আইনি প্রক্রিয়ায় আটকে আছে জকসু নির্বাচন
Published: 10th, February 2025 GMT
অবশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথ খুলছে। আইনে ছাত্র সংসদের বিধান যুক্ত না থাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৯ বছরেও নির্বাচন হয়নি। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নীতিমালা ইতিমধ্যে সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলেই নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক চর্চার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের বিধান না থাকায় দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন ও নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। কয়েকটি ছাত্র সংগঠনও একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে জকসু বিধান যুক্ত করার উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ।
সিন্ডিকেটে অনুমোদিত জকসু নীতিমালার আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে অধ্যাদেশ জারি হলে এটি আইন হিসেবে গৃহীত হবে।রেজাউল করিম, উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ নিয়ে কোনো বিধান ছিল না। ইতিমধ্যে সিন্ডিকেট সভায় জকসুর নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন জকসু নিয়ে আর কোনো বাধা নেই। সিন্ডিকেটে অনুমোদিত নীতিমালার আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে অধ্যাদেশ জারি হলে এটি আইন হিসেবে গৃহীত হবে।’
বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার আইন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’–এ ছাত্র সংসদের বিষয়টি যুক্ত ছিল না। প্রতিষ্ঠার পর গত প্রায় ১৯ বছরেও ছাত্র সংসদ বিধান যুক্ত করা হয়নি। ফলে নির্বাচনও হয়নি। যদিও ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়ন করে জমা দিলেও সিন্ডিকেটে তা পাস হয়নি।
গত ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জকসু নির্বাচনের জোরালো দাবি তোলেন। প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আবাসন, ক্যানটিন, মানসম্মত লাইব্রেরিসহ নানা সংকট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরাসহ শিক্ষার্থীদের যাবতীয় অধিকার নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ অত্যন্ত জরুরি। তাই দ্রুত জকসু নির্বাচন দিতে হবে।
জকসু বিধান সিন্ডিকেটে পাস হওয়ার পর রেজল্যুশন আকারে চিঠি আসার কথা, সেটা এখনো আমার কাছে আসেনি। চিঠি এলেই আমরা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু করব।সাবিনা শরমীন, কোষাধ্যক্ষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করে ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেজবা উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিয়মিত জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে শিক্ষার্থীদের প্রতি ছাত্রনেতাদের জবাবদিহির পথ তৈরি হবে। সেই জবাবদিহির জায়গা থেকে ছাত্রনেতারা চাইলেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ব্যাহত হয়, এমন কোনো কাজ বা লেজুড়বৃত্তিক দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। তাই তিনি ছাত্র সংসদ নির্বাচন চান।
সম্প্রতি ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জকসু নীতিমালা ও নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত রূপরেখার দাবি জানায়। ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জকসু নির্বাচনের দাবিতে গত নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলনে করে।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জকসুর নীতিমালা প্রণয়নে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জকসুর খসড়া (পরিমার্জিত ও সংশোদিত) নীতিমালা জমা দেয়। প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে জকসু নীতিমালা অনুমোদিত হয়। সিন্ডিকেটে অনুমোদিত নীতিমালার আইনি মতামত গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীনসহ দুজন অধ্যাপককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সাবিনা শরমীন গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রথম আলোকে বলেন, ‘জকসু বিধান সিন্ডিকেটে পাস হওয়ার পর রেজল্যুশন আকারে চিঠি আসার কথা, সেটা এখনো আমার কাছে আসেনি। চিঠি এলেই আমরা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করব।’
ছাত্রসংগঠনগুলো কী বলছেজকসু নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব ছাত্রসংগঠন। তবে কারা ভোট দিতে বা নির্বাচন করতে পারবেন, তাঁদের বয়স কত হবে—এসব নিয়ে সংগঠনগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক জুবায়ের ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের দিকে নজর রাখার জন্য এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রয়োজন। তাঁর মতে, প্রাক্তন শিক্ষার্থী নয়, বরং বর্তমান শিক্ষার্থীরা জকসু প্রতিনিধি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো। কারণ, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত।
গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার জন্য ছাত্র সংসদের নির্বাচন প্রয়োজন বলে মনে করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুল আরেফিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।
ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইন পাস করে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে স্মারকলিপি দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। যাঁরা পাস করে বের হয়েছেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে কাজ করতে পারবেন না।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগে ঠিক করতে হবে যে শিক্ষার্থী কারা বা শিক্ষার্থীর সংজ্ঞা কী হবে? সেই ক্ষেত্রে যদি শিক্ষার্থীর বয়স ৩০ বছরও হয়, তাহলে তাঁকে ভোটার হওয়ার সুযোগ দেওয়া দরকার।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন দরকার উল্লেখ করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ইভান তাহসীভ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য দাবিদার।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাজাম্মুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সব সংগঠন গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করছে। আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে কোনো সহিংসতা নেই, যেটা খুবই ইতিবাচক। আইন চূড়ান্ত হলেই জকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমরা প্রস্তুত।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রণয়ন র জন য র আইন হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
অর্ধযুগ পর রাবিতে শুরু হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ
অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শুরু হতে যাচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম। প্রায় অর্ধযুগ পর আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
তবে এবারের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় থাকছে না পরিবর্তন। ২০২২ সালের নিয়োগ নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে সব বিভাগেই শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপরেই শুরু হবে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ। তবে শিক্ষক নিয়োগ আগে শেষ করতে চান রাবি প্রশাসন। তবে বর্তমান প্রশাসনের নিয়োগ নীতিমালা কেমন হবে এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কমতি নেই।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ ডিসেম্বর পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সব নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।
জানা যায়, বিগত সময়গুলোতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের মতো করে যোগ্যতা নির্ধারণ করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। এমনকি নিজেদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে নিয়োগের যোগ্যতা শিথিল করেছে বলে ইউজিসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা-২২ অনুসারে শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য একজন প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্স ফলাফল ন্যূনতম সিজিপিএ-৩.৫ এবং মেধাক্রমে ১-৭ এর মধ্যে থাকতে হবে। তবে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে কোনো প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্সের ফলাফল সিজিপিএ-৩.৫ এর নিচে হলে তা শিথিলযোগ্য হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রদত্ত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুসারে গণ্য করা হবে।
২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে-জামাইকে চাকরি দিতে নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান। এতে অনার্স-মাস্টার্সে সিজিপিএ কমিয়ে ৩.২৫ এবং মেধাক্রমের শর্ত তুলে দেয়া হয়, যা ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের বহির্ভূত ছিল। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত সাপেক্ষে ওই নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করা হয় এবং নতুন নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের ১০ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৬তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাবিতে বর্তমানে ১ হাজার ৪৯০টি শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৪০টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় এক হাজার ৫০জন। তাদের মধ্যে আবার ৫৮জন সম্প্রতি অবসরে গেছেন। মারা গেছেন কিছু সংখ্যক শিক্ষক। অন্যদিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর ১ হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি। এছাড়া সাধারণ কর্মচারীর ১ হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে ৯০৯টি পদ শূন্য রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রতি ৩৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক। নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় এ অনুপাত কমতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিয়োগ নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “বিজ্ঞপ্তির মধ্যে যে শর্ত দেওয়া ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছিলেন। আপাতত সেই অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী