Samakal:
2025-04-12@10:14:41 GMT

বিজেপির দিল্লি জয়ের বার্তা

Published: 9th, February 2025 GMT

বিজেপির দিল্লি জয়ের বার্তা

দিল্লি ভারতের একটি শহর। এখানে যে-ই বসুক, এর ক্ষমতা সীমিত। তবে শনিবার প্রকাশিত লোকসভা নির্বাচনের ফলে যেভাবে বিজেপির জয় আমরা দেখেছি, তাতে এ জয় জাতীয় রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। অপ্রত্যাশিত ধাক্কার পর গত বছর হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্র প্রদেশে বিজেপি ফিরে আসার অসাধারণ ক্ষমতা দেখিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এটি তার মিত্রদের ধরে রাখার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, শিবসেনার (ইউবিটি) একটি দল শিগগিরই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে যোগ দিতে পারে।

২৭ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রচেষ্টার পর বিজেপি দিল্লি দখল করেছে। প্রথমে শীলা দীক্ষিতের বিরুদ্ধে জয়লাভ, যখন তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তারপর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছ থেকে, যিনি শীলা দীক্ষিতকে ২০১৩ সালে পরাজিত করেছিলেন এবং ২০১৫ ও ২০২০ সালে দিল্লিতে ক্ষমতায় বসেন। এমনকি নরেন্দ্র মোদি ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে লোকসভার ৭/৭ আসনে জয়ী হয়েছিলেন। মানুষ ভারতের জন্য মোদি এবং দিল্লির জন্য কেজরিওয়ালকে চেয়েছিল। বর্তমানে সে পরিস্থিতি বদলে গেছে। দিল্লির ফলাফল ইঙ্গিত দেয়, ২০২৪ সালে কিছু প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মোদির জনপ্রিয়তা অটুট রয়েছে। আম আদমি পার্টিপ্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ওপর ভার্চুয়াল গণভোটে যে আস্থা দেখা গিয়েছিল, তারই ফল বিজেপির বিজয়।

এটি তখনই হলো, যখন ট্রাম্পবাদ ভারতসহ অনেক দেশের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যেখানে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অবৈধ অভিবাসীদের শিকল বেঁধে ফিরিয়ে দেওয়া শুরু হয়েছে। দিল্লিতে বিজেপি দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে– ৮ থেকে ৪৮; যেখানে তাদের ভোট প্রায় ৭ শতাংশ বেড়েছে। আম আদমি পার্টি (এএপি) ১০ শতাংশ ভোট হারিয়েছে, যা পরিবর্তনের পাটাতনের পরিস্থিতি তুলে ধরে। স্পষ্টতই পার্টির পক্ষে কেবল মধ্যবিত্তের সমর্থন ছিল না, যারা এএপির প্রতি বিরাগভাজন হয়েছিল এবং বিজেপির দিকে মুখ ফিরিয়েছিল। 

এটিও দিল্লির জন্য একটি বড় প্রভাব ফেলতে বাধ্য। এটি কেবল একটি কসমোপলিটন কেন্দ্র নয়, বরং অভিবাসীদের একটি শহরও। পাঞ্জাবিরা দেশভাগের পর এখানে বসতি স্থাপন করেছিল এবং প্রাথমিক পর্যায়ে বিজেপির মূল ভিত্তি তৈরি করেছিল। পূর্বাঞ্চলের লোকজন (আজকের প্রায় ৩০ শতাংশ), যারা উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে এসেছে অথবা দলিতদের মধ্যে বল্মীকি কিংবা জাতের মতো বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেসব মহিলা বিগত দুটি নির্বাচনে এএপির পক্ষে জোরালোভাবে দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু এখন তারা সরে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিজেপির বয়ান হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের ব্যাপারে সঠিক পথে হাঁটতে সাহায্য করেছিল। দিল্লিতে মধ্যবিত্তরা এই যুক্তি খরিদ করেছে বলে মনে হচ্ছে, ‘বিনামূল্যে’ দরিদ্রদের জোগান দেওয়া হয়েছিল। অনেকে নিশ্চিত হয়েছিল, ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার তাদের জন্য উপকারী হবে। বিজেপির সাংগঠনিক প্রভাবের পাশাপাশি আরএসএস যেভাবে তার সমর্থন দিয়েছিল, তা দলটির জন্য কাজে লেগেছে। যেমন হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের কথা বলা যায়। 

আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে জড়িতরা ৫০ হাজার ‘ড্রয়িংরুম’ সভার কথা বলেছিল, যেগুলো আরএসএস কর্মীরা সমর্থন পেতে ছোট ছোট দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল। নির্বাচনের আগে কয়েক মাস ধরে কেজরিওয়াল ও তাঁর সহকর্মীকে জেলে রাখা হয়েছিল। এ সময় এজেন্সিগুলো কেজরিওয়াল সরকারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তৎপর ছিল, যখন তার প্রতি স্বাভাবিক সহানুভূতি আসার কথা, সেটি ছিল অনুপস্থিত।

ভারতের বেশির ভাগ আঞ্চলিক দল দিল্লিতে কেজরিওয়ালকে সমর্থন করেছিল; কংগ্রেসকে নয়। কারণ, দুটি দল আলাদাভাবে লড়াই করেছিল। এটা সম্ভব যে, এএপি ও কংগ্রেস উভয়ই গত দুটি নির্বাচনে ‘শূন্য’ আসনের রাজকীয় সংখ্যার বাইরে যেতে পারেনি। তারা একসঙ্গে লড়াই করলে আরও ভালো ফল করতে পারত। স্পষ্টতই বিরোধী দলগুলো প্রাসঙ্গিক থাকতে চাইলে ভারত জোটকে নতুন করে সাজাতে হবে। কংগ্রেসের ভোট ব্যাংক প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে ৬.

৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্তত তারা ৬০টি আসনে জামানত হারিয়েছে, কিন্তু ১৩টি আসনে আম আদমি পার্টির পরাজয়ের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে।
আম আদমি পার্টির নেতারা এখন সব আসন ও আস্থা ফিরে পেতে রাস্তায় কাজ করার জন্য ডাক দিয়ে আগামী দিনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেবেন।  

নীরজা চৌধুরী: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর; দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য কর ছ ল ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির আওতায় সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৩টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এটি বিকেল ৪টার দিকে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

আরো পড়ুন:

লাল-সবুজের জার্সিতে খেলবেন সামিত, জানিয়ে দিলেন আনুষ্ঠানিক সম্মতি

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: বেনাপোল বন্দর থেকে ফেরত গেছে ৪ ট্রাক

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুল মালেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, হেফাজতে ইসলাম, আহলে হাদীস, হাইয়াতুল উলইয়া, বেফাকুল মাদারিস, দারুন্নাজাত মাদরাসা, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন। 

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামারা।

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার প্রতিবাদে শনিবার (১২ এপ্রিল) ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ফিলিস্তিনের পতাকা ও ফিলিস্তিনের মুক্তির স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ যেন এক টুকরো ফিলিস্তিন! নারী-পুরুষ-শিশুদের পদচারণায় সোহরাওয়াদী উদ্যানসহ এর আশপাশের এলাকায় তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। 

সকাল থেকে রাজধানীর শনিরআখড়া-যাত্রবাড়ী রুট, টঙ্গী, উত্তরা, কেরাণীগঞ্জ, গাবতলী, শ্যামলী দিয়ে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে এবং মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় আসতে শুরু করেন লাখো মানুষ। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর মোড় থেকে নারী-পুরুষের স্রোত যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে।

মিছিলের সম্মুখে কাপড়ে মোড়ানো কয়েকটি লাশের প্রতিকৃতি নিয়ে তারা সোহরাওয়ার্দীর অভিমুখে যাচ্ছিলেন। সে সময় তাদের ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন; ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলের পণ্য, বয়কট বয়কট; ট্রাম্পের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে; ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, ইসরাইলের আস্তানা; নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবরসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে। রাজধানীর শাহবাগে যেন জনসমুদ্র। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত গোটা শাহবাগ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ