৮১ হাজার ৯০০ জনের মধ্যে ৪৫ হাজারের চুক্তিগুলো নিশ্চিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আ ফ ম খ ল দ হ স ন বল ন ১৪ ফ ব র য় র র উপদ ষ ট ব সরক র হজয ত র ব যবস থ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রামে মোগল স্থাপত্যরীতির এক মসজিদ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাঁথী তিন গম্বুজ মসজিদ। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদের তীরে অবস্থিত মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। মসজিদের পাশেই আছে কারুকার্যখচিত একটি মঠ। প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন এই স্থাপনা দুটি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে স্থাপনা দুটি।
পুরোনো এই মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। মসজিদটি ঠিক কত সালে বা কে নির্মাণ করেছিলেন, এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নওগাঁ জেলা তথ্য বাতায়ন ও আত্রাই উপজেলা তথ্য বাতায়নেও এই মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই।
বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদ সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল আমলে নির্মিত। সুবেদার ইসলাম খানের আমলে (১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সাল) মসজিদটি স্থাপন করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। মসজিদের পাশে অবস্থিত মঠটিও একই সময়ে নির্মাণ করা হয়। লোকশ্রুতি আছে, এই মসজিদ ও মঠটি এক রাতেই জিনেরা নির্মাণ করেন। এ জন্য মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে জিনের মসজিদ নামে পরিচিত।
মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট। এর স্থাপত্যশৈলী মধ্যযুগীয় অন্য সব স্থাপনার মতোই। মসজিদের মূল ভবনটি উত্তর-দক্ষিণ লম্বায় ১৭ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৪ হাত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল প্রায় এক ফুট পুরু। মসজিদের সম্মুখভাগে আছে একটি দরজা। ছাদের ওপর একই সারিতে আছে তিনটি গম্বুজ। তিনটি গম্বুজের আকৃতি একই সমান। দুই কাতারে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। পরে ১৯৮০ সালের দিকে মসজিদের পূর্ব দিকে নতুন আরেকটি মসজিদ ভবন তৈরি করেন স্থানীয়রা। নতুন এই মসজিদে শতাধিক মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।
ইসলামগাঁথী গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমার তো দূরের কথা, আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এই মসজিদ ও মঠ কবেকার।’
১০ বছরের বেশি সময় মসজিদটিতে ইমামতি করেন আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। এখানে নামাজ আদায় করেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ও আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘শুনতেছি মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য নাকি মসজিদ ও মঠ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মসজিদ ও মঠ ভেঙে না ফেলে বরং এই স্থাপনা দুটি সংরক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা নেওয়া উচিত। যেহেতু ইসলামে মসজিদ স্থানান্তরের বিধান আছে, তাই প্রয়োজনে অন্যত্র নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে।’