ব্যবসায় সম্প্রসারণের গতি গত জানুয়ারিতে কিছুটা বেড়েছে। জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তৎপরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সংকোচনের ধারায় চলে গিয়েছিল। অক্টোবরে তা আবার সম্প্রসারণের ধারায় ফিরে আসে। নভেম্বরে এই গতি বাড়লেও ডিসেম্বরে ব্যবসা সম্প্রসারণের গতি শ্লথ হয়ে যায়। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে গতি কিছুটা ফিরেছে।

পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বা পিএমআইয়ের সার্বিক মান জানুয়ারিতে দশমিক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬৫ দশমিক ৭ পয়েন্ট হয়েছে। ডিসেম্বরে এই মান ছিল ৬১ দশমিক ৭ পয়েন্ট। অর্থনীতির প্রধান খাত কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবা খাতের ৪০০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচক তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাঁচামাল ক্রয়, পণ্যের ক্রয়াদেশ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হয়। সূচকের মান ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং ৫০-এর নিচে হলে সংকোচন বোঝায়। আর মান ৫০ থাকলে বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট খাতে ওই মাসে কোনো পরিবর্তন হয়নি। গত জুলাইয়ে একধাক্কায় পিএমআই মান ৩৬ দশমিক ৯ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। আগস্টে তা কিছুটা বেড়ে ৪৯ দশমিক ৭ পয়েন্ট হয়। আর অক্টোবরে এসে ৫৫ দশমিক ৭ পয়েন্টে ওঠে।

ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের শতবর্ষের পুরোনো সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ এক বছর ধরে যৌথভাবে পিএমআই প্রণয়ন করছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচকটি প্রণয়নে সহযোগিতা করছে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কার্যালয় (এফসিডিও) ও সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (এসআইপিএমএম)।

সূচক পরিমাপে চারটি খাত বিবেচনায় নেওয়া হয়। তার মধ্যে জানুয়ারিতে পণ্য উৎপাদন গতি কমলেও কৃষি ব্যবসা, নির্মাণ ও সেবা খাতের ব্যবসা সম্প্রসারণে গতি কিছুটা বেড়েছে। তাতে সামগ্রিকভাবে পিএমআই মানও বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।

পিএমআই প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃষি ব্যবসায় পিএমআই মান গত মাসে দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৬ পয়েন্টে, ডিসেম্বরে যা ছিল ৫২ দশমিক ৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ ১ মাসের ব্যবধানে কৃষি ব্যবসার সূচকের মান ৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। এ ছাড়া ডিসেম্বরে সেবা খাতের সূচকের মান ৬ দশমিক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬৬ দশমিক ৩ পয়েন্ট হয়েছে, ডিসেম্বরে যা ছিল ৫৯ দশমিক ৯ পয়েন্ট। আর নির্মাণ খাতে অস্থিরতা থাকলেও এই খাতের সূচকের মান বেড়ে ৬৩ পয়েন্ট হয়েছে। ডিসেম্বরে এই খাতের সূচকের মান ছিল ৬০ দশমিক ৪ পয়েন্ট। গত ফেব্রুয়ারিতে সেবা খাতে সূচক ছিল সর্বোচ্চ ৭৯ দশমিক ৬ পয়েন্ট। তার পর থেকেই উত্থান-পতনের মধ্যে রয়েছে খাতটি।

অন্যদিকে গত মাসে উৎপাদন খাতের সূচকের মান ১ দশমিক ৩ পয়েন্ট কমে ৬৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের মে মাসে এই খাতের সূচকের মান ছিল সর্বোচ্চ উচ্চতায়, ৭৬ দশমিক ৩ পয়েন্ট। নতুন ক্রয়াদেশ, নতুন রপ্তানি, কাঁচামাল আমদানি ও কারখানার উৎপাদনের কারণে গত মাসে উৎপাদন খাতের ব্যবসায় গতি ছিল। তবে জানুয়ারিতে এসে আবার ছন্দপতন ঘটেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ৩৩% বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের

নতুন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিনিয়োগের পরিবেশ ও সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে সংগঠনটি।

আজ সোমবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, করোনা মহামারি থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি ধারাবাহিক সংকটে জর্জরিত। এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার ‘সার্বিক বিনিয়োগ বাড়ানোর’ অঙ্গীকার করলেও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে শিল্প খাতকে চাপের মুখে ফেলেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) স্বীকার করেছে, তারা মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে কোনো স্পষ্ট অর্থনৈতিক বা রাজস্বভিত্তিক যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেনি। কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘রাজস্ব চাহিদা’ বিবেচনা না করে মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সরকারের প্রতিশ্রুত স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থী।

এ অবস্থায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—শিল্প খাতসহ সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সহনীয় মূল্যকাঠামো নির্ধারণ করা, জ্বালানি খাতের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং দুর্নীতি ও অপচয় রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া, ‘নতুন’ ও ‘পুরোনো’ শিল্পের মধ্যে বৈষম্য দূর করে একই মূল্যনীতি চালু করা এবং ভবিষ্যতে কোনো নীতি প্রণয়নের আগে সব স্তরের অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা ও তাদের সম্মতি নিশ্চিত করা।

আরও পড়ুননতুন শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ, পুরোনো শিল্পে বাড়তি ব্যবহারে নতুন দাম১৩ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ৩৩% বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের