ডিবি পরিচয়ে যুবলীগ নেতার ‘দুর্ধর্ষ’ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ১২
Published: 10th, February 2025 GMT
রাজধানীর ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ডিবি পরিচয়ে ‘দুর্ধর্ষ’ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যুবলীগ নেতাসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামি বেলাল চাকলাদার মতিঝিল থানা ৯ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা। তার নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানা ও উত্তরা পশ্চিম থানায় দুটি হত্যা মামলা রয়েছে।
গত কয়েকদিনের ধারাবাহিক অপারেশনে তাদের ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো.
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার মিডিয়া জাহাঙ্গীর কবির।
তিনি বলেন, গত ৩ জানুয়ারি ধানমন্ডি এবং ২২ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর ডিবি পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতে করে চক্রটি। গ্রেপ্তার আসামিরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছে। তাদের বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়। ডাকাতির পূর্বে নিদিষ্ট জায়গায় একত্রিত হয়। তারা ডাকাতির সময় সাধারণত বাটন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ডাকাতি শেষে মোবাইল ফোন সিমসহ ফেলে দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যায়।
মাসুদ আলম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। ডাকাত জাকির প্রকাশ তৌহিদের বিরুদ্ধে ১০টি, জাহিদের বিরুদ্ধে আটটি, হিরা শেখ ও রফিকের বিরুদ্ধে ছয়টি করে, মঞ্জুরের বিরুদ্ধে পাঁচটি, চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি ও বেল্লাল চাকলাদারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বল গ ন ত আটক ধ নমন ড
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রামে মোগল স্থাপত্যরীতির এক মসজিদ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাঁথী তিন গম্বুজ মসজিদ। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদের তীরে অবস্থিত মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। মসজিদের পাশেই আছে কারুকার্যখচিত একটি মঠ। প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন এই স্থাপনা দুটি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে স্থাপনা দুটি।
পুরোনো এই মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। মসজিদটি ঠিক কত সালে বা কে নির্মাণ করেছিলেন, এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নওগাঁ জেলা তথ্য বাতায়ন ও আত্রাই উপজেলা তথ্য বাতায়নেও এই মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই।
বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদ সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল আমলে নির্মিত। সুবেদার ইসলাম খানের আমলে (১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সাল) মসজিদটি স্থাপন করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। মসজিদের পাশে অবস্থিত মঠটিও একই সময়ে নির্মাণ করা হয়। লোকশ্রুতি আছে, এই মসজিদ ও মঠটি এক রাতেই জিনেরা নির্মাণ করেন। এ জন্য মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে জিনের মসজিদ নামে পরিচিত।
মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট। এর স্থাপত্যশৈলী মধ্যযুগীয় অন্য সব স্থাপনার মতোই। মসজিদের মূল ভবনটি উত্তর-দক্ষিণ লম্বায় ১৭ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৪ হাত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল প্রায় এক ফুট পুরু। মসজিদের সম্মুখভাগে আছে একটি দরজা। ছাদের ওপর একই সারিতে আছে তিনটি গম্বুজ। তিনটি গম্বুজের আকৃতি একই সমান। দুই কাতারে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। পরে ১৯৮০ সালের দিকে মসজিদের পূর্ব দিকে নতুন আরেকটি মসজিদ ভবন তৈরি করেন স্থানীয়রা। নতুন এই মসজিদে শতাধিক মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।
ইসলামগাঁথী গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমার তো দূরের কথা, আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এই মসজিদ ও মঠ কবেকার।’
১০ বছরের বেশি সময় মসজিদটিতে ইমামতি করেন আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। এখানে নামাজ আদায় করেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ও আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘শুনতেছি মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য নাকি মসজিদ ও মঠ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মসজিদ ও মঠ ভেঙে না ফেলে বরং এই স্থাপনা দুটি সংরক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা নেওয়া উচিত। যেহেতু ইসলামে মসজিদ স্থানান্তরের বিধান আছে, তাই প্রয়োজনে অন্যত্র নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে।’