ভোক্তাদের সুরক্ষায় কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার সুপারিশ
Published: 9th, February 2025 GMT
খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে এক সেমিনারে ভোক্তাদের সুরক্ষায় একটি কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ এসেছে। এতে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে একটি একীভূত নিয়ন্ত্রক কাঠামোর প্রয়োজনীতা রয়েছে।
গত শনিবার বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিবিএমএ) ঢাকার ইস্কাটনে বিআইআইএসএস মিলনায়তনে ‘খাদ্য নিরাপত্তা: নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় ও বাস্তবায়নে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এ সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারে সরকারি সংস্থা, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এবং খাদ্যশিল্পের প্রধান স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করেন। তারা খাদ্য নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় ও বাস্তবায়নে সংস্কারের জরুরি প্রয়োজন নিয়ে আলোচনা করেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) পরিচালক মনজুর মোর্শেদ আহমেদ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিভিন্ন ঘাটতি তুলে ধরেন। তিনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগের জন্য একটি সুগঠিত কাঠামোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন প্যানেল আলোচনায় নেতৃত্ব দেন। তিনি খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণের প্রতিটি স্তরে আন্তঃসংস্থার সমন্বয় জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি একটি একীভূত নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং ভোক্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার আহ্বান জানান।
সেমিনারের সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ শামীম উদ্দিন বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা আইনকে আরও শক্তিশালী করতে এবং স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে তাদের সংগঠন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। সেমিনারটি বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা সংস্কারের জরুরি প্রয়োজনকে সফলভাবে তুলে ধরেছে এবং ভবিষ্যৎ নীতিগত উন্নতির জন্য একটি ভিত্তি স্থাপন করবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সেমিনারে খাদ্য ও পানীয় শিল্পের ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা, নীতিনির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় বর্তমান খাদ্য নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ, নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এবং খাদ্যশিল্পের ভূমিকা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত প্রকাশ করেন এবং সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে: সাইফুল হক
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, গত দেড় দশকে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅ্যান্দোলনের প্রধান বিষয় ছিল ভোটের অধিকারসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি। গণঅভ্যুত্থানের পর এখন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও যদি আবার ভোট বা নির্বাচনের দাবি তুলতে হয় সেটা বিব্রতকর। গণহত্যার বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের বিপরীতে দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ অপরাধের বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের কাছে সুষ্পষ্ট অঙ্গীকার রয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা ও অস্পষ্টতা অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার কথা নয়। বুধবার বগুড়া শহরের দত্তপাড়া মিলনায়তনে পার্টির জেলা প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের ওপর আস্থা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা রাজনৈতিক দল ও জনগণকে আশ্বস্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। সাইফুল হক বলেন, গণতান্ত্রিক সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের এক ধরনের অনাকাঙ্খিত দূরত্বও তৈরি হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের যেহেতু নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার কথা নয়, সে কারণে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত রাখারও অবকাশ নেই।
সভায় বক্তারা হঠাৎ সয়াবিন তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে বলেন, এটি সাধারণ মানুষের ওপর নতুন অত্যাচারের সামিল। অবিলম্বে তারা মূল্যবৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানান।
আবদুর রউফের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, আনছার আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফিরোজ আহমেদ, পার্টির টাঙ্গাইল জেলার নেতা মাহমুদুল হাসান পিপলু, গাইবান্ধা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, নীলফামারী জেলার নেতা অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন, মোশাররফ হোসেন নান্নু, পার্টির বগুড়ার সংগঠক সাইফুল ইসলাম, মনি সরকার প্রমুখ।