সাবেক রাষ্ট্রদূত ও তৃণমূল বিএনপির সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী আদালতকে বলেছেন, আমি খেতাবপ্রাপ্ত আহত মুক্তিযোদ্ধা। খুবই দুঃখজনক, মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানিত করা হচ্ছে। রিমান্ড দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি. এম. ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মো. পারভেজ মিয়া হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক মো.

নাজমুল হাসান মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শমসের মবিন চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও সাবেক রাষ্ট্র দূত ও তৃণমূল বিএনপির সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরীর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক ও শমসের মবিন চৌধুরীর পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। রিমান্ড বাতিল চেয়ে পলকের পক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী বলেন, “পলককে ৬০ দিন রিমান্ড হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ দিন রিমান্ড পেন্ডিং আছে। রিমান্ডে আর নতুন কিছু পাওয়ার নেই। এর আগে যাত্রাবাড়ী থানার অন্য মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।”

শমসের মবিন চৌধুরীর পক্ষে তার আইনজীবী বলেন, “তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। বয়স্ক মানুষ। রিমান্ড বাতিলের আবেদন করছি।” 

পরে রাষ্ট্র পক্ষের ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে আয়নাঘর না, বিনা ভোটের নির্বাচন না, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হরণ না। আপনারাই মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করেছেন। আজ ওনাদের কারণে স্বাধীনতাবিরোধীরা বড় গলায় কথা বলার সুযোগ পায়। দেশটাকে আপনারা কোথায় নিয়েছেন, একটু ভেবে দেখেন। এ ধরনের মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির জন্য বোঝা। তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে।'

পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমি খেতাবপ্রাপ্ত আহত মুক্তিযোদ্ধা। জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। আমি কোনো অন্যায় করিনি। খুবই দুঃখজনক, আজ মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানিত করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলা হয়েছে।”

এসময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিক্ষিপ্তভাবে দালাল, সুবিধাবাদী বলে তাকে সম্বোধন করেন। 

তিনি আরো বলেন, '১৫ বছর আমি বিএনপি  করেছি। আমি ৫ আগস্টের সময় বাড়িতে ছিলাম। পরে হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবে না। আমার রিমান্ড নামঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুর করা হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি অন্যায় করা হবে।”

পরে ওমর ফারুকী বলেন, “ওনার পা হারানোর পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি পেয়েছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেখ হাসিনা তাকে জাতীয় বেঈমান বলেছেন। এরপর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালে বিএনপির সঙ্গে বেঈমানি করে আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের সুযোগ দেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূঁইফোড় সংগঠন করে শেখ হাসিনার থেকে টাকা নিয়ে নির্বাচন করেন। যদিও তাকে কোনো কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।” 

পরে তিনি বলেন, “নির্বাচন করা অন্যায় নয়। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। আর নির্বাচনে আমাকে কোথাও বাঁধা দেওয়া হয়নি।'” 

পরে আদালত তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব ন ত কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে নানা মহলের মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে মাগুরার স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশিষ্টজনেরাও ব্যক্ত করেছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহেদ হাসান টগর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মেনে নিতে পারছি না। আমরা আইনজীবীর সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ধর্ষকদের পক্ষে কোনো আইনি সহায়তা দেওয়া হবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ জন্য আইনজীবী সমিতি সব ধরনের সহায়তা করবে।

জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লাবনী জামান জানান, সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় মাগুরায় এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে ধর্ষকের অবিলম্বে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত জেলা মহিলা পরিষদ সবসময় শিশুটির পরিবারের পাশে থাকবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. হুসাইন বলেন, এ ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ। শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের ফাঁসি কার্যকর না হলে মাগুরায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

জেলা গণকমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সম্পা বসু বলেন, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ধর্ষকের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব।

মাগুরা শহরের রিকশাচালক আব্দুর রহমান ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।

এদিকে শিশুটির মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে। গ্রামের ওহিদুর রহমান নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমরা বাকরুদ্ধ। শুধু বলতে চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করুন।
 
নিহত মেয়েটির প্রতিবন্ধী বাবা ফেরদৌস শেখ শোকে মুহ্যমান। কান্না করতে করতে বললেন, কন্যার হত্যার বিচার চান তিনি।

মাগুরা সদর থানার ওসি আয়ুব আলী জানান, এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়াধীন। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্তক রয়েছে পুলিশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শিবিরে যাচ্ছেন আজ
  • বাড়ি তো নয়, যেন উদ্যান
  • সাত বছর ধরে হাতে লিখে পত্রিকা বের করছেন একজন দিনমজুর 
  • অস্ত্রধারীরা যাত্রীদের দলে দলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করছিল: প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
  • ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
  • পাসপোর্ট পেতে মাইকেল চাকমার আবেদন সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ
  • মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
  • মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে নানা মহলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
  • মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে নানা মহলের মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
  • ‘কারো করুণা নয়, অধিকার নারীকেই আদায় করে নিতে হবে’