আলু সংরক্ষণ ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে টানা কর্মসূচি চলছে
Published: 9th, February 2025 GMT
জয়পুরহাটে ১৯টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণ ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে টানা কয়েক দিন ধরে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদান করে চলছেন চাষি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। রোববার দুপুরেও শহরের পাঁচুর মোড় জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন করেছে জেলা কৃষক দল। গত বছরের দামে আলু সংরক্ষণের দাবিতে এসব কর্মসূচি পালন করলেও হিমাগার মালিকরা অনড়।
জেলা কৃষক দলের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাজারে আলুর দাম কম, তার ওপর হিমাগারের ভাড়া অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে দেওয়ায় কৃষকরা সংকটে পড়েছেন। প্রান্তিক চাষিরা ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বেন। ভাড়া না কমালে উৎপাদনবিমুখ হয়ে পড়বেন কৃষকরা।
তারা বলেন, এ বছর আলু উৎপাদনের খরচ কয়েক গুণ বেড়েছে। বাড়তি দামে বীজ, সার, কীটনাশক কিনে উৎপাদান করতে গিয়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি খরচ পড়েছে। কম দামে আলু বিক্রি করে তারা লোকসানের মুখে পড়েছে। তার ওপর হিমাগারের ভাড়া বাড়ায় কৃষকদের জন্য আলু সংরক্ষণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
অবিলম্বে ভাড়া বাড়ার ঘোষণা প্রত্যাহার করা না হলে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা। মানববন্ধনের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাছুদ রানা প্রধান, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক সেলিম রেজা ডিউক, সদস্য সচিব মনজুরুল মওলা পলাশ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামস মতিন, কৃষক বাবলু মিয়া, রতন কুমার প্রমুখ।
স্থানীয় ভোক্তা, ব্যবসায়ী ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলু সংরক্ষণের ভাড়া ৭ টাকার স্থলে ৮ টাকা কেজি দরে নিলে খাবার ও বীজ আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে। হিমাগারের ভাড়া যত বাড়বে, ব্যবসায়ীরা তত বেপরোয়া হয়ে উঠবেন। প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপরও।
আলুচাষি বাবলু মিয়া বলেন, হিমাগারের ভাড়া বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদি তাদের সঙ্গে মালিকরা একমত না হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দাবি আদায় করা হবে।
বগুড়া জেলা কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বর্তমানে উচ্চ ঋণের সুদহার, বিদ্যুৎ বিল, মজুরিসহ অন্যান্য খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে ভাড়া কমানোর কোনো সুযোগ নেই। এই ভাড়া যৌক্তিক কিনা, তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যাচাই করতে পারে।
জয়পুরহাট কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, এবার বিদ্যুতের দাম বাড়েনি, অন্য কোনো সমস্যাও নেই, তার পরও এক টাকা বাড়ানোয় পুরো চাপ পড়বে ভোক্তাদের ওপর।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক দল র
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক কাউন্সিলর বাদলের সহচর হত্যা মামলার আসামি সাজুর হাত থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন
শামীম ওসমানের ঘনিষ্টজন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক অহ্বায়ক ও নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড এর সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের অন্যতম সহচর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি শাহজাহান সাজুর বিরুদ্ধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে ভূক্তভোগীরা।
আওয়ামী সরকারের শাসনামলে শাহজালাল বাদলের ছত্রছায়ায় সাজু “সাজু ডেভেলপার” নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে শামীম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে ওই জমি দখল করে নেয়।
এরপর থেকে ওই জমি প্লট করে বিক্রি করে আসছে। আওয়ামী শাসনামলের অবসান ঘটলেও থেমে নেই বাদলের সহচর সাজুর জমি বিক্রির কার্যত্রম।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর সাজু বিএনপির অসাধু নেতকর্মীদের নিয়ে এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এর প্রতিবাদে বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় বৃহত্তর সানারপাড় এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্যে ভূক্তভোগী মো. ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের মালিকানা জমিকে রাস্তা হিসেবে চলমান বিএস রেকর্ড করতে নিষেধ করায় সাজু ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের লোকজন ৫ জন জমির মালিককে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।
পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে।
আওয়ামী লীগের দোসর জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি শাহজাহান সাজুর পালিত ক্যাডররা এখনো তৎপর থাকার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও তাদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।
স্থানীয় বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজায় সানারপাড় এলাকায় ১১১ নং দাগে ৩৮৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়। এ জমি ফেলে রেখে ওইসব হিন্দু সম্প্রদায় ১৯৪৭ সালে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যায়।
তখন থেকেই এসব জমি পরিত্যক্ত ছিল। তার মধ্যে ৭২ শতাংশ সরকার খাস হিসেবে রেকর্ডভূক্ত করেন। বাকি ৩ একর ১৪ শতাংশ জমি ২০০৫ সাল থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি দখল শুরু করেন।
পরে তাদের কাছ থেকে ২০১০ সালের দিকে বিডিডিএল নামক একটি কোম্পানি এ জমি নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয়। কিন্তু কাগজপত্র ঠিক না থাকায় দখলে টিকতে না পেরে ২০২২ সালে নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদলের ঘনিষ্ট সহচর শাহজাহান সাজুর মালিকানাধিন সাজু ডেভেলপারের কাছে হস্তান্তর করেন।
পরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসস সদস্য শামীম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে বাদল ও সাজু বিশাল বাহিনী নিয়ে কমপক্ষে শতাধিক বসতীকে উচ্ছেদ করে জমির দখল নিয়ে নেয়।
যারা জমির দখল ছাড়তে রাজি ছিলনা তাদের ধরে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে জমিতে বালু ভরাট করে প্লট তৈরি করে বিক্রি শুরু করে। যা এখনো চলমান রয়েছে।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা ভুমিদস্যু সাজুর হাত থেকে রক্ষা পেতে আইনশৃংখলাবাহিনী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্মতাগণের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধনে ভূক্তভোগীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আনোয়ারা বেগম, দ্বীন ইসলাম, আল ইসলাম, ভানু বেগম, ঝুমা আক্তারসহ প্রমুখ।