‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘ডেভিল শব্দের অর্থ শয়তান। যারা শয়তান, তারাই ধরা পড়বে। এখানে ছোট কি বড় শয়তান সেটা বিষয় না।’’

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ডেভিল হান্ট অপারেশন ততদিন পর্যন্ত চলবে, যতদিন ডেভিল এখান থেকে মুক্ত না হয়।’’

‘বড় শয়তান ধরা পড়ছে না’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘ডেভিল হান্ট ডিক্লেয়ার করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও আমরা ছাড় দিইনি। প্রথমদিনই পাঁচজনকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। সুতরাং, ছোট-বড় ব্যাপার না। যে আসবে এই জালে, সে ধরা পড়বে।’’

অভিযানে নির্দোষ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ের যারা ভুক্তভোগী, তারা অবশ্যই আইনগত সহায়তা পাবেন। শুধু আমাদের এইখান থেকে না। লিগ্যাল এইড ডিপার্টমেন্ট আছে, ওই দিক থেকেও সহায়তা পাবেন।’’

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা চাকরি ফিরে পাবেন কি না, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘কেউ যদি দোষী হয়ে চাকরি হারায় তারে কি ফেরানো উচিত? আপনারা যদি না বলেন, তাহলে আমিও না বলব। যদি নির্দোষ হয়ে থাকে, সেটা তো আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।’’

ঢাকা/কেয়া/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রামে মোগল স্থাপত্যরীতির এক মসজিদ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাঁথী তিন গম্বুজ মসজিদ। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদের তীরে অবস্থিত মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। মসজিদের পাশেই আছে কারুকার্যখচিত একটি মঠ। প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন এই স্থাপনা দুটি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে স্থাপনা দুটি।

পুরোনো এই মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। মসজিদটি ঠিক কত সালে বা কে নির্মাণ করেছিলেন, এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নওগাঁ জেলা তথ্য বাতায়ন ও আত্রাই উপজেলা তথ্য বাতায়নেও এই মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই।

বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদ সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল আমলে নির্মিত। সুবেদার ইসলাম খানের আমলে (১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সাল) মসজিদটি স্থাপন করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। মসজিদের পাশে অবস্থিত মঠটিও একই সময়ে নির্মাণ করা হয়। লোকশ্রুতি আছে, এই মসজিদ ও মঠটি এক রাতেই জিনেরা নির্মাণ করেন। এ জন্য মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে জিনের মসজিদ নামে পরিচিত।

মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট। এর স্থাপত্যশৈলী মধ্যযুগীয় অন্য সব স্থাপনার মতোই। মসজিদের মূল ভবনটি উত্তর-দক্ষিণ লম্বায় ১৭ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৪ হাত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল প্রায় এক ফুট পুরু। মসজিদের সম্মুখভাগে আছে একটি দরজা। ছাদের ওপর একই সারিতে আছে তিনটি গম্বুজ। তিনটি গম্বুজের আকৃতি একই সমান। দুই কাতারে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। পরে ১৯৮০ সালের দিকে মসজিদের পূর্ব দিকে নতুন আরেকটি মসজিদ ভবন তৈরি করেন স্থানীয়রা। নতুন এই মসজিদে শতাধিক মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।

ইসলামগাঁথী গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমার তো দূরের কথা, আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এই মসজিদ ও মঠ কবেকার।’

১০ বছরের বেশি সময় মসজিদটিতে ইমামতি করেন আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। এখানে নামাজ আদায় করেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দা ও আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘শুনতেছি মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য নাকি মসজিদ ও মঠ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মসজিদ ও মঠ ভেঙে না ফেলে বরং এই স্থাপনা দুটি সংরক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা নেওয়া উচিত। যেহেতু ইসলামে মসজিদ স্থানান্তরের বিধান আছে, তাই প্রয়োজনে অন্যত্র নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ