ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তাঁর কথিত প্রেমিককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আলী মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন। ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হাফিজা খাতুন (৪২) ও আবদুল্লাহ আল মাসুম (৩৬)। আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি দুজনকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অপর আসামি মো.

আরমান মামলার সাক্ষ্য চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। রায়ের সময় আদালতে হাফিজা খাতুন উপস্থিত ছিলেন। মামলার সাক্ষ্য চলাকালে জামিনে গিয়ে পলাতক থাকায় আবদুল্লাহ আল মাসুমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

আদালত ও মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৮ জুন মুক্তাগাছা উপজেলার ভাবকী এলাকার দুবাইপ্রবাসী হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হাফিজা খাতুন ও হেলাল উদ্দিনের ১৪ বছরের সংসারজীবনে দুটি কন্যাসন্তান ছিল। ঘটনার তিন বছর আগে হেলাল উদ্দিন দুবাই চলে যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী ডেসটিনিতে ভর্তি হন। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঘাগড়া গ্রামের আবদুল্লাহ আল মাসুমের অধীনে কাজ করতেন। সেই সুবাদে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হাফিজাকে বিয়ের আশ্বাসে ব্যবসার জন্য আড়াই লাখ টাকা নেন মাসুম। হেলাল উদ্দিন ২০১১ সালের ২৫ মে দেশে আসেন। এরপর স্ত্রীর কাছে টাকার হিসাব চাইলে নিজেদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। হেলাল উদ্দিন স্ত্রীর জন্য সোনার হার ও চেইন নিয়ে আসেন। সেই স্বর্ণালংকারও বন্ধক রেখে মাসুমকে ৪৫ হাজার টাকা দেন তাঁর স্ত্রী। এরপর খুনের পরিকল্পনা শুরু হয়। ঘটনার দিন হাফিজা তাঁর স্বামীকে ছয়টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে মাসুমকে মুঠোফোনে খবর দেন। মাসুম ও তাঁর এক সহযোগী দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাড়িতে গিয়ে হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে মাসুমের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতের আক্রমণে খুন হয়েছেন বলে প্রচার চালানো হয়।

এ ঘটনায় নিহত হেলাল উদ্দিনের বোন সাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় পুলিশ হাফিজা খাতুন, আবদুল্লাহ আল মাসুম ও মো. আরমান নামের তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের পর হাফিজা খাতুন দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করাই তাঁদের পেশা

প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বামীকে হত্যা, প্রেমিকসহ স্ত্রীর আমৃত্যু কারাদণ্ড
  • স্বামীকে গলাকেটে হত্যা, স্ত্রী ও তার প্রেমিকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
  • ময়মনসিংহে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে গলাকেটে হত্যা, স্ত্রী ও প্রেমিকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
  • গাজীপুরে বেতনের দাবিতে রাতে মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের আশ্বাসে ঘরে ফিরলেন শ্রমিকেরা
  • ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় পুলিশ নিহত
  • মুক্তাগাছায় ট্রাকচাপায় এএসআই নিহত
  • ট্রাকচাপায় এএসআই নিহত
  • যাত্রী হিসেবে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে মুক্তিপণ আদায় করত তারা
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করাই তাঁদের পেশা