কোথাও যদি বায়ুমান ৩০০–এর বেশি হয়, তবে সেখানে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি আছে বলে ধরা হয়। যদি পরপর তিন দিন তিন ঘণ্টা করে এমন অবস্থা থাকে, তবে ওই এলাকায় স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করা হয় সাধারণত। আজ রাজধানীর বায়ুর মান জানেন? আজ সোমবার সকাল ১০টার আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুর মান ৫৪২। এমন অবস্থাকে ‘অস্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক’ বলছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। তাঁদের বক্তব্য, দূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কার্যত ব্যর্থ। এখন তাদের উচিত রাজধানীতে স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করা। এতে নাগরিকদের কিছুটা হলেও সুরক্ষা হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

আজ সকালে বিশ্বের ১২৪ নগরীর মধ্যে ঢাকার অবস্থান শীর্ষে। বায়ুদূষণে ঢাকার এ অবস্থান তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার।

প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করে। ক্যাপসের চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, এ সময়ে এত বায়ুদূষণ সত্যি অস্বাভাবিক। এখানে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই দূষণ পরিস্থিতি বাড়তে থাকে। রাতে ৫০০ পার হয়ে যায়। এরপর ধারাবাহিকভাবে দূষণের মান ৫০০–এর ওপরে থাকে। পরিস্থিতি আজ সত্যিই খুব নাজুক।

এর আগে গত ২২ জানুয়ারি সকালে ঢাকার বায়ুমান ছিল ৫১৮। তখন বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, সেদিনের দূষণ অস্বাভাবিক। ওই দূষণ এই নতুন বছরে সর্বোচ্চ।

আজ সেই ‘অস্বাভাবিক’ মানের চেয়ে দূষণের মান বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম বলছিলেন, আজকের দূষণ অস্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক। দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগগুলো আসলে কোনো কাজ দিচ্ছে না, তা স্পষ্ট। এখন অবশ্যই ঢাকায় স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করা দরকার। তাহলে মানুষ অন্তত সচেতন হবে।

রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকাগুলোর মধ্যে যেসব এলাকায় বায়ুর মান মারাত্মক দূষিত, সেগুলোর মধ্যে আছে মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং (১১২৭), তেজগাঁওয়ের শান্তা ফোরাম (৭৬৯) ও সাভারের হেমায়েতপুর (৬৩৩)।

আজ আইকিউএয়ারের দেওয়া সতর্কবার্তায় ঢাকাবাসীর উদ্দেশে পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।

ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২ দশমিক ৫-এর উপস্থিতি। ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে প্রায় ৬৯ গুণ বেশি।

রাজধানীতে অনেক আগেই স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি দরকার ছিল বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য–বিশেষজ্ঞ ডা.

মুশতাক হোসেন। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, সরকার হয়তো মনে করে এতে জনভীতি তৈরি হবে। সে জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে না। কিন্তু বিষয়টি তো জনস্বাস্থ্যের স্বার্থেই করা উচিত।

গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে একটি দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। আবার গত জানুয়ারিতে দূষণের মান ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ঢাকায় গত জানুয়ারিতে একাধিক দিন বায়ুর মান ৩০০-এর বেশি হয়েছে। আজ অন্য বিভাগীয় শহরগুলোর বায়ুর মানও নাজুক। এর মধ্যে বায়ুর মান চট্টগ্রামে ১৫৩, রাজশাহীতে ১৯৬ ও খুলনায় ১৮৭।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে কাজে লাগাতে চায় এবি পার্টি

এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেছেন, তাঁরা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে কাজে লাগাতে চান। আগামী দিনের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবি পার্টির নেতৃত্বেই হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এবি পার্টির গণ–ইফতার কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দিদারুল আলম। পহেলা রমজান থেকে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণ–ইফতারের আয়োজন করছে দলটি।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। রাজনীতি গণমুখী করতে হবে, নেতামুখী রাজনীতি বিলোপের এটাই উপযুক্ত সময়। আমূল সংস্কার ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের একমাত্র শত্রু ভারত ও আওয়ামী লীগ। শত্রুদের কোনোভাবে গর্ত হতে বের হতে দেওয়া যাবে না। মাথা বের করলেই তা আবার গর্তে ঢুকিয়ে দিতে হবে।’

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় গণ–ইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কর্নেল (অব.) ফেরদৌস আহমেদ, ক্যাপ্টেন (অব.) বিল্লাল আহমেদ, মেজর (অব.) আনিসুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ