নাটোর জেলা বিএনপির সকল ইউনিট বিলুপ্ত
Published: 10th, February 2025 GMT
নাটোর জেলার অধীন সব উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বিএনপি। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আসাদ।
এর আগে, সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আব্দুস সালাম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রবিবার সকালে ঢাকা নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ে নাটোর জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির মতবিনিময় ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সমন্বয়ক (রাজশাহী বিভাগ) আব্দুস সালাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) অ্যাড.
সভায় আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে নাটোর জেলার সকল উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়।
ঢাকা/আরিফুল/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন
বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের জনসমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ‘রাজনৈতিক সরকারকে আমরা বিশ্বাস করি না। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির বিরুদ্ধে এবং বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। কৃষক–শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কেউ কাজ করেনি।’
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে জনসমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন।
সমাবেশ শেষে ভূমিহীন আন্দোলনের পক্ষ থেকে কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগণের অধিকার আদায়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যে সংস্কারের আশায় জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে কৃষক–শ্রমিক অংশ নিয়েছিলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর সেই আলোচনা স্তিমিত হয়ে আসছে। কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার রক্ষায় এই রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার জরুরি। এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমরা মানব না।’
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে রাজনৈতিক সরকার আগের মতো ফ্যাসিবাদী আচরণের সুযোগ পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন।
শেখ নাসির বলেন, ‘বছরের পর বছর ভূমিহীনেরা নির্যাতনের শিকার। দেশের কৃষকদের ভালোমন্দ কেউ ভাবে না। আগেই জাতীয় সরকার নির্বাচন হলে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের পছন্দের বাইরে মেম্বার–চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন না। আমরা এই ধারণার পরিবর্তন চাই।’
তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভূমিহীনেরা সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ের নির্যাতিত মানুষ। তাদের সঙ্গে প্রশাসকের কোনো সম্পর্ক নেই। দ্রুত সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হলে শ্রমিকদের দুর্ভোগ লাঘব হবে না। আগে জাতীয় নির্বাচন হলে মেহনতি মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারবেন না৷ অতীতে আমরা এমনটিই দেখেছি। স্থানীয় এমপির বলয়ের বাইরে মেম্বার–চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন না।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল মজিদ বলেন, কৃষক ও শ্রমিকেরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা ভেবেছিলেন, এবার হয়তো নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। কিন্তু এখনো তার কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। বরং সরকার যায় সরকার আসে, সবাই তাদের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত মেটাতে ব্যস্ত। এখন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সবাই কথা বলছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে না হলে কৃষক আবারও বঞ্চিত হবে।
কবি জামাল শিকদার বলেন, ‘আমরা মেহনতি মানুষ। কিন্তু সেটার কোনো স্বীকৃতি নেই। ভূমিহীন কারা? আমাদের ভূমিহীন বলার অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের? যাদের ভূমিহীন, শ্রমিক, চাষাভুষা বলে ছোট করছেন, তাঁরা ফসল না ফলালে আপনারা শহরের মানুষ খেতে পারতেন না। কাজেই এই ভূমিহীনদের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করুন।’
স্থানীয় পর্যায়ে নিয়োগ করা প্রশাসকদের সঙ্গে ভূমিহীনদের কোনো যোগাযোগ নেই উল্লেখ করে গণমাধ্যমকর্মী সাকিব প্রত্যয় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাওয়ার পর একটি দল নতুন করে চাঁদাবাজ ও মাস্তানদের দিয়ে জোর দখলে মেতেছে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার–চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ভূমিহীনেরা তাঁদের দাবির কথা সরকারের কাছে বলতে পারেন। কিন্তু ফ্যাসীবাদি আমলের পর জনপ্রতিনিধির পরিবর্তে আমরা প্রশাসক দেখতে পাই। এদের দিয়ে কৃষক–শ্রমিকদের কোনো উন্নতি হচ্ছে না।’
জনসমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের লবণচাষি বাবর চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ হাওর এলাকার প্রতিনিধি মো. মুহসিন, গাইবান্ধার আলুচাষি সামিউল আলম, জামালপুরের কৃষক নেতা জিয়াউল ইসলাম, নোয়াখালীর হাতিয়া প্রতিনিধি সামসুউদ্দীন আহমদ, পাবনার পেঁয়াজচাষি মাসুদ রহমান খান, সাভারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লিটন কবিরাজ, সচিবালয় এলাকার রিকশাচালক শেখ ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।