কোনো উপসর্গ না থাকলেও ৪০ বছর বয়স পেরোনোর পর প্রত্যেক ব্যক্তিরই প্রতিবছর একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। আবার চল্লিশের আগে যে ডায়াবেটিস হবে না, এমনটাও কিন্তু নয়। তাই ৪০ বছরকে মোটামুটিভাবে একটা সীমা ধরে নিলেও সাধারণ কোনো উপসর্গ, যা বারবার দেখা দেয়, সেসবের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত সব বয়সীদেরই। এমনটাই বলছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা.

তাসনোভা মাহিন

কিছু উপসর্গ

বারবার ক্ষুধা পাওয়া, বারবার প্রস্রাব লাগা, গলা শুকিয়ে যাওয়া, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ যে ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে, তা অনেকে জানেন। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রায়ই চুলকানি হতে পারে। ত্বকের যেকোনো জায়গাই চুলকাতে পারে। এমনকি মূত্রনালির আশপাশেও হতে পারে এই অস্বস্তিকর অনুভূতি।

আরও পড়ুনডায়াবেটিস হঠাৎ বেড়ে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, কীভাবে জানেন০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ডায়াবেটিসে কেন চুলকানি হয়

ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই বারবার জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে তাঁদের। ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার কারণে চুলকানি হতে পারে। আবার ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকে সংক্রমণ ছাড়াও অন্যান্য রোগ হতে পারে। এসব রোগেও চুলকানি হয়।

ডায়াবেটিসে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেসব স্নায়ুর মাধ্যমে আমরা ত্বক থেকে আসা অনুভূতি উপলব্ধি করি, সেসবের ক্ষতি হলে কিন্তু চুলকানির কোনো দৃশ্যমান কারণ না থাকা সত্ত্বেও রোগীর চুলকানির মতো অনুভূতি হতে পারে।

তা ছাড়া বারবার প্রস্রাব হওয়ার কারণে রোগী পানিশূন্য হয়ে পড়তে পারে। এ রকম অবস্থায় ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। শুষ্ক ত্বকও প্রায়ই চুলকাতে পারে। নারীদের ডায়াবেটিস হলে যোনিতে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। সংক্রমণ হলে দেহের এই অংশে চুলকানি হয়।

আরও পড়ুনপ্রাক্‌-ডায়াবেটিস কী, কাদের  ঝুঁকি বেশি১৭ নভেম্বর ২০২৩কী করবেন

প্রায়ই চুলকানির সমস্যায় ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চুলকানির কারণ নির্ণয় করবেন। মনে রাখা প্রয়োজন, ডায়াবেটিস হয়েছে কি না, তা কিন্তু কেবল আঙুলের রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করলেই নিশ্চিত হওয়া যায় না। শিরা থেকে রক্ত নিয়ে একাধিক পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। আর ডায়াবেটিস ছাড়াও বিভিন্ন রোগে শরীর চুলকায়। যেমন লিভারের কিছু সমস্যা কিংবা চর্মরোগ হলে শরীর চুলকাতে পারে। বুঝতেই পারছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আপনি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন না।

আরও পড়ুনডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষার মূলমন্ত্র ১৫ নভেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক রমণ উপসর গ পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্যাখ্যানের আঘাত কীভাবে সামলে উঠবেন

প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া একজন মানুষের কথা ভাবুন। প্রত্যাখ্যানের আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে তাঁর জীবন। সামাজিকভাবেও যে তিনি কখনো কখনো হাসির পাত্র হয়ে উঠতে পারেন, সেটিও অস্বীকার করার উপায় নেই। সবকিছুর ভেতর দিয়েই অবশ্য জীবন এগিয়ে যেতে থাকে। তবে প্রত্যাখ্যানের সেই আঘাতে কারও কারও মনোজগতে বেশ গভীর ছাপ পড়ে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘রিজেকশন ট্রমা’।
একপাক্ষিক ভালোবাসায় প্রত্যাখ্যানের আঘাতের ঝুঁকি থাকে মারাত্মক। আবার কেউ প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলেও প্রত্যাখ্যানের আঘাতে জর্জরিত হতে পারেন অপরজন। বিবাহবিচ্ছেদেও এমনটা ঘটতে পারে। প্রত্যাখ্যানের আঘাত পাওয়া একজন মানুষের বিশ্বাসের ভিত নড়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। একদিকে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগতে পারেন তিনি, নিজেকে ভাবতে পারেন ‘অযোগ্য’। অন্যদিকে আবার অন্যের প্রতিও বিশ্বাস হারাতে পারেন তিনি। এমনটাই বলছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক।

নিজের ভেতর যা চলে

প্রত্যাখ্যানের কারণে নিজেকে তাঁর মনে হতে পারে অসুন্দর ও অপাঙ্‌ক্তেয়। নিজের ওপর রাগও হতে পারে। বিষণ্নতায় ভুগতে পারেন তিনি। কোনো কিছুই ভালো না লাগা বা কোনো কাজেই আগ্রহ না পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মন খারাপের এক অনুভূতিতে ডুবে থাকতে পারেন। নিজেকে দুর্বল মনে হতে পারে। ঘুম, খাওয়াদাওয়া ও রোজকার অন্যান্য স্বাভাবিক কাজও এলোমেলো হয়ে পড়তে পারে। কাজকর্মে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হতে পারে। আবেগীয় ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে পড়তে পারে। কেউ কেউ নিজের ক্ষতি করতেও উদ্যত হন।

আরও পড়ুনআম্মার ভয়ে প্রেম করিনি, এখন আম্মাই বলে, তুমি খুঁজে আনো৫ ঘণ্টা আগেঅন্যের প্রতি…

প্রত্যাখ্যানের অভিজ্ঞতা হওয়ার পর একজন মানুষের মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। মানুষকে বিশ্বাস করতে না পারাটাই হয়ে দাঁড়াতে পারে বিশাল এক সমস্যা। অনেকে নতুন কোনো সম্পর্কে জড়াতে ভয় পান। এমনকি পেশাদার কাজেও অন্যরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবেন, এমন একটা ধারণা জন্মে যেতে পারে তাঁর মধ্যে।

এমন হলে কী করবেন

এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কারও কারও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। যন্ত্রণাময় দিনে মনে রাখা প্রয়োজন, জীবন যেমন সুন্দর, তেমনি কঠিনও বটে। পাওয়া না–পাওয়ার এক জটিল সমীকরণই তো জীবন। স্মৃতিতে কষ্ট থাকতেই পারে। কিন্তু পৃথিবীর বুকে আপন অস্তিত্বকে অপাঙ্‌ক্তেয় মনে করবেন না। যেকোনো কারণেই আপনার ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন একজন ব্যক্তি। তাতে আপনি ‘অযোগ্য’ প্রমাণিত হলেন, ব্যাপারটা একেবারেই তা নয়। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। নিজের জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোর কথা ভুলে যাবেন না। এগুলোর মাধ্যমেই নিজের নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে নিজেই ‘চ্যালেঞ্জ’ করতে পারেন। যাঁরা আপনাকে ভালোবাসেন, যাঁরা আপনার আপনজন, তাঁদের ভালোবাসাকে অসম্মান করবেন না। তাঁদের ভালো রাখতে হলে কিন্তু নিজের যত্ন নেওয়ার বিকল্প নেই। খুব কাছের কোনো মানুষের সঙ্গে কষ্টের কথা ভাগ করে নিতে পারেন। পেশাগত ও শখের কাজে সময় দিন। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। শিথিলায়নের ব্যায়াম করতে পারেন। পেশাদার সাহায্যের জন্য প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিশুরও হতে পারে লুপাস
  • সব টিউমার থেকেই কি ক্যানসার হয়
  • যে কারণে আবারও গানে ফিরলেন ফেরদৌস ওয়াহিদ
  • প্রত্যাখ্যানের আঘাত কীভাবে সামলে উঠবেন