গুলি ছুঁড়ে ব্রহ্মপুত্রে আবারও নৌ ডাকাতি
Published: 9th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ১০ দিনের ব্যবধানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ও গুলি ছুঁড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে আবারও নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে টানা তৃতীয় বারের মতো নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটল।
রোববার দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল নৌ-ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
এতে দুটি নৌকার যাত্রী ও ৬ থেকে ৭ জন গরু ব্যবসায়ীর প্রায় ৪ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়েছেন ডাকাতরা। এ সময় মো.
ডাকাতির শিকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কড়াই বরিশাল খেয়া ঘাটের কাছে দুটি যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতরা হামলা করে। নৌকা দুটি রাজিবপুরের কোদালকাটি ও পাখিউড়া থেকে চিলমারীর উদ্দেশে আসছিল। মাঝপথে যাত্রী নেওয়ার জন্য কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটে ভিড়লে সেখানেই আক্রমণ করে ডাকাতদল। তারা গুলি ছুঁড়ে নৌকায় থাকা যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ডাকাতি করে চলে যায়।
নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘খেয়া ঘাটে গরু ব্যবসায়ীদের নৌকা ছিল। ওদের নৌকায় ডাকাতি করতে আইসা আমার নৌকাতেও ডাকাতি করে। ১০ থেকে ১৫ জন ছিল। দুই নৌকা থাইকা টাকা লুট কইরা ডাকাতরা চইলা যায়। আমরা কিছু করতে পারি নাই।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাঝি মোসলেম আরও বলেন, ‘ডাকাতরা একটা গুলি করছে। ওদের হাতে বেকিও ছিল। আমার কাছে তিন যাত্রীর ৫৭ হাজার টাকা আছিল। আমাক বারি (আঘাত) দিয়া সেটা কাইরা নিছে। কয়েকজন যাত্রীর কাছেও টাকা নিছে। গরুর ব্যাপারিগো টাকাও কাইরা নিছে। ওগো অনেকে পানিত লাফ দিছে। পাশে পোশাক পড়া তিনজন পুলিশ আছিল। কিন্তু তারা আগায় আহে নাই।’
কড়াইবরিশাল এলাকার ইসহাক নামে এক নৌকা যাত্রী বলেন, ‘দুইটি নৌকায় যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের থেকে ৪-৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। পরে কাছে গিয়ে দেখি অনেকে পানিতে লাফ দিছে। সাথে থাকা টাকা পানিতে ভিজে গেছে।’
কড়াইবরিশাল এলাকার বাসিন্দা আজম মিয়া জানান, ‘গুলির শব্দ ও যাত্রীদের চিৎকারে ঘাটের কাছে থাকা স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যান। তারা নৌকা নিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করেন। কিন্তু ততক্ষণে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।’
ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাকাতরা গরু ব্যবসায়ীদের কয়েক লাখ টাকা লুট করেছে। আমরা ধাওয়া করলেও পুলিশ কোনো ভূমিকা নেয়নি। তারা অন্তত ফাঁকা গুলি করলেও ডাকাতদের ধরা যেত।’
আহত গরু ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের স্ত্রীর ছোট বোন সাবিনা খাতুন বলেন, ‘ডাকাতের রাম দায়ের আঘাতে আমার বোন জামাই গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
ডাকাতির ঘটনায় চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সেলিম সরকারকে একাধিকবার ফোন করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোশাহেদ খান জানান, নৌ পথ নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের ৩ সদস্য পাঠানো হয়েছিল। ডাকাতির ঘটনাস্থল থেকে তারা দূরে ছিলেন। স্থানীয়রা ভুলবুঝে পুলিশ সদস্যদের আটকে রাখে। পরে চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের সহযোগীতায় তাদের ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৯ জানুয়ারি কড়াইবরিশাল এলাকার পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদে যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারও আগে গত বছর ২১ ডিসেম্বর চিলমারীর অষ্টমীরচর ইউনিয়নের দুইশ বিঘার চরের কাছে নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১৬-১৭ জনের ডাকাত দল ‘পিস্তল’ ও দেশি অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে চলে যায়। একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় যাত্রীদের কাছে এই নৌ পথ যাত্রা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন ব যবস য় দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে নিজ বাসায় গার্মেন্ট কর্মী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, গ্রেপ্তার ২
সিদ্ধিরগঞ্জে নিজ বাসায় ভাগনে ও ভাতিজাকে আটকে রেখে এক পোশাক শ্রমিক (৪০) কে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনজনকে অভিযুক্ত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের শরীফ (২৭), ফয়সাল ও পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মিজান। পুলিশ মামলার সূত্রধরে অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে দুজন শরীফ ও মিজানকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিধবা ভুক্তভোগী নারী সিদ্ধিরগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার সঙ্গে ভাগনে ও ভাতিজাও থাকত। অভিযুক্ত শরীফ ওই বাড়ির দেখভালকারী এবং মিজান একজন ভাড়াটিয়া।
রবিবার রাতে হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে শরীফ দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তরা বাসায় প্রবেশ করে। পরে শরীফ ও ফয়সাল ওই নারীকে রান্নাঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে, আর মিজান তার ভাগনে ও ভাতিজাকে আটকে রাখে। ঘটনার পর তারা সবাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলম বলেন, অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।