ভক্তরা সাধারণত খেলোয়াড় কিনতে ক্লাবগুলো কত টাকা খরচ করল, সেদিকেই বেশি চোখ রাখেন। কিন্তু ক্লাবগুলো শুধু খেলোয়াড় কিনতেই টাকা খরচ করে যাচ্ছে, এমন নয়। বিপরীতে খেলোয়াড় বিক্রি করে বেশ আয়ও করে তারা। মূলত কেনাবেচার এই ভারসাম্যই ক্লাবগুলোর আর্থিক সক্ষমতাকে চিহ্নিত করে।

যদিও দলবদলে খেলোয়াড় বেচাকেনার ধরন সবার এক নয়। কোনো কোনো ক্লাব খেলোয়াড় কিনে দল ভারী করে সাফল্য পেতে চায়, কোনো ক্লাব আবার খেলোয়াড় তৈরি করে বিক্রি করাতেই বেশি জোর দেয়। কোনো কোনো ক্লাব আবার দুটির মধ্যে একধরনের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করে।

খেলোয়াড় কেনায় যেসব ক্লাব বেশি টাকা খরচ করে, চেলসি তাদের অন্যতম। তবে গত ১০ মৌসুমে হিসাবের দিকে তাকালে দেখা যাবে, চেলসি শুধু কেনার দিক থেকে নয়, বেচার দিক থেকেও এগিয়ে। সবাইকে টপকে খেলোয়াড় বিক্রিতে গত ১০ মৌসুমে সবার ওপরে অবস্থান চেলসির।

আরও পড়ুনখেলোয়াড় বিক্রির আয়ে দ্বিতীয় স্থানে গার্দিওলা, সবার ওপরে কে০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যারা এ সময়ে খেলোয়াড় বিক্রি করে পেয়েছে ১৩০ কোটি ইউরো (প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা) চেলসির বিক্রির তালিকায় এডেন হ্যাজার্ড (১২ কোটি ইউরো) ও কাই হাভার্টজের (৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো) মতো তারকাও আছেন।

চেলসির পর ১২৭ কোটি ইউরো নিয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে বেনফিকা। শুনতে একটু আশ্চর্য মনে হলেও যারা নিয়মিত ফুটবলের দলবদলের খবর রাখেন, তাঁরা বেনফিকার সামর্থ্য সম্পর্কে জানেন। খেলোয়াড় তৈরি করে বড় ক্লাবগুলোর কাছে বিক্রি করার জন্য বেশ পরিচিত তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে এনজো ফার্নান্দেজ (১২ কোটি ১০ মিলিয়ন) ও জোয়াও ফেলিক্স (১২ কোটি ৭০ লাখ) ছিলেন বেনফিকা থেকে বিক্রি হওয়া দুই আলোচিত ফুটবলার। এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে অন্তত ১৩ জন ফুটবলারকে ৫ কোটি বা তার বেশি দামে বিক্রি করেছে ক্লাবটি। এই জানুয়ারিতেও নিকো গঞ্জালেসকে ৬ কোটি ইউরোতে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে বিক্রি করেছে তারা।

আরও পড়ুনএই বিশাল বহর লইয়া কী করিবে চেলসি২৪ আগস্ট ২০২৪

এই তালিকার পরের নামও খেলোয়াড় তৈরি করে বিক্রির জন্য বিখ্যাত। বলা হচ্ছে মোনাকোর কথা। গত ১০ মৌসুমে যারা খেলোয়াড় বিক্রি করে আয় করেছে ১১৪ কোটি ইউরো। ১০০ কোটির ঘরে থাকা অন্য ক্লাবগুলো হলো জুভেন্টাস (১০৯ কোটি), ডর্টমুন্ড ডর্টমুন্ড (১০৩ কোটি) ও আয়াক্স আমস্টারডাম (১০০ কোটি)। এ ছাড়া শীর্ষ দশে থাকা অন্য ক্লাবগুলো হলো বার্সেলোনা (৯৭ কোটি ৩০ লাখ), আতলেতিকো মাদ্রিদ (৯৩ কোটি ৭০ লাখ), ম্যানচেস্টার সিটি (৮৭ কোটি ৭০ লাখ), পোর্তো (৮৪ কোটি ৬০ লাখ)।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জানুয়ারির শীতে ২৮ হাজার কোটি টাকার ‘গরম’ দলবদলের বাজারে

২৩৫ কোটি মার্কিন ডলার!

বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার ৬৭০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা প্রায়। এটা ছেলেদের ফুটবলে জানুয়ারির শীতকালীন দলবদলে আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলোর মোট খরচের অঙ্ক, যা গত বছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হওয়া দলবদলের এই খরচের তথ্য জানিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।

আরও পড়ুন৭ গোলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয়, জিতেছে ব্রাজিলও৪ ঘণ্টা আগে

ফিফার মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা ভিন্ন ভিন্ন দেশের ক্লাবগুলোর মধ্যে খেলোয়াড় বিকিকিনির হিসাব এটি। জানুয়ারির এই উইন্ডোয় ৫৮৬৩টি আন্তর্জাতিক দলবদল সম্পন্ন হয়েছে। দলবদল সংখ্যায় এটি নতুন রেকর্ড। গত বছরের একই সময়ে হয়েছিল ৪৯৬৩টি আন্তর্জাতিক দলবদল। এবার দলবদল ৯০০টি বা ১৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।

ফিফার আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার স্ন্যাপশটের হিসাব অনুযায়ী, এবার আন্তর্জাতিক দলবদলে বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলো যত খরচ করেছে, তা আগের চেয়ে ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ বেশি—২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক দলবদলে ১৫৭ কোটি ডলার খরচের রেকর্ড হয়েছিল।

গত মাসে আন্তর্জাতিক দলবদলে খরচের শীর্ষে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো। খরচের পরিমাণ ৬২ কোটি ১৬ লাখ ডলার, যার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি একাই খরচ করেছে ২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। শীতকালীন এই দলবদলে ওমর মারমৌশ, নিকো গঞ্জালেস, আবদুকোদির খুশানভ, ভিতর রেইস ও জুমা বাহকে কিনেছে পেপ গার্দিওলার দল।

কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড জন ডুরান এই উইন্ডোর সবচেয়ে ব্যয়বহুল দলবদল। ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ডলারে অ্যাস্টন ভিলা থেকে তাঁকে কিনেছে সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসর। অ্যাড–অনস হিসেবে এই দলবদলের খরচের অঙ্কটা আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন‘ফার্গি টাইম’ নয়, ইউনাইটেডে এবার ‘অফসাইড টাইম’৪ ঘণ্টা আগে

যেসব দেশের ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে, তার মধ্যে শীর্ষ পাঁচের বাকি চারটি দেশ হচ্ছে—জার্মানি (২৯ কোটি ৫৭ লাখ ডলার), ইতালি (২২ কোটি ৩৮ লাখ ডলার), ফ্রান্স (২০ কোটি ৯৭ লাখ ডলার) ও সৌদি আরব (২০ কোটি ২১ লাখ ডলার)। আর খেলোয়াড় বেচে আয়ের দিক থেকে সবার ওপরে ফ্রান্স। মোট ৩৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের খেলোয়াড় বিক্রি করেছে ফরাসি ক্লাবগুলো। ২২ কোটি ৬২ লাখ ডলার আয় করে এরপরই আছে জার্মান ক্লাবগুলো। ১৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় করে তৃতীয় ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো। চারে পর্তুগাল (১৭ কোটি ৬৪ লাখ ডলার) ও পাঁচে ইতালির (১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার) ক্লাবগুলো।

এবারের শীতকালীন দলবদলে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড়ের ঠিকানা হয়েছে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো—৪৭১, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আর্জেন্টিনায় ২৫৫ জন।

মেয়েদের ফুটবলেও জানুয়ারির দলবদলের উইন্ডোয় রেকর্ড ৫৮ লাখ ডলার খরচ হয়েছে। দলবদল সম্পন্ন হয়েছে মোট ৪৫৫টি, যা আগের তুলনায় ১৮০ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো মেয়েদের দলবদলে সর্বোচ্চ ২৩ লাখ ডলার খরচ করেছে। সর্বোচ্চ ৩৯ জন খেলোয়াড়ও পেয়েছে ইংলিশ ফুটবলের ক্লাবগুলো।

আরও পড়ুন‘জীবনের সঙ্গী’কে বিদায়ী বার্তা রোনালদোর০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিপিএলে এবারও নেই বিদেশি ক্রিকেটার
  • জানুয়ারির শীতে ২৮ হাজার কোটি টাকার ‘গরম’ দলবদলের বাজারে