৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল
Published: 10th, February 2025 GMT
হত্যা মামলায় সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমদ, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ও এসআই শাহাদাত হোসেনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার মিছিলে নির্বিচার গুলিবর্ষণে পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যার অভিযোগে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক মো.
এ সময় আসামি তানজিল আহমদ আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের দুই মাস আগে আমার যাত্রাবাড়ীতে পোস্টিং হয়। আমি ট্রাফিক পুলিশের এসি ছিলাম। একজন ট্রাফিক পুলিশের কাজ কী সবার জানা। আমি এ ঘটনার কিছুই জানি না। পরে আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
জানা যায়, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপ-পরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে নারায়নগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এমডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তাইম নিহতের ঘটনায় গত ২০ আগস্ট আদালতে ওই শিক্ষার্থীর মা মোসা. পারভীন আক্তার এ মামলা করেন।
মামলায় ওয়ারী বিভাগের তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, ওয়ারী বিভাগের এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদ, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন ও এসআই শাহাদাৎ আলীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার গত ২০ জুলাই কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এমডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যায়। তখন কিছু কোটা আন্দোলনকারী বিক্ষোভ করছিল। সে সময় ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। প্রাণ ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতাড়ি ছোটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সাটার টেনে দেয়। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখানে অবস্থারকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলির থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম আর নেই
দেশে টিস্যু কালচার ও বায়োটেকনোলজি গবেষণার পথিকৃৎ ও বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্টদের সংগঠন জিএনওবিবির প্রতিষ্ঠাতা মডারেটর অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম আর নেই। আজ সোমবার সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। আহমদ শামসুল ইসলামের মেয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক জেবা ইসলাম সিরাজ জানিয়েছেন, তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম ১৯২৪ সালের ৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৪১ সালে ম্যাট্রিক, রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৪৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট (বিজ্ঞান বিভাগ), প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা থেকে ১৯৪৫ সালে বোটানিতে অনার্স এবং ১৯৪৭ সালে এমএসসি সম্পন্ন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিলের আর্থিক সহায়তায় যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বোটানিতে (সাইটোজেনেটিকস) পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বীজবিহীন স্ট্রবেরি নিয়ে তাঁর অনন্য গবেষণার জন্য একই বছর কারি মেমোরিয়াল পুরস্কার লাভ করেন।
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম চার দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তানের সিন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়, তানজানিয়া, নাইরোবির দার-এ-সালাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান পড়িয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে সর্বপ্রথম ‘প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার ও জেনেটিকস ল্যাবরেটরি’ স্থাপন করেন, যা দেশে এ ক্ষেত্রে গবেষণার সূত্রপাত করে। লিখেছেন বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক।
শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে কৃষিতে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক, ১৯৮৬ সালে শিক্ষায় একুশে পদক পেয়েছেন অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম।
আহমদ শামসুল ইসলামের মেয়ে অধ্যাপক জেবা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বড় ছেলে অধ্যাপক ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ছোট ছেলে খালিদ ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
আজ বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।