এক মাস ৯ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার থেকে আবার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। 

গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, আজ থেকে ঢাকা মহানগরী ও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি স্থানে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। যে কোনো ক্রেতা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। এ ছাড়া অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও নির্দিষ্ট কিছু জেলায় ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে বিক্রয় কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, স্মার্ট কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল ও ডাল) বিক্রির কার্যক্রম চলছে। এর পাশাপাশি কার্ড নেই, এমন সাধারণ ভোক্তাদের কাছে ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হবে। ট্রাক থেকে তেল, ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর কিনতে পারবেন ক্রেতারা।

একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন বা কুঁড়ার তেল), দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা ও ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। রমজান মাস উপলক্ষে বিক্রি করা হবে ছোলা ও খেজুর।  প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ১০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা ও আধা কেজি খেজুর ১৫৫ টাকায় বিক্রি করা হবে। 

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগরের ৫০টি এবং চট্টগ্রাম মহানগরের ২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে টিসিবি। ৩১ ডিসেম্বরের পর এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ থেকে আবার শুরু হচ্ছে এ কার্যক্রম।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বইমেলায় ‘মবের’ মতো উসকানিমূলক অবস্থা কেন তৈরি হলো, প্রশ্ন ইসলামী আন্দোলনের

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, একটি কার্যকর রাষ্ট্রে কোনো ক্ষেত্রেই ‘মব’ সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য না। সেই নীতিতে গতকাল বইমেলায় যা হয়েছে, তা–ও সমর্থনযোগ্য না। একই সঙ্গে বইমেলায় তসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মাওলানা ইউনুছ আহমাদ এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্রে কোনো ক্ষেত্রেই “মব” সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য না। সেই নীতিতে গতকাল বইমেলায় যা হয়েছে, তা–ও সমর্থনযোগ্য না। একই সঙ্গে এই প্রশ্নও করা জরুরি যে তসলিমার মতো একজন, যার দেশদ্রোহিতা ও সমাজবিরুদ্ধতা বারবার প্রমাণিত এবং যে পতিত ফ্যাসিবাদের পক্ষের নির্লজ্জ যোদ্ধার ভূমিকা পালন করেছে, তার বই কী করে বইমেলায় প্রকাশিত হতে পারে? কোন সাহসে একটা প্রকাশনী তসলিমার মতো ব্যক্তির বই ছাপাতে পারে, সেই প্রশ্ন করাও জরুরি।’

তসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়ে অমর একুশে বইমেলার ‘সব্যসাচী’ নামের স্টলে গতকাল সোমবার বাগ্‌বিতণ্ডা ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পরে ওই স্টল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। স্টলে থাকা ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে নেওয়া হয়। এই স্টলের বিরুদ্ধে নাস্তিকতা প্রচারের অভিযোগ তুলে সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গত রোববার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট দেওয়া হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেছেন, ‘গতকাল যা হয়েছে, তা প্রতিক্রিয়া। সেই প্রতিক্রিয়ার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, এমন উসকানিমূলক ক্রিয়া তৈরি হলো কেন? এই প্রশ্নের সমাধান না করে “তৌহিদী জনতা”কে শায়েস্তা করার হুমকি দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, বইমেলার ঘটনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছিলেন, মবের মহড়া সরকার শক্ত হাতে দমন করবে। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘তৌহিদী জনতা! আপনারা দেড় দশক পরে শান্তিতে ধর্ম ও সংস্কৃতি পালনের সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের আহাম্মকি কিংবা উগ্রতা আপনাদের সে শান্তি বিনষ্টের কারণ হতে যাচ্ছে। জুলুম করা থেকে বিরত থাকেন, নইলে আপনাদের ওপর জুলুম অবধারিত হবে। লা তাযলিমুনা ওলা তুযলামুনা—জুলুম করবেন না, জুলুমের শিকারও হবেন না। এটাই আপনাদের কাছে শেষ অনুরোধ!’

আরও পড়ুনতসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা–হট্টগোল, একটি স্টল বন্ধ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উপদেষ্টার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ইউনুছ আহমাদ বলেন, একজন উপদেষ্টা যে ভাষায় কথা বলেছেন ও হুমকি দিয়েছেন, তা জনতন্ত্রের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নতুন বাংলাদেশের কোনো উপদেষ্টার কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত না। এমন অবস্থায় দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুনবইমেলার স্টলে হামলার নিন্দা প্রধান উপদেষ্টার, দোষীদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ২২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ