টিসিবির কার্ড মিলবে ওয়ার্ড এবং ইউএনও কার্যালয়ে
Published: 9th, February 2025 GMT
সরকারি সংস্থা টিসিবির সাশ্রয়ী দামের পণ্য পেতে ভোক্তা সাধারণকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড সংক্রান্ত সব বিষয়ে নিজ নিজ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং থানা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে টিসিবি। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রদান, সচলকরণ ও পণ্য বিক্রি কার্যক্রম মনিটরিং চলছে। ইতোমধ্যে ৫৭ লাখ স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করে জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ৬ লাখ কার্ড প্রিন্টিংয়ের শেষ পর্যায়ে রয়েছে; যা চলতি মাসেই পাঠানো হবে। কার্ড তৈরির জন্য ইতোমধ্যে ১৫ লাখ ডেটা এনআইডি ইন্টিগ্রেশন হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এসব কার্ড বিনামূল্যে ভোক্তাদের দেওয়া হচ্ছে।
টিসিবি জানিয়েছে, কার্ড তৈরির জন্য উপকারভোগী বাছাই, ডেটা প্রদান, ভোক্তার কাছে কার্ড পৌঁছানো, কার্ড সচল করা এবং পণ্য বিক্রি মনিটরিংয়ের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের। টিসিবির দায়িত্ব আমদানি ও স্থানীয় ক্রয়ের মাধ্যমে পণ্য সংগ্রহ করে ডিলারদের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া। ইতোমধ্যে স্মার্ট কার্ডধারীদের জন্য ডিলারদের পণ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সমকালকে বলেন, অনেকেই টিসিবিতে আসছেন কার্ডের জন্য। কিন্তু কার্ড বিতরণের দায়িত্ব ওয়ার্ড কার্যালয় বা ইউএনও অফিসের। ক্রেতাদের এসব অফিসেই যোগাযোগ করে কার্ড নিতে হবে।
টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং এর বাইরে গ্রাম পর্যায়ে ইউএনও অফিস থেকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়। কিন্তু ভোক্তারা পণ্য কেনার কার্ড নেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত টিসিবিতে যোগাযোগ করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তাদের এ পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত সরকারের আমলে দেশব্যাপী এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, এসব কার্ডের মধ্যে ৪৩ লাখই ভুয়া। বাকি ৫৭ লাখ কার্ড যাচাই-বাছাই করলে আরও অন্তত ২৪ থেকে ২৫ লাখ ভুয়া কার্ড পাওয়া যাবে।
টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, যারা সচ্ছল; কিন্তু টিসিবির কার্ডের তালিকায় ছিলেন, তাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। একই পরিবারে একাধিক কার্ডধারী থাকলে, তাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার কার্ডে যাদের নাম-ঠিকানায় ভুল ছিল, নতুন স্মার্ট কার্ডের তালিকা থেকে তারাও বাদ পড়েছেন। পুরোনো কাগুজে কার্ডগুলোও বাতিল করা হয়েছে। নতুন স্মার্ট কার্ডেই টিসিবির বিপণন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মচারীকে পিটিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বললেন, ‘রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি’
দিনাজপুরের বিরামপুরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলার সময় বিএনপির নেতাদের সামনেই উপজেলা পরিষদের কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল নামের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। তারা বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার দুপুরে দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্ত মঞ্চ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল বলেছেন, ‘আমি রাগ কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছি। খাবার বিতরণের অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অপমান করায় এমনটি হয়েছে। তবে আমার ভুল হয়েছে।’
আহতরা হলেন, উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক, আবু হোসেন, ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম ওরফে রনি। তাদের মধ্যে এমদাদুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার সময় বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হাজার লোকের আয়োজন ছিল। সেখানে এমন ঘটনা ঠিক হয়নি। আহত তিন কর্মচারীকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, এ ঘটনায় ইউএনওর কার্যালয়ের কর্মচারীর একটি অভিযোগ পেয়েছি।
জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সোমবার উপজেলা পরিষদের ভেতর মুক্তমঞ্চে চলছিল। অনুষ্ঠানের ফাঁকে উপজেলা পরিষদ ও ইউএনও অফিসের কয়েকজন কর্মচারী আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য পান্তা, মাছ ,ভর্তা ও পানি আপ্যয়নের ব্যবস্থা করছিলেন। এ সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল ও তার সহযোগীরা খাবার নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনেই তারা বেধড়ক মারপিট করে তিনজনকে আহত করেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনওর কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি বলেন, সুন্দর পরিবেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। এর ফাঁকে অতিথিদের জন্য পান্তা উৎসব শুরু করার জন্য আমরা কয়েকজন নিয়োজিত ছিলাম। আমাদের কাজের ফাঁকে বিএনপির পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল নিজেই খাবার নিতে শুরু করে। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের পিটিয়ে আহত করে।
অনুষ্ঠানের সামনের অংশে আমরা ছিলাম। ঘটনা আমাদের থেকে অনেক দূরে উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, এমন একটি অনুষ্ঠানে এই আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন আচরণের পর আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে এসেছি।
অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে রয়েছি, ওরা পৌর কমিটির। তারপরও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।