সৌদি আরবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে রিয়াদ। আজ রোববার এক বিবৃতিতে সৌদি সরকার বলেছে, গাজায় ইসরায়েল ‘জাতিগত নির্মূল’সহ যেসব অপরাধ চালাচ্ছে, তা থেকে নজর সরানোর চেষ্টা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

বিবৃতিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সৌদি আরব এটা নিশ্চিত করছে যে নিজেদের ভূমিতে ফিলিস্তিনি মানুষের অধিকার রয়েছে। আর তাঁরা এখানে কোনো অনুপ্রবেশকারী বা অভিবাসী নয় যে নিষ্ঠুর ইসরায়েলি দখলদারেরা ইচ্ছা হলেই তাঁদের তাড়িয়ে দিতে পারবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল ১৪–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘সৌদি আরবে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেন সৌদিরা। সেখানে তাঁদের অনেক জমি রয়েছে।’ তাঁর এই মন্তব্যের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে কাতার, জর্ডান, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইরাকসহ আরব দেশগুলো।

নেতানিয়াহুর আগে গাজা নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি বলেন, গাজায় সংঘাত শেষে উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে অন্য কোথাও ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়া হবে। ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছিলেন আরব নেতারা।

আরও পড়ুনফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট জায়গা সৌদি আরবে আছে: নেতানিয়াহুর নতুন তত্ত্ব০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে দেশটিতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। সেদিন থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৪৮ হাজর ১৮৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ। এ ছাড়া ইসরায়েল বাহিনীর বোমার আঘাতে গাজার প্রায় পুরোটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার প্রশংসা করে নেতানিয়াহু বললেন, ‘ইসরায়েল এটি বাস্তবায়ন করবে’৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনসোনালি পেজার দিলেন নেতানিয়াহু, ট্রাম্প কী দিলেন০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠন, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিতরা।

কমিটি গঠনে বৈষম্য হয়েছে দাবি করে সোমবার দিনভর ঢাকা-রাজশাহী-রংপুর মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। 

আন্দোলনে পদবঞ্চিতদের সমন্বয়ক মুন্তাসির মেহেদী হাসান বলেছেন, জেলা কমিটি গঠনের নামে বৈষম্যমূলক পকেট কমিটি করা হয়েছে। যে কারণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক প্রতিনিধিরা আন্দোলন করছেন। ইতোমধ্যে ঘোষিত কমিটি থেকে ৫৩ জন পদত্যাগ করেছেন। যার কপি দ্রুত কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পদ দেওয়া হয়েছে। অথচ জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখা অনেকেই কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নামে বৈষম্যের বিষয়টি আমরা অবগত করার চেষ্টা করেছি। কেউ তাতে গুরুত্ব না দেওয়ায় মহাসড়ক ব্লকেড করেছেন পদবঞ্চিতরা।

বিষয়টি নাকচ করে সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির নবনির্বাচিত আহ্বায়ক সজীব সরকার বলেন, আগামী ৬ মাসের জন্য জেলা, ৯টি উপজেলা ও থানার সমন্বয়ে জেলার আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বে সব উপজেলা, থানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের পর সম্মেলনের মাধ্যমে জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় ছাত্রদল ও শিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্র প্রতিনিধিরা একসঙ্গে আন্দোলন করেছি। সরকার পতনের পর সবাই যার যার সংগঠনে ফিরে গেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে দিতে চাইলে অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ নেই। যারা পদবঞ্চিত হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই দুই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তারাও কমিটিতে পদ পাননি। পাশাপাশি কিছু ছাত্র প্রতিনিধি বাদ পড়েছেন যারা উপজেলা, থানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটিগুলোতে স্থান পাবেন।

ব্লকেড প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। এরপর ঘণ্টাখানেক বিরতি দিয়ে আবারো অবরোধ শুরু করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে।

প্রসঙ্গত, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত ২৮৪ সদস্য বিশিষ্ট সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এতে সজীব সরকারকে আহ্বায়ক, মেহেদী হাসানকে সদস্য সচিব, ইকবাল হোসেন রিপনকে মুখ্য সংগঠক ও টি এম মুশফিক সাদকে মুখপাত্র করা হয়। এরপর থেকে এ কমিটি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ