বিসিএস পরীক্ষা–নিয়োগ দেড় বছরে শেষ করার সুপারিশ
Published: 10th, February 2025 GMT
৪১তম বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর। আর ৪৩তম বিসিএসের ক্ষেত্রে সময় লেগেছে চার বছর দুই মাস। শুধু এ দুটি বিসিএস নয়, বছরের পর বছর ধরেই কমবেশি এমন দীর্ঘসূত্রতা চলে আসছে। এ পরিস্থিতিতে দেড় বছরের মধ্যেই বিসিএস পরীক্ষা শেষ করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, বিসিএস পরীক্ষা শেষ করতে হবে এক বছরের মধ্যে। বাকি প্রায় ছয় মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এ জন্য প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা বছরের কোন সময়ে হবে, তারও একটি বার্ষিক পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার নির্ধারণ করে দিয়েছে কমিশন। বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতেও বড় পরিবর্তন আনার সুপারিশ এসেছে। এ ছাড়া বিদ্যমান সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) পুনর্গঠন করে তিনটি পিএসসি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষায় বেশ জট আছে। এই জটগুলো যখন শেষ হবে, এর পর থেকে ১৪ মাসেই বিসিএস পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব।পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেমএখন একেকটি বিসিএস পরীক্ষা গ্রহণ করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে সাড়ে তিন বছর থেকে সাড়ে চার বছর পর্যন্ত সময় লাগছে। পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রতা ও ফল প্রকাশের অনিশ্চয়তার কারণে বিসিএস পরীক্ষার্থীরা একসঙ্গে তিন-চারটি পরীক্ষার প্রস্তুতি বা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে বাধ্য হন। বিসিএসের চাকরিতে সুযোগ-সুবিধা ও সামাজিক মর্যাদা বেশি হওয়ায় এর প্রতি চাকরিপ্রার্থীদের ঝোঁক বেশি। এ কারণে লেখাপড়া শেষ করা বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণীর জীবনের বড় সময় চলে যাচ্ছে বিসিএস পরীক্ষার পেছনে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও সুপারিশ করা হয়েছে। গত শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে জনপ্রশাসন সংস্কারসহ ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর আগে বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেন কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
পঞ্জিকা ও তুলনামূলক চিত্রসংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪১তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালের নভেম্বরে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ মাস পর প্রিলিমিনারি বা বাছাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের মার্চে। এরপর একই বছরের আগস্টে ফল প্রকাশিত হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর ফল প্রকাশ করতে সময় লাগে পাঁচ মাস। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় এমসিকিউ পদ্ধতিতে। অথচ এমসিকিউ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশ হয় মাত্র তিন দিনে।
এরপর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের আট মাস পর ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা। ফল প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের নভেম্বরে। মানে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সময় লেগেছে প্রায় এক বছর। এরপর মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয় ২০২৩ সালের জুনে। এই বিসিএসের অধীন বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয় একই বছরের আগস্টে, অর্থাৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে চাকরির সুপারিশ করা পর্যন্ত সময় লেগেছে তিন বছর আট মাস। কিন্তু সুপারিশের পর আবার প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করে ২০২৪ সালের মার্চে সরকার নিয়োগের গেজেট জারি করে। সব মিলিয়ে ৪১তম বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বলেছে, বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনে পিএসসি অহেতুক অনেক মূল্যবান সময় অপচয় করে। ফলে লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ–তরুণীর জীবনের মূল্যবান সময়, মেধা ও শ্রমের অপচয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিসিএস পরীক্ষার কোনো সময়সূচি বা পঞ্জিকা অনুসরণ করা হয় না।সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ভারতের সিভিল সার্ভিসের নিয়োগপ্রক্রিয়ার একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভারতে ২০২৩ সালের কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় একই বছরের মে মাসে এবং ফল প্রকাশিত হয় জুনে। আর লিখিত পরীক্ষা হয় ওই বছরের ১৫ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় ডিসেম্বরে। আর সর্বশেষ মৌখিক পরীক্ষা হয় গত বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, অর্থাৎ তারা পরীক্ষা শেষ করেছে এক বছরের মধ্যে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বলেছে, বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনে পিএসসি অহেতুক অনেক মূল্যবান সময় অপচয় করে। ফলে লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ–তরুণীর জীবনের মূল্যবান সময়, মেধা ও শ্রমের অপচয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিসিএস পরীক্ষার কোনো সময়সূচি বা পঞ্জিকা অনুসরণ করা হয় না। নির্দিষ্ট বা প্রকাশিত পঞ্জিকা না থাকায় পরীক্ষা অনুষ্ঠানে বা ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়। পৃথিবীর দীর্ঘতম নিয়োগপ্রক্রিয়া হচ্ছে বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসের নিয়োগপ্রক্রিয়া।
এ পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়রেখা প্রতিষ্ঠা করা উচিত বলে মনে করে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ক্ষেত্রে পিএসসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এরপর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। আর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। এরপর লিখিত পরীক্ষা হবে জুনের দ্বিতীয়ার্ধে (১০ দিন)। ফল প্রকাশিত হবে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এরপর মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হবে পরবর্তী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। তারপর মের তৃতীয় সপ্তাহে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ছাড়পত্র দেওয়ার কথা রয়েছে এই পঞ্জিকায়। এরপর নিয়োগের আদেশ জারি হবে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। আর নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা কাজে যোগ দেবেন ১ জুলাই। এভাবে দেড় বছরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে কমিশন।
সিলেবাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান, বাণিজ্য, আইন ইত্যাদি গুচ্ছ থেকে ছয়টি ঐচ্ছিক বিষয় (প্রতিটি ১০০ নম্বরের) অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে কোনো গুচ্ছ থেকে দুটির বেশি বিষয় নির্বাচন করা যাবে না।পুলিশ শুধু ফৌজদারি মামলার তথ্য দেখবেসংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিসিএস পরীক্ষার আরেকটি মন্দ দিক হচ্ছে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবং পিএসসির সুপারিশ পেয়েও অনেক প্রার্থীকে নিয়োগ না দেওয়া। এ ক্ষেত্রে কিছু বিসিএসে বাদ পড়ার উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশন বলেছে, বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশের কাছে শুধু সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কি না, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন চাইবে। প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছেও প্রতিবেদন চাইবে। পাসপোর্ট, দ্বৈত নাগরিকত্ব, সমাজসেবা সংস্থা ও এনজিওর বোর্ড গঠন ইত্যাদি নাগরিক সেবার ক্ষেত্রেও পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র থাকলে তার বিষয় নিষ্পত্তি করার সুপারিশ করেছে কমিশন।
সিলেবাস পরিবর্তনের সুপারিশবর্তমানে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কৃতকার্য প্রার্থীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী, ২৬টি ক্যাডার সাধারণ ক্যাডার ও কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডার—এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। সাধারণ ক্যাডারের প্রার্থীদের জন্য বাংলায় ২০০ নম্বরের, ইংরেজিতে ২০০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১০০, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় ১০০ এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়। আর কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের প্রার্থীদের বাংলায় ১০০ নম্বরের, ইংরেজিতে ২০০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১০০, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় ১০০ এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়।
এখন সংস্কার কমিশন ছয়টি আবশ্যিক বিষয় ও সেগুলোর নম্বর পুনর্বণ্টনের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে বাংলায় ১০০, ইংরেজিতে ১০০, ইংরেজি কম্পোজিশন ১০০ নম্বরের, বাংলাদেশে সংবিধান, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে ১০০, আন্তর্জাতিক ও চলতি বিষয়ে ১০০ এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সমাজ ও পরিবেশ এবং ভূগোল বিষয়ে ১০০ নম্বর করার সুপারিশ করেছে। এসব আবশ্যিক বিষয় ছাড়াও সিলেবাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান, বাণিজ্য, আইন ইত্যাদি গুচ্ছ থেকে ছয়টি ঐচ্ছিক বিষয় (প্রতিটি ১০০ নম্বরের) অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবেকোনো গুচ্ছ থেকে দুটির বেশি বিষয় নির্বাচন করা যাবে না। আর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ন্যূনতম নম্বর ৬০ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। কোনো প্রার্থী পরপর তিনবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে তিনি আর পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
বর্তমানে পিএসসির অধীন পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। সংস্কার কমিশন এসব ক্যাডারকে ১৩টি সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করেছে। নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে তিনটি পিএসসি করার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিটি পিএসসির সদস্যসংখ্যা হবে চেয়ারম্যানসহ আটজন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিসের জন্য পৃথক দুটি পিএসসি হবে। নাম হবে পিএসসি (শিক্ষা) ও পিএসসি (স্বাস্থ্য)। বাকি সার্ভিসের জন্য একটি পিএসসি হবে, নাম হবে পিএসসি (সাধারণ)। বর্তমানে বিসিএস ক্যাডার ও নন–ক্যাডার নিয়োগে একটি পিএসসি কাজ করছে।
এ পরিবর্তনের সুপারিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষায় বেশ জট আছে। এই জটগুলো যখন শেষ হবে, এর পর থেকে ১৪ মাসেই বিসিএস পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব। সিলেবাস বা পাঠ্যসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, এই সুপারিশগুলো নিশ্চয় সরকার ভেবে দেখবে। আর সরকার বললে তাঁরাও বিবেচনা করবেন। পরিবর্তনের ব্যাপারে তাঁরা নিজেরাও ভাবছেন। এখন তাঁদের কাজটিকে আরও সহজ করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর র স প র শ কর ছ র ল খ ত পর ক ষ পর ক ষ র প স পর ক ষ র সময় ল গ ছ ই ব স এস ক পর ক ষ ব স এস র বছর র ম প এসস র চ র বছর র জন য শ ষ কর য় ১০০ প রথম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ই-ক্যাব নির্বাচন ৩ মে, তফসিল ঘোষণা করলেন প্রশাসক
দেশের ই-কমার্স খাতের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচন হবে ৩ মে। নির্বাচনে ই-ক্যাবের কার্যনির্বাহী পরিষদের ১১ পদে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে গতকাল রোববার তফসিল ঘোষণা করেছেন ই-ক্যাবের প্রশাসক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সেলের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলী।
তফসিল ঘোষণার বিষয়ে মুহাম্মদ সাঈদ আলী আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবশ্যই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করছি। আর এটা হবেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে। আর সরকারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও আমাদের সহযোগিতা করবে। আশা করছি ভালো কিছু হবে।’
আরও পড়ুনবাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি ও ই-ক্যাবে প্রশাসক, ১২০ দিন পরেও নির্বাচনের কোনো ঘোষণা নেই১৮ ঘণ্টা আগেনির্বাচনের তফসিলের তথ্যমতে, ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সদস্যপদ নবায়ন ও প্রাথমিক ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করা যাবে। এরপর বিভিন্ন যাচাই-বাছাই শেষে ১৩ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ঘোষণা করা হবে। এরপর ১৫ তারিখ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল কার্যক্রম শুরু হবে এবং ৯ এপ্রিল বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তরফদার সোহেল রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. হাফিজ-আল-আসাদ ও শাহাদাৎ হোসেন।
আরও পড়ুনই–ক্যাবের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলেন শমী কায়সার১৩ আগস্ট ২০২৪প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর গত ১৩ আগস্ট ই-ক্যাবের সভাপতির পদ থেকে শমী কায়সার পদত্যাগ করেন। এরপর পদত্যাগ করেন কার্যনির্বাহী পর্ষদের সব সদস্য। ফলে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর ই-ক্যাবে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। সে সময় বলা হয়েছিল, প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন। তবে ১২০ দিন পার হয়ে গেলেও ই-ক্যাব নির্বাচন হয়নি।