গ্যাসের চুলায় কয়েল ধরাতে গিয়ে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, একই পরিবারের দগ্ধ ৩
Published: 10th, February 2025 GMT
মাদারীপুরে বসতবাড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে শহরের বাগেরপাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ তিনজন হলেন জুয়েল হাওলাদার (৩৫), তাঁর স্ত্রী তানিয়া বেগম (৩০) ও তাঁদের মেয়ে সোহাগী আক্তার (৮)। তাঁরা বাগেরপাড় এলাকার ওই বাড়িতে ভাড়ায় থাকেন।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে মশা নিধনের কয়েল ধরাতে গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বালাতে যান জুয়েলের স্ত্রী তানিয়া। এ সময় আকস্মিকভাবে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়ে রান্নাঘরে আগুন ধরে যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের কক্ষেও। এতে দগ্ধ হন তানিয়ার সঙ্গে থাকা জুয়েল ও তাঁদের মেয়ে সোহাগী। খবর পেয়ে তাঁদের গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দগ্ধ সবাইকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে তানিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
দগ্ধ জুয়েল হাওলাদার বলেন, ‘আমি ও মেয়ে ঘরের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠি। রান্নাঘরে আমার স্ত্রীর গায়ে আগুন দেখে নেভাতে গিয়ে আমিও দগ্ধ হই। ফায়ার সার্ভিস ও প্রতিবেশীরা তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে না এলে আমরা কেউ বাঁচতাম না।’
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা রিয়াদ মাহামুদ বলেন, আহত তিনজনের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জুয়েল ও তানিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তানিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক শেখ আহাদুজ্জামান বলেন, গ্যাসের পাইপ ফেটে (লিক) যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় বিস্ফোরণ বড় আকারে হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জানান মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, যাঁদের বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার আছে, তাঁদের সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধীদের ফাঁসি চাইলেন শিশুটির বোন
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশুটির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তানের মৃত্যুতে শিশুটির মা বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। আহাজারি করে তিনি অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছেন। শিশুটির বোনও অঝোরে কাঁদছেন। তিনিও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান।
শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার প্রতিবন্ধী বাবা নির্বাক হয়ে পড়েছেন। পরিবারে অন্য সদস্যরাও কান্নাকাটি করছেন। এ মৃত্যুতে গ্রামবাসীরাও মর্মাহত।
স্থানীয় সব্দালপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তিনি পরিবারটির পাশে আছেন। তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যা ৭টায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে তাকে মাগুরা আনা হয়। এরপর শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা, পরে শ্রীপুর উপজেলার শব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে দ্বিতীয় জানানা শেষে স্থানীয় সোনাইকুন্ডি কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী জানান, মৃত্যুর ঘটনায় তার ভগ্নিপতি হিটু শেখ, হিটু শেখের দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখের নামে শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিদের মধ্যে হিটু শেখকে সাতদিন ও অন্যদের পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের জ্ঞিাসাবাদ চলছে।