উচ্চশিক্ষায় অস্ট্রেলিয়া এখন অনেক শিক্ষার্থীর জন্য গন্তব্য। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা স্কলারশিপ দেয়। অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের আবেদন চলছে। দেশটিতে পড়তে চাইলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে বৃত্তির সুযোগ। ২০২৫ সালের জন্য দেশটির অন্যতম এই উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি দিচ্ছে ‘ভাইস চ্যান্সেলর ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ’। গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি দিয়ে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের সহায়তা করে। ভাইস চ্যান্সেলর ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপে প্রতিবছর গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রোগ্রামে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের পুরস্কৃত করে। আবেদন অনলাইনে করতে হবে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে পড়তে চাইলে এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বৃত্তিতে মিলবে টিউশন ফির ৫০ শতাংশ। এর সঙ্গে আরও সুযোগ–সুবিধা পাবেন শিক্ষার্থীরা। জানুয়ারি থেকে আবেদন চলছে। আবেদনের জন্য গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় কিছু যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ডে জয়ী অনেক শিক্ষক গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। ২০২৩ সালের ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট বারোমিটার সার্ভেতে দেখা গেছে, গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনে সুখী।

গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা, নির্দেশনা এবং সহায়তা প্রদান করতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০টির বেশি ডিগ্রি প্রদান করে। গবেষণা এবং শিক্ষাদানের উৎকর্ষের খ্যাতি আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির।

আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ড দিচ্ছে স্কলারশিপ, সুযোগ পাবেন যাঁরা০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ছবি: বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আছিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আছিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতের বিভিন্ন সময়ে তারা এসব কর্মসূচি পালন করেন। রাইজিংবিডি ডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)

রাত পৌনে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। জানাজা শেষে কফিন মিছিল নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তারা।

গয়েবানা জানাজায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.  নিয়াজ আহমেদ খান, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাবি শাখার সদস্য সচিব জাহিদ আহসান, ঢাবি শিবির নেতা মাজহারুল ইসলামসহ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

গায়েবানা জানাজা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, “এ শিশুটির জন্য পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে এ ঐক্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর কোনো শিশু এভাবে হারিয়ে না যাক। দেশের বিচার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হোক। আছিয়ার পরিবারকে আল্লাহ হেফাজত করুক। আমরা যার যার জায়গা থেকে তার পরিবারের পাশে দাঁড়াব।”

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘তোমার বোন আমার বোন, আছিয়া আছিয়া’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাং দ্যা রেপিস্ট’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, খুনীদের বিচার চাই’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁয় নাই’, ‘জুলাইয়ের বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁয় নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ঢাবি শিক্ষার্থী মেঘলা বলেন, “আছিয়ার এ ঘটনার পর আমরা যে এত আন্দোলন করলাম, কী লাভ হলো? আজো রামপুরায় এক মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে।”

শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন বলেন, “আছিয়া যুদ্ধ করতে করতে মারা গেছে, সেই লড়াইয়ে জিততে পারেনি। কিন্তু সেই লড়াইয়ের ভার আজ আমাদের উপর দিয়ে গেছে। আমরা যে পাঁচ দফা দাবি দিয়েছি, তার প্রথম দফায় ছিল ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের আইনের প্রতি ততক্ষণ শ্রদ্ধা থাকবে, যতক্ষণ ওই আইন ন্যায়বিচার করতে পারবে।”

সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, “আমরা যখন নারী নিপীড়নের বিচার চাইতে রাজপথে নামি, তখন আমাদেরকে ট্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ চায়, যেখানে আর কোনো আছিয়াকে ধর্ষিত হতে হবে না। আমরা আমাদের ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ থেকে দাবি জানিয়েছি, ধর্ষণবিরোধী একটা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।”

তিনি বলেন, “সারা দেশে ধর্ষিত নারীদেরকে প্রমাণ দেওয়ার জন্য দুইটা ল্যাব রয়েছে। যার দুটোই ঢাকায়। তাহলে কখন এ ল্যাবে আলামত সংগ্রহ হবে, আর কখনই-বা বিচার হবে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের জন্য আইনজীবীর হাতে ছেড়ে দেন। তারা এত কিছু বোঝেন না।”

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)

সন্ধ্যা ৭টায় শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বেরোবিতে গায়েবানা জানাজা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল থেকে তারা ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান, যাতে ভবিষ্যতে এমন জঘন্য অপরাধ কেউ করার সাহস না পায়।

একইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা একযোগে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করার দাবি জানিয়ে বলেন, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। যাতে আর কোনো শিশুর ভবিষ্যৎ এভাবে নষ্ট না হয়।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)

সন্ধ্যা ৭টায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার গায়েবানা জানাজা আদায় করেছেন যবিপ্রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল করেন তারা। 

জানাজা শেষে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের মূল সড়ক হয়ে প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে বিক্ষোভ-মিছিলটি শেষ হয়। 

বিক্ষোভ-মিছিলে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বোন আছিয়ার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। মাগুরার শিশু আছিয়ার ধর্ষকদের দ্রুত প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া ভবিষ্যতে ধর্ষকদের পাথর নিক্ষেপ করে শাস্তি দেওয়া হোক। আমরা চাই বাংলাদেশে এমন আইন বাস্তবায়ন করা হোক, যাতে দ্বিতীয়বার কেউ এমন অপরাধ করার আগে ভাবে।

ঢাকা/সৌরভ/সাজ্জাদ/ইমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ