পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ আন্দোলনরত শিক্ষকরা
Published: 10th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক পদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিল হয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন চলছে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের।
এ ধারাবাহিকতায় আজ সোমবারও রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছিলেন তারা। এ সময় নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদ ও দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা যায় তাদের। কিন্তু আধা ঘণ্টারও কম সময়ে সেখান থেকে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।
এদিন দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। এতে করে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ওই সড়কে। পরে পৌনে ২টার দিকে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় আন্দোলনকারীদের সরাতে লাঠিচার্জ করেন পুলিশ সদস্যরা। সেইসঙ্গে জলকামানও ব্যবহার করেন তারা। পাওয়া যায় সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজও।
আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর পৌনে ২টার দিকে সীমিত পরিসরে যানচলাচল শুরু হয়।
এদিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা বলছেন, আমাদের নিয়োগ বাতিল করে যে রায় দেওয়া হয়েছে, সেটি বৈষম্যমূলক। এ সরকারই আমাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে। আবার আমাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এটি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা চাই, দ্রুত যেন এ রায় বাতিল করে আমাদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
তারও আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: আম দ র ন য় গ ব ত ল কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ছাত্রাবাসের সিট বাতিলের প্রতিবাদে হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজন করা ইফতার বর্জন করে বুধবার ইফতারের পর হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষার্থীদের হল প্রভোস্ট পরিবর্তনসহ চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আজ বুধবার বিদ্রোহী হল আয়োজিত ইফতারের টোকেন দেওয়া শুরু হয় মঙ্গলবার সকাল থেকে। এ সময় হলের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনেককে ইফতারের টোকেন না দিলে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার রাতেই হল প্রশাসনের ইফতার বর্জনের ডাক দেন ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা। এরপরই সিনিয়রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বর্জনের ঘোষণা দিতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। হল প্রশাসনের ইফতার বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে গণ-ইফতার করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং অযৌক্তিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচ (২০১৮-১৯) সেশনের শিক্ষার্থীদের হলের সিট বাতিলের প্রতিবাদে হল প্রশাসন আয়োজিত ইফতার বর্জন করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। ইফতার বর্জন করায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য আজ বেলা সাড়ে ১১টা ও সাড়ে ৩টায় দুই দফা বসার চেষ্টা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসেনি। পরে আজ ইফতার শেষে প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো শিক্ষার্থীদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ ও অপমানজনক শব্দচয়নের মাধ্যমে হল প্রভোস্ট দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই প্রভোস্টের স্থলে কোনো উপযুক্ত ও যোগ্য ব্যক্তিকে এই দায়িত্ব অর্পণ করবেন এবং এরূপ আচরণের জন্য প্রভোস্টকে দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিতে হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনবিষয়ক প্রস্তুতির জন্য রেজাল্ট পরবর্তী তিন মাস সময় হলে থাকতে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় যেকোনো আয়োজন যেমন: বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, ইফতার আবাসিক এবং অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীকে মানসম্মত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। শুধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন বৈষম্যমূলক আচরণ। সব হলের ভাড়া সর্বোচ্চ ৫০ টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে হবে এবং হলের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা যেমন: বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই, ভাত-ডাল, উন্নত মানের খাবার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে বিদ্রোহী হলের প্রভোস্ট সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যায়ের বন্ধন গেস্টহাউসের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গিয়ে তাঁদের দাবি শোনেন উপাচার্য, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার। এ সময় উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা না চাইলে প্রভোস্ট থাকবে না। প্রভোস্টের নিয়ে দাবি বাস্তবায়িত হবে। মাস্টার্সের ফলাফল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে থাকতে পারবে।’
কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, পরীক্ষার ফলাফল হওয়ার পর তিন মাস পর্যন্ত ছাত্রাবাসে থাকার। তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ওই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের চারটি দাবিই মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য। আগামী রোববার এ বিষয়ে লিখিতভাবে সিদ্ধান্ত জানাতে সময় নেন উপাচার্য। পরে শিক্ষার্থীর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামী রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলে শিক্ষার্থীদের হলে সিটবিষয়ক একটি সিদ্ধান্ত হয়। জানানো হয়, যেসব শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছেন এবং যেসব বিভাগে স্নাতকোত্তর চালু নেই, সেসব বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্নের এক মাসের মধ্যে আবাসিক হলের সিট বাতিল করে দেওয়া হবে। প্রভোস্ট কাউন্সিলের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।