বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৭৩৮ মার্কিন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এই তথ্য দিয়েছে। এই হিসাবে সাময়িক হিসাব থেকে মাথাপিছু আয় ৪৬ ডলার কমে গেছে। সাময়িক হিসাবে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।

আজ সোমবার বিবিএস ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মাথাপিছু আয়, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চূড়ান্ত হিসাব দিয়েছে। সেখানে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এই হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারও কমেছে। সাময়িক হিসাবের চেয়ে কমেছে ১ দশমিক ৬০ শতাংশীয় পয়েন্ট।

মাথাপিছু আয় ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরের আয়ের পাশাপাশি প্রবাসী আয়সহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মাথাপিছু ভাগ করে এই হিসাব করা হয়।

বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, তিন বছর ধরে দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরের মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা আরও কমল।

মূলত ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বিবিএসের হিসাবে মাথাপিছু আয় কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মার্কিন ডলারের গড় বিনিময় হার ১১১ টাকা ৬ পয়সা হিসেবে ধরা হয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ডলারের বিনিময় হার বাড়ছে।

তবে টাকার হিসাবে মাথাপিছু আয় বেড়েছে, সেই হিসাবে মাথাপিছু আয় তিন লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ৩ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নিচে

বিবিএসের চূড়ান্ত হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। কয়েক মাস আগে দেওয়া সাময়িক হিসাবে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। ফলে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ব এস দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইন্টারনেটের ব্যবহার কম উৎপাদনশীল খাতে

জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ কম্পিউটার ব্যবহার করে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ৯০ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও নিজস্ব ফোন রয়েছে ৬৫ দশমিক ১ শতাংশের। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ ২০২৪-২৫ এর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জরিপের তথ্য বলছে– দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বড় অংশ মোবাইল গ্রাহক। কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করে নগণ্য সংখ্যক। মূলত উৎপাদনশীল খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার কম।

গত ৭ এপ্রিল এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, দেশের ২ হাজার ৫৬৮ এলাকার ৬১ হাজার ৬৩২টি পরিবারের ওপর জরিপ চালানো হয়। বিবিএস জানায়, তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের কাছ থেকে, শহর ও গ্রামের পারিবারিক পরিবেশ বিবেচনায় রেখে। এ তথ্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় সরবরাহ করা হবে।

জনসংখ্যার অর্ধেকের কম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী
বিবিএসের তথ্য বলছে, দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ। গ্রামে ইন্টারনেটের ব্যবহার শহরের প্রায় অর্ধেক, ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ। বিপরীতে শহরে ৬৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। জরিপ অনুসারে, ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে। শহরের তুলনায় গ্রামের পরিবারগুলো অনেক পিছিয়ে। শহরের ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে; গ্রামে এ হার ৪৮ দশমিক ২। ২০২৩ সালে দেশে পরিবারপ্রতি ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ছিল ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৭ লাখ। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১১ কোটি ৬০ লাখ। বিবিএসের জরিপ হিসাবে নিলে এ সংখ্যা হয় প্রায় ৮ কোটি। এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়ে বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর প্রায় ৮৮ দশমিক ৭৫ শতাংশই মোবাইল গ্রাহক। অধিকাংশ গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করেন। তাই মোবাইল গ্রাহক ধরে ইন্টারনেট ব্যবকারীর সংখ্যা বেশি হয়েছে।

উৎপাদনশীল খাতে ইন্টারনেট ব্যবহার কম
বিবিএস জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে ইন্টারনেটের অর্থবহ ব্যবহার কম। অধিকাংশ মানুষ শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জন্যই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। জানতে চাইলে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির সমকালকে বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেট অবকাঠামো যেভাবে ছড়িয়েছে, উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার সেভাবে হয়নি। অধিকাংশ মানুষ বিনোদনের জন্য মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তিনি বলেন, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের ইন্টারনেট ট্রাফিকের ৭০ শতাংশ ব্যবহৃত হয় ইউটিউব, ফেসবুক রিলস ও টিকটকে।

পল্লিতে কম্পিউটার ব্যবহার অতি নগণ্য
বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ কম্পিউটার ব্যবহার করে। এ ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। শহরের ২০ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে; গ্রামে এ সংখ্যা মাত্র ৩ দশমিক ৮। কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডেস্কটপ ব্যবহার করে ২ দশমিক ৯ শতাংশ, ল্যাপটপ ৩ দশমিক ১ ও ট্যাব ব্যবহার করে ৩ দশমিক ১ শতাংশ।

বেড়েছে টিভি-রেডিও ও স্মার্টফোনের ব্যবহার
বিবিএসের তথ্য বলছে, পরিবার পর্যায়ে টেলিভিশনের ব্যবহার  বেড়েছে। এখন ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন রয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৬২ দশমিক ২। জরিপে দেখা গেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার প্রায় সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। ৯৮ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারের কাছে এখন মোবাইল ফোন রয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৯৭ দশমিক ৯। স্মার্টফোন ব্যবহারে বড় পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন রয়েছে, ২০২৩ সালে যা ছিল ৬৩ দশমিক ৩। শহর-গ্রাম উভয় এলাকাতেই ব্যবহার বেড়েছে। তবে শহর এগিয়ে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকের জরিপ বলছে, গ্রামের ৬৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং শহরের ৭৯ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন রয়েছে। গত অক্টোবরে প্রকাশিত গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশে শহরের ৪১ ও গ্রামের ২৬ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে।

বিবিএস জরিপের তথ্যমতে, দেশে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে ল্যান্ডফোন রয়েছে, যা ২০২৩ সালের জরিপে ছিল শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।

জরিপে পরিবারগুলোতে এখনও বেতারের ব্যবহার রয়েছে এবং এটি বাড়ছে। বর্তমানে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারে রেডিও রয়েছে, ২০২৩ সালে যা ছিল ১৪ দশমিক ৯।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিল গেটসের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ‘প্রয়োজনীয়’ ছিল: সাক্ষাৎকারে মেলিন্ডা
  • ‘হিট-কন্যা’ সোফিয়া
  • বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
  • ইকুয়েডরে আবার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন রক্ষণশীল দলের নোবোয়া
  • চাকরি ছেড়ে আখের ব্যবসায় প্রকৌশলী সাহাবুদ্দিন
  • গাজা-পশ্চিম তীরে কেমন ছিলেন, জানালেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ২ ফিলিস্তিনি তরুণ
  • গ্রামে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু, বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর হটস্পট বরগুনা
  • চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে আগুন দেওয়া যুবক সম্পর্কে যা জানা গেল
  • গাজায় এ পর্যন্ত ৩৫টি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
  • ইন্টারনেটের ব্যবহার কম উৎপাদনশীল খাতে