পাবনার চাটমোহরের জার্জিস মোড় থেকে মান্নানগর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক। কয়েক বছর ধরেই বেহাল সড়কে ভোগান্তির শেষ ছিল না। গত বছর জুনে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেন। কিন্তু তা বেশি দিন টেকেনি। গত বছর ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনে কাজ ফেলে পালিয়ে গেছেন ঠিকাদার। স্বস্তির সংস্কার কাজ এখন অভিশাপে পরিণত।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছর ১১ জুন তূর্ণা এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে সিরাজগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক সংস্কারের কাজ পায়। ১৮ কিলোমিটার সংস্কারে ব্যয় ধরা হয় ১৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল আজ সোমবার। কিন্তু সড়কের ১২ কিলোমিটার পাথর ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার আজাদুর রহমান। অবশ্য আগেও তাঁর বিরুদ্ধে অনেক কাজ শেষ না করে কোটি কোটি টাকার বিল তোলার অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের ১২ কিলোমিটারের পুরোনো কার্পেট উঠিয়ে নতুন করে পাথর দেওয়া হয়েছে। ফলে মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাকি ছয় কিলোমিটার ব্যস্ততম এ সড়কে হাঁটুসমান বালু। প্রায়ই গাড়ি আটকা পড়ছে। ঠেলে তুলতে হচ্ছে। এ সময় বালুতে পড়ে অনেকেই নাজেহাল হচ্ছেন।
বালু আর ধুলোমাখা পথ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পণ্যবাহী পরিবহন। সড়কের পাশের সব গাছপালা এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ধুলায় ঢাকা পড়েছে। সড়কের ধুলার কারণে একদিকে যেমন যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে; অন্যদিকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পথচারী ও গাড়িচালকরা জানান, এটি জেলার অন্যতম ব্যস্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন এখানে ১০-২০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু বেহাল সড়কের কারণে তা নেমে এসেছে কয়েকশতে। বালুর মধ্যে অনেক গাড়ি আটকা পড়ে। আরোহীদের অনেকে আহত হয়েছেন। মাথা ঢেকে, মুখে মাস্ক দিয়েও চলাচল করা দায়।
ঠিকাদারের গাফিলতির কথা স্বীকার করে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর-পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, ‘এখানে ঠিকাদারের গাফিলতি আছে। আমরা একাধিকবার তাকে সতর্ক করেছি, নোটিশও দিয়েছি। কর্ণপাত না করায় তাঁর চুক্তি বাতিলে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেয়, দেখি।’ এ ব্যাপারে ঠিকাদার আজাদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সমকাল তাঁর বক্তব্য পায়নি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, এক দিনে চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’

মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে। শিশুটির সুস্থতার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, শিশুটি আজ (বুধবার) চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে। তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ মিমি পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী।

সিএমএইচের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ সর্বাধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন মাগুরার আদালত।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ