পিরোজপুরে মাকে গাছে বেঁধে ঘরে আগুন দিল ছেলে
Published: 10th, February 2025 GMT
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে নিজের মাকে সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে বসতঘর পেট্রোল দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে ছেলে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার প্রত্যন্ত চরনী পত্তাশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ইন্দুরকানীর চরনী পত্তাশী গ্রামের জয়নাল কাজীর ছেলে আল আমিন পরকীয়া ও মাদকাসক্তের কারনে সেনাবাহিনী থেকে ২০২৪ সালে চাকরিচ্যুত হন। আল আমিনের চারিত্রিক সমস্যার কারনে তার দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যান। এ ঘটনায় আল আমিন তার বাবাকে দোষারোপ করতে থাকেন। গতকাল রোববার সকালে আল আমিন চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি এসে তার বাবাকে মারার জন্য দা নিয়ে ঘুরতে থাকেন। এমন অবস্থায় এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ বাড়িতে গেলে আল আমিন পালিয়ে যান। এক পর্যায়ে পুলিশ চলে গেলে আল আমিন উত্তেজিত হয়ে তার মাকে সুপারি গাছের সঙ্গে বাঁধেন। পেট্রল দিয়ে বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
ইন্দুরকানী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন জানান, চরনী পত্তাশী গ্রামে মাকে বেধে ছেলে বসতঘর আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলে আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করবেন বলে জানান ওসি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পোড়া ভিটায় ফিরছেন ক্ষতিগ্রস্তরা, ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পাড়ায় (সাজেক ভ্যালি) আগুনে পুড়ে সর্বস্ব হারিয়েছে ৩৮টি ত্রিপুরা ও লুসাই পরিবার। দুই সপ্তাহ ধরে গির্জা, মন্দির ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে দিনযাপন করছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। এখন পোড়া ভিটায় কেউ ঘর তৈরি করে, কেউ আবার তাঁবু টানিয়ে কোনোরকম মাথা গোঁজার চেষ্টা করছেন। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাতেও রয়েছেন তাঁরা।
গতকাল সোমবার রুইলুই পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি পরিবার ঘর তৈরি আর তাঁবু টানানোর কাজ করছে। সরকারি-বেসরকারি যে সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন, তা দিয়েই নিজের ভিটেমাটিকে বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন বলে জানান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।
সরেজমিন কথা হয় করুণা ত্রিপুরার সঙ্গে। জানান গতকাল সকাল থেকে পোড়া ভিটায় কাঠ, বেড়া ও টিন দিয়ে ছোট ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। সরকারি-বেসরকারিভাবে কিছু সহায়তা পেয়েছেন। তা দিয়েই ঘর বানানোর চেষ্টা করছেন তিনি। বীর বসু ত্রিপুরা নামে আরেক বাসিন্দাকেও দেখা গেল দোচালা টিনের ঘর তৈরির কাজ করছেন। এরই মধ্যে ওপরে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। তবে চারপাশে বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়নি। কেবল সূর্যের তাপ থেকে বাঁচতে একপাশ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। গত রোববার থেকে ঘর নির্মাণের কাজ করছেন বলে জানান বীর বসু। সরেজমিন বেশ কয়েকটি ঘর তৈরির জন্য ভিটেতে কাঠ-বাঁশসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী জড়ো করতে দেখা যায়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকের রুইলুই ভ্যালিতে আগুনে পুড়ে যায় বসতঘর, কটেজ-রিসোর্ট, রেস্তোরাঁসহ ১০২টি স্থাপনা। বসতঘর পুড়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা পাশের গির্জা, মন্দির ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এর মধ্যে অনেকে বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু করলেও পুড়ে যাওয়া ৩৫টি রিসোর্ট-কটেজের কোনোটিরই পুনরায় নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির নেতারা জানান, আগুনে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আগুনের ঘটনার পর খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন, বাঘাইছড়ি সেনা জোন, উপজেলা প্রশাসন এবং বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিত্যপণ্য সহায়তা করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অনিত্য ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, বাসিন্দারা যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন, দুই সপ্তাহে সেখানে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই তাঁরা পোড়া ভিটেতে ঘর তৈরির চেষ্টা করছেন। তিনটি পরিবার এরই মধ্যে নতুন করে ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছে। আরও কয়েকটি পরিবার ঘর নির্মাণের কাজ করছে।
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেববর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থান পরিমাপ করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বসতঘর নির্মাণ শুরু হলেও রিসোর্ট-কটেজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।