লেখক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেছেন, একটি বই একটি আন্দোলন। বই সমাজকে নতুন ভাবনা দেয়। যে জাতি বই পড়বে তারা সামনে এগোতে থাকবে। অন্যদিকে বই বিমুখ জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমাদের অনুষ্ঠানে, আনন্দে প্রিয়জনকে বই দেওয়ার রীতি আবার শুরু করতে হবে।
রোববার অমর একুশে বইমেলার নবম দিনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ লেখক বলছি মঞ্চে দেশের সমাজ, সাহিত্য, শিল্প, রাজনীতি নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা আসাদ আহমেদ।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার জন্ম ১৯৫২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের বিভাগদীতে। সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার একাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিকল্প চিন্তা বিকল্প রাজনীতি, উপেক্ষিত মুক্তিযুদ্ধ উপেক্ষিত জনগণ, ভাষার লড়াই, মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুর, রাজনীতির কালাকাল, স্লোগানে স্লোগানে রাজনীতি, প্রশ্নবিদ্ধ রাজনীতি ও সমকালীন সমাজ ইত্যাদি। তিনি বর্তমানে সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক।
আবু সাঈদ খান বলেন, বইমেলা আমাদের ঐতিহ্য। বইমেলা যেন কেবল উৎসব না হয়, এটি যেন বইয়ের উৎসব হয়। আমরা যেন বই কিনি এবং প্রয়োজনীয় বই কিনি। যে বই আমাদের চোখ-কান খুলে দেবে, আলোর দিশা দেবে—এ বই যেন কিনি।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, চব্বিশে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো স্বৈরশাসক ক্ষমতা জোর করে ধরে রাখতে পারে না। হয়ত দুইবছর পারে, পাঁচ বছর পারে, কিংবা দশ-পনেরো বছর পারে। একসময় তাকে পরাজিত হতে হয়।’
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকেও পরাজিত হতে হয়েছে। তিনি পালিয়ে দেশ ত্যাগ করেছেন। জনগণই দেশের মালিক। জনগণই শক্তি। জনশক্তির কাছে স্বৈরশাসক পরাজিত হয়। এবার সেটা আবার প্রমাণিত হয়েছে।
চব্বিশের অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন আবু সাঈদ খান। তিনি বলেন, কিছু অনিয়ম-ব্যর্থতা আছে; সরকার সঠিক লক্ষ্যে এগোতে পারছে না। সরকারের কাছে মানুষের যে আশা ছিল সেটি পূরণ করতে পারছে না। এটার কারণ অনভিজ্ঞতা। দেশ পরিচালনা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। অরাজনৈতিকরা সবসময় সফল হয় না। তবে এ সরকার আন্দোলনের ফসল। তারা গণতন্ত্রের যাত্রাটা নিশ্চিত করতে না পারলে সেটা জাতির ব্যর্থতা। তাই আশা বুকে রাখতে চাই।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণহত্যার মামলায় দুই পুলিশসহ আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার অভিযোগে হওয়া মামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া একজন পুলিশ কনস্টেবলকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) জুলাই গণহত্যার মামলায় মিরপুর, রামপুরা ও উত্তরার ঘটনায় এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত সবচেয়ে বেশি নৃশংসতার ঘটনা সংক্রান্ত কয়েকটি মামলার তদন্ত এ মাসেই শেষ হচ্ছে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন জানায়, এখন পর্যন্ত ১৮ মামলায় ১১৫ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫২ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ৪৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ৯ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। মোট আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৩৫ জন।
রোববার এসব মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানতে চান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানান, এ মাসেই কয়েকটি মামলার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ জানান, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় মিরপুর, রামপুরা, উত্তরার ঘটনায় নতুন করে ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ২ জন পুলিশ সদস্য এবং ৫ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
এছাড়া, ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুলে নির্বিচারে গুলির সঙ্গে জড়িত পুলিশ কনস্টেবল সুজনকে ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতিও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এম জি