সারাদেশে বিদায়ী জানুয়ারি মাসে ৬৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৬৭৭ জন নিহত ও ১২৭১ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ৫৭টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৬টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত, ৯ জন আহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এছাড়া এই সময়ে ২৮৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩০১ জন নিহত ও ২৩৯ জন আহত হয়েছেন। মাসটিতে সর্বমোট সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ৭৩২টি দুর্ঘটনায় ৭৫৪ জন নিহত এবং ১৩০৩ জন আহত হয়েছেন।

আজ সোমবার সংবাদ মাধ্যমে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো.

মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে— বেপরোয়া গতি; বিপজ্জনক ওভারটেকিং; সড়কের নির্মাণ ত্রুটি; ফিটনেসবিহীন যানবাহন; চালক, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা; চালকের অদক্ষতা ও ট্রাফিক আইন সংক্রান্ত অজ্ঞতা; পরিবহন চালক ও মালিকের বেপরোয়া মনোভাব; চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার; মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো; অরক্ষিত রেলক্রসিং; রাস্তার উপর হাট-বাজার, ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা; ট্রাফিক আইন প্রয়োগে দুর্নীতি; ট্রাফিক আইন প্রয়োগে দুর্বলতা; ট্রাফিক আইন অমান্য করা; রোড মার্কিং না থাকা; সড়কে চাঁদাবাজি; চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা; সড়কে আলোকসজ্জা না থাকা; রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু না থাকা; সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি না থাকা এবং দেশব্যাপী নিরাপদ, আধুনিক ও স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে টুকটুকি-ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা নির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়াকে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— দুর্ঘটনায় মানুষের জীবন রক্ষায় সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা; দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করা; সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সড়ক নিরাপত্তা উইং চালু করা; সড়ক নিরাপত্তায় ইতিমধ্যে প্রণীত যাবতীয় সুপারিশমালা বাস্তবায়নে নানামুখী কার্যক্রম শুরু করা; দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা। জেব্রা ক্রসিং অঙ্কন ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; গণপরিবহন চালকদের অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা; সড়ক পরিবহন সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। অনিয়ম-দুর্নীতি ও সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা; গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন করা; সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিলে আবেদনের সময়সীমা ৬ মাস বৃদ্ধি করা; স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দেশব্যাপী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া; ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য  ট্রাফিক ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তোলা; সড়কের মিডিয়ানে উল্টো পথের আলো এবং পথচারীর পারাপার রোধে মহাসড়কের রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু করা এবং গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণসহ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিকদের সাথে ভুক্তভোগীদের পক্ষে যাত্রী সাধারণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন সড়ক দ র ঘটন ট র ফ ক আইন গণপর বহন দ র ঘটন য় ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

হালখাতার মতো রাষ্ট্রেরও নবায়ন চান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম

রাষ্ট্র যদি গুণগত মৌলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে না যায়, যদি একই রাষ্ট্রকাঠামো থেকে যায়, তাহলে জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘নববর্ষের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে নবায়ন করা, হালখাতার মাধ্যমে ধার-দেনা সবকিছু শোধ করা হয়। আমরা চাই যে এই রাষ্ট্রেরও নবায়ন হোক। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেই নবায়নের সূচনা হয়েছে।’

আজ সোমবার পয়লা বৈশাখের সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের নেভি গলিতে বৈশাখ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এনসিপি। এই আয়োজনে ছিল বাউলগান। এ ছাড়া নববর্ষকে স্বাগত জানাতে চৈত্রসংক্রান্তির রাতে (রোববার) বাংলামোটর এলাকার সড়কে আলপনা এঁকেছে দলটি।

বৈশাখ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা সামনে নিয়ে এগোচ্ছে এনসিপি। জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো এখন আর সমভাবে ধারণ করছে না।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তি বা দলের পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং রাষ্ট্রের আমূল কাঠামোর পরিবর্তন ও ইনসাফভিত্তিক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিল বলে উল্লেখ করেন এনসিপির আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ চেয়েছি সরকারের কাছে। বিচার ও সংস্কারের মধ্য দিয়েই আমরা গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচনের দিকে এগোতে চাই। আমরা মনে করি, এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতিগত নবায়ন সম্ভব, সেই নবায়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা সম্ভব।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈশাখ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে বাউল গান পরিবেশনা। আজ সোমবার পয়লা বৈশাখের সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের নেভি গলিতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হালখাতার মতো রাষ্ট্রেরও নবায়ন চান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম