যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন ও খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি। ১৭৫৪ সালে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় রাজা জর্জের হাত ধরে এই ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু। এটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে ২০টি স্কুল এবং অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের আওতায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট ও প্রফেশনাল ডিগ্রি অর্জনের জন্য রয়েছে বিস্তৃত সুযোগ। স্কুলগুলোর মধ্যে কলাম্বিয়া বিজনেস স্কুল, কলাম্বিয়া ক্লাইমেট স্কুল, কলাম্বিয়া কলেজ, কলাম্বিয়া জার্নালিজম স্কুল, কলাম্বিয়া ল স্কুল, ডেন্টাল মেডিসিন, কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড সায়েন্স, স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স, স্কুল অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস, ভ্যাগেলোস কলেজ অব প্রফেশনাল স্টাডিজ বিশেষভাবে পরিচিত। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মেজর হিসেবে মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও সাংবাদিকতা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে কম্পিউটার বিজ্ঞান, অর্থনীতি,  ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, স্নায়ুবিজ্ঞান,  সমাজবিজ্ঞান, গণিত, ফলিত গণিত, জীববিদ্যা, জীববিজ্ঞান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, পূর্ব এশিয়ান স্টাডিজ, শিল্প ইতিহাস, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, বায়োইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিসংখ্যান, নৃবিজ্ঞান, রাসায়নিক প্রকৌশল, ভূতত্ত্ব, পৃথিবী বিজ্ঞান, অর্থনীতি, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পারেটিভ লিটারেচার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, আমেরিকান বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অধ্যয়ন, জাতিগত অধ্যয়ন, পদার্থবিদ্যা, গণিত এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান, রসায়ন, প্রকৌশল পদার্থবিদ্যা, ফলিত পদার্থবিদ্যা ছাড়াও আরও অনেক বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে মানসম্মত একাডেমিক প্রোগ্রাম, উদ্ভাবনী গবেষণা এবং বিখ্যাত অনুষদের জন্য শিক্ষার্থীরা তাদের লক্ষ্যে যেমন সহজে পৌঁছাতে পারেন, তেমনি বিশ্ব নেতৃত্বেও জায়গা করে নিতে পারেন। এখানে রয়েছে ৫০০টিরও বেশি ছাত্র সংগঠন ও ক্লাব; যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বৈচিত্র্যময় কমিউনিটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেন্টরশিপ, ইন্টার্নশিপ বা চাকরিতে নিয়োগের সুবিধা পাওয়া যায়। সেন্টার ফর ক্যারিয়ার এডুকেশন শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে প্রবেশ এবং তাদের কর্মজীবনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার জন্য ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, কর্মশালা এবং জব ফেয়ার সার্ভিস দেয়। ক্যাম্পাসটি নিউইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন কাজের পাশাপাশি অফুরন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও বিনোদনের সুযোগ পান। এ ছাড়া বিশ্বমানের জাদুঘর, গ্যালারি, থিয়েটার, কনসার্ট উপভোগের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা দেয়। 
বিস্তারিত জানতে–https://www.

columbia.edu/ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট কল ম ব য র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

এনআইডিতে বয়স ১১৬ বছর, ইনি কি হচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নারী?

মৌলভীবাজারে সন্ধান মিলেছে ১১৬ বয়সী রুখমিনিয়া পাশী নামে এক নারীর। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, তার বয়স এখন ১১৬ বছর ৪ মাস ১ দিন। তবে তার থেকে বেশি বয়স্ক নারীর নাম সিসটার ইনা ক্যানাবারো লুকাস। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাজিলের এই নারীর বয়স ১১৬ বছর ২১০ দিন।  

জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্ষেপে এনআইডি কার্ড হলো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক নথি, যা বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া যেকোনো মানুষ পাওয়ার অধিকারী। তবে এই পরিচয়পত্রে অনেকসময় বড় ধরনের ভুল ধরা পড়ে। বয়স ও নামের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুল পাওয়া যায়। বিশেষ করে অনেক সময় জাতীয় পরিচয়পত্রে যার বয়স ৩০ তাকে ৬০ বছর বয়সী হিসেবে দেখানো হয়েছে। অনেকক্ষেত্রে মায়ের চেয়ে সন্তানের বয়স বেশি দেখা গেছে জাতীয় পরিচয়পত্রে। স্বজনদের দাবি, রুখমিনিয়ার বয়স জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকই আছে।   

রুখমিনিয়ার বাড়ি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের রাজনগর চা বাগানের রাউবাড়ি এলাকায়। 

রাউবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রায় ২০০ বছর আগে রুখমিনিয়া পাশীর পূর্ব পুরুষ ভারতের উত্তর প্রদেশের বিহার থেকে মৌলভীবাজার সদর ইউনিয়নের গিয়াসনগর চা বাগানে আসেন। তারা সেখানে চা শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। রুখমিনিয়ার বাবা হরিদেও সেখানেই থাকতেন। রাজনগর উপজেলার একটি চা বাগানের শ্রমিক ভগবান দাস পাশীর সঙ্গে রুখমিনিয়ার বিয়ে হয়। এরপর তারা রাজনগর চা বাগানের রাউবাড়ি এলাকায় বসবাস করতে শুরু করেন।

জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায়, রুখমিনিয়ার জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ৯ অক্টোবর ১৯০৮। স্বামীর নাম ভগবান পাশী। মায়ের নাম ধনেশ্বরী পাশী। ভোটার আইডি নম্বর ৫৮১৮০৭৩৪০৩৮৬৩। জাতীয় পরিচয়পত্রের হিসেবে তার বয়স এখন ১১৬ বছর ৪ মাস ১ দিন।

রুখমিনিয়া বাংলা ভাষায় ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। বয়সের ভাড়ে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন। কানেও কম শোনেন। কথা হলে, তিনি নিজস্ব ভাষায় জানান, ব্রিটিশ আমলে চা চাষের জন্য তার বাপ-দাদারা এখানে আসেন। অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে তার। বিয়ের পর সোনাতুলা (রাজনগরের সাবেক নাম) চা বাগানে পাতা তোলার কাজ করেছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খবরও শুনেছেন তিনি।

রুখমিনিয়ার ছেলে হেমন্ত পাশীর বয়স এখন ৬২ বছর। তিনি বলেন, ‍“আমার মার অনেক বয়স হয়েছে। তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ আছেন। বার্ধক‍্যজনিত কারণে অনেক ভেঙে পড়েছেন। আমরা ঠিকমতো তার সেবা যত্ন করি। আমার মায়ের বয়স ১১৬ বছর এখন।”

রাজনগর উপজেলার টেংরা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উমেষ যাদব বলেন, “ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে গিয়ে আমি প্রথমে কর্তন ফরম বের করি তার নাম কাটার জন্য। পরে দেখলাম বেঁচে আছেন তিনি। বয়স্ক এই নারীকে দেখে আমি অবাক হয়েছি। দেখেই অনুমান করা যায় রুখমিনিয়া অতি প্রবীণ একজন মানুষ। গিনেস বুকে তার নাম (রুখমিনিয়া পাশী) পাঠানো উচিত। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি চা বাগান কর্তৃপক্ষও এগিয়ে আসতে পারেন।”

রাজনগর চা বাগানের রাউবাড়ি এলাকার ৭৫ বছর বয়সী কপিল পাশি বলেন, “আমরা ছোট থেকেই রুখমিনিয়াকে বয়স্ক নারী হিসেবে দেখছি। তার বয়স কম হলেও ১১২ বছর হবে। অনেক সময় জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স ও নাম ভুল থাকে। যাছাই করলে বিষয়টি জানা যাবে।”

একই এলাকার ৭০ বয়সী নারী শ্রীপাতি পাশি বলেন, “ব্রিটিশ আমলে রুখমিনিয়ার বিয়ে হয়েছে। শারীরিক গঠন ভালো থাকায় তিনি এখনো বেঁচে আছেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তার অসংখ্য নাতি-নাতনীও আছে।”

টেংরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাম দুলারী নুনিয়া বলেন, “রুখমিনিয়াকে দেখতে অনেক বয়স্ক মনে হয়। এলাকার সবাই তাকে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক হিসেবেই জানেন।”

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, “আমরা তদন্ত করে বিষয়টি দেখব। তার (রুখমিনিয়া) কাছে ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া আর কোনো ডকুমেন্ট (নথি) নেই। কোনো শিক্ষাগত সনদ না থাকায় বিষয়টি যাচাই বাচাই করে দেখতে হবে। যদি তার স্বজনরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে সঠিক বয়স নির্ণয় করেন, তাহলে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানাব।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ