কানের দুল আর ঠোঁটের বিশেষ এক ধরনের অলংকার। দাম বেশি নয়; হাজারখানেক টাকা। পছন্দের এসব জিনিস কিনতে মায়ের ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার গয়না বিক্রি করে দিয়েছে এক কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে চীনের সাংহাই শহরে।

ওই কিশোরীর নাম লি। একদিন তার মা ওয়াং দেখতে পান যে তাঁর শখের গয়নাগুলো নেই। পরে জানতে পারেন যে না বুঝে সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছে তাঁর মেয়ে। গয়নাগুলোর মধ্যে রয়েছে মূল্যবান জেড পাথরের তৈরি হাতের ব্রেসলেট, গলার হার ও অন্যান্য রত্ন। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানান তিনি।

পুলিশকে লিয়ের মা ওয়াং বলেন, ‘সে কেন এগুলো বিক্রি করল, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নেই। একদিন সে বলল, তাঁর অর্থ দরকার। আমি বললাম, কত? সে বলল, ৬০ ইউয়ান। জানতে চাইলাম, কেন? জবাবে ও বলল, “আমি একজনকে লিপ স্টাড (ঠোঁটের অলংকার) পরতে দেখেছি। সেগুলো খুব সুন্দর দেখায়। আমিও কিনতে চাই।”’

লি মায়ের অলংকারগুলো বিক্রি করে দেয় স্থানীয় একটি দোকানে। তবে সেগুলোর মূল্য সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। এদিকে ওয়াংয়ের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর কাজ শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কর্মকতা ফ্যান গাওজি বলেন, ওই দোকানের মালিককে থানায় আসতে বলা হয়। পরে তিনি পুলিশের সঙ্গে দেখা করে অলংকারগুলো ফিরিয়ে দেন।

বিচিত্র এই ঘটনা ইন্টারনেট জগতে বেশ সাড়া ফেলেছে। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকে। যেমন একজন ওই কিশোরীর পক্ষ নিয়ে বলেছেন, ‘যদি ওই পরিবারের কাছে কোটি টাকার অলংকার থাকে, তাহলে কেন মেয়েটিকে কিছু হাতখরচ দেয় না?’ আরেকজন বলেছেন, ‘মা–বাবার সঙ্গে কিশোর–কিশোরীদের কথা বলতে হবে, যোগাযোগ রাখতে হবে। পরিবারের কোনো কিছু চুরি করাও কিন্তু চুরি। এখানে কিশোর বয়সের আচার–আচারণকে দোষ দিলে হবে না। মা–বাবা তাকে লালন–পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন’।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতি, অস্ত্রের মুখে শ্রমিকদের জিম্মি করে লুট

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২০-২২ দুর্বৃত্ত আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১৮ শ্রমিককে মারধর পরে জিম্মি করে ব্যাটারি তৈরির সিসা, প্লেট, কানেক্টরসহ অন্তত ৫৫ লাখ টাকার সামগ্রী লুট করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এসব সামগ্রী ট্রাকে করে নিয়ে গেছে তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তাড়াশ-বারুহাঁস সড়কের পশ্চিম দিকে হেদার খালে ভাই ভাই ব্যাটারি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের মারধরে কারখানার শ্রমিক আব্দুল হান্নান, মোস্তাক হোসেন, শামীম হোসেনসহ অনন্ত আটজন আহত হয়েছেন। তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় কারখানার মালিক মো. শয়নুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শয়নুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি বড় ট্রাকে ২০ থেকে ২২ জন কারখানায় আসে। তারা টিনের বেড়া ভেঙে কারখানায় ঢুকে আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে শ্রমিক আব্দুল হান্নান, মোস্তাক, শামীমসহ ছয়জনকে জিম্মি করে। তারা বাধা দিলে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। বিশ্রামাগারে ঘুমিয়ে থাকা আরও ১০-১২ শ্রমিককে জিম্মি করে লুটপাট শুরু করে।

প্রায় চার ঘণ্টায় তারা কারখানা থেকে তিন টন ব্যাটারি তৈরির সিসা, ৩৪০ টাকা কেজি মূল্যের ১ হাজার ২০০ কেজি কানেক্টর, ২৫০ টাকা কেজির ১৬ টন প্লেট, ৬৩ হাজার টাকার ৯টি পুরোনো ব্যাটারিসহ প্রায় ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের মালপত্র লুট করে ট্রাকে করে চলে যায়। তারা চলে গেলে শ্রমিকরা একে অপরের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে পুলিশে খবর দেন।

তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বলেন, খবর পেয়ে দুই দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাই ভাই ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতির সত্যতা পাওয়া গেছে। ডাকাতি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ