কানের দুল কিনতে মায়ের কোটি টাকার গয়না বিক্রি
Published: 10th, February 2025 GMT
কানের দুল আর ঠোঁটের বিশেষ এক ধরনের অলংকার। দাম বেশি নয়; হাজারখানেক টাকা। পছন্দের এসব জিনিস কিনতে মায়ের ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার গয়না বিক্রি করে দিয়েছে এক কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে চীনের সাংহাই শহরে।
ওই কিশোরীর নাম লি। একদিন তার মা ওয়াং দেখতে পান যে তাঁর শখের গয়নাগুলো নেই। পরে জানতে পারেন যে না বুঝে সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছে তাঁর মেয়ে। গয়নাগুলোর মধ্যে রয়েছে মূল্যবান জেড পাথরের তৈরি হাতের ব্রেসলেট, গলার হার ও অন্যান্য রত্ন। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানান তিনি।
পুলিশকে লিয়ের মা ওয়াং বলেন, ‘সে কেন এগুলো বিক্রি করল, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নেই। একদিন সে বলল, তাঁর অর্থ দরকার। আমি বললাম, কত? সে বলল, ৬০ ইউয়ান। জানতে চাইলাম, কেন? জবাবে ও বলল, “আমি একজনকে লিপ স্টাড (ঠোঁটের অলংকার) পরতে দেখেছি। সেগুলো খুব সুন্দর দেখায়। আমিও কিনতে চাই।”’
লি মায়ের অলংকারগুলো বিক্রি করে দেয় স্থানীয় একটি দোকানে। তবে সেগুলোর মূল্য সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। এদিকে ওয়াংয়ের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর কাজ শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কর্মকতা ফ্যান গাওজি বলেন, ওই দোকানের মালিককে থানায় আসতে বলা হয়। পরে তিনি পুলিশের সঙ্গে দেখা করে অলংকারগুলো ফিরিয়ে দেন।
বিচিত্র এই ঘটনা ইন্টারনেট জগতে বেশ সাড়া ফেলেছে। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকে। যেমন একজন ওই কিশোরীর পক্ষ নিয়ে বলেছেন, ‘যদি ওই পরিবারের কাছে কোটি টাকার অলংকার থাকে, তাহলে কেন মেয়েটিকে কিছু হাতখরচ দেয় না?’ আরেকজন বলেছেন, ‘মা–বাবার সঙ্গে কিশোর–কিশোরীদের কথা বলতে হবে, যোগাযোগ রাখতে হবে। পরিবারের কোনো কিছু চুরি করাও কিন্তু চুরি। এখানে কিশোর বয়সের আচার–আচারণকে দোষ দিলে হবে না। মা–বাবা তাকে লালন–পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন’।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের ভিন্ন ভাষ্য
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার একটি মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থীর (১৩) মৃত্যু হয়েছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাড়ি যেতে না পারায় মেয়েটি লাফ দেয়। তবে স্বজনেরা দাবি করেছেন, এখানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকতে পারে।
গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই জানাজানি হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাদ্রাসার পাঁচতলার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় সে।
মাদ্রাসার মুহতামিমের ভাষ্য, ঈদের ছুটির পর সপ্তাহখানেক আগে ওই শিক্ষার্থীর নিয়মিত ক্লাস শুরু হয়। তবে মাদ্রাসার আবাসিকে থাকতে সে অনাগ্রহী ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সে তার মাকে ফোন করে বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। পরে রাতে মাদ্রাসার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তাঁরা কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়েটিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ওই শিক্ষার্থীর মামা বলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করতে, তবে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তাঁরা থানায় অভিযোগ করবেন। পুরো ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবি জানান।
মেয়েটির এক স্বজন দাবি করেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। জানালার একটি বড় ফাঁক দিয়ে মেয়েটি নিচে পড়ে যায়। যদি গ্রিল সঠিকভাবে থাকত, এমনটা না–ও হতে পারত।
মাদ্রাসার মুহতামিম বলেন, ‘দিবাগত রাত তিনটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাস্তায় মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে আমাকে ফোন করেন। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। জানালার ওই অংশে ফাঁক ছিল, তবে সেটি আগে তেমনভাবে আমাদের নজরে আসেনি।’
এ বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানালার একটি অংশে রডের ফাঁক আছে, সেটি বেশ বড়। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান দিয়েই মেয়েটি পড়েছে। তবে তদন্ত চলছে। মেয়েটির লাশের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে। যৌন নিপীড়নের কোনো অভিযোগ থাকলে, সেটিও পরীক্ষা করা হবে। এখন পর্যন্ত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা পরিবারের কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।