২০২৩-২৪ অর্থবছরে চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.২২ শতাংশ
Published: 9th, February 2025 GMT
চূড়ান্ত হিসাবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমেছে। মাথাপিছু আয়ও কমেছে।
সাময়িক হিসাবে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। চূড়ান্ত হিসাবে তা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে ৪ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় কমে ২ হাজার ৭৩৮ ডলারে নেমে এসেছে। সাময়িক হিসাবে তা ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।
রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড.
আরো পড়ুন:
স্বর্ণের দাম বাড়ল, বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর
জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এল ২১৮ কোটি ডলার
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা হয়। সভায় অর্থ উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, “এই সভায় ছয় মাসের অর্থনীতি নিয়ে রিভিউ করা হয়েছে। এই মাসে কী অর্জন হয়েছে; সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
সভায় জানানো হয়, চূড়ান্ত হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। জিডিপি আকার দাঁড়িয়েছে ৪৫০ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছর শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে; শেষ হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ওই অর্থবছর শেষ হওয়ার সাত মাস নয় দিন পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, আকার ও মাথাপিছু আয়ের চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করল সরকার।
এতদিন এক অর্থ বছরে দুই বার জিডিপির তথ্য প্রকাশ করত সরকারের হিসাব গণনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের প্রথম ছয়-সাত মাসের তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে প্রথমে সাময়িক হিসাব দেওয়া হত। পরে পুরো বছরের তথ্য নিয়ে প্রকাশ করা হত জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব।
রবিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিবিএসের সেই চূড়ান্ত হিসাবই প্রকাশ করেছেন।
এর আগে গত বছরের ২১ মে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করে পরিসংখ্যান ব্যুরো। তাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হয়েছে বলে জানানো হয়।
অর্থবছরের সাত মাস (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি) পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকের ওই তথ্য প্রকাশ করেছিল বিবিএস।
সাময়িক হিসাবে ওই সময় বিবিএস জানিয়েছিল, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি আকার হয়েছে ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল তখনকার সরকার।চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর; শেষ হবে আগামী ৩০ জুন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের অর্জনের খাত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে বরাবরই দেখিয়ে আসছে।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা সর্বপ্রথম ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়; পরে সংশোধিত হিসাবে তা অবশ্য ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে আসে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।
পরের বছর কোভিড মহামারির ধাক্কায় তা ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে নেমে আসে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আবার বেড়ে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠেছিল। পরের বছর ৭ শতাংশ ছাড়ালেও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আবার ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে আসে।
এদিকে, গত ৬ জানুয়ারি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। তাতে দেখা যায়, এই প্রান্তিকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ৪ দশমিক ২৩ শতাংশীয় পয়েন্ট কম।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৬ দশমিক শূন্য চার শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল দেশে।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট র ৫ দশম ক ব ব এস বছর র সরক র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
অর্থবছরের প্রথমার্থে কঠিন সময় পার করেছে পুঁজিবাজার
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। এ সময়ে পুঁজিবাজারে টানা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ছিল এর মূল কারণ। বিশেষ করে, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা পুঁজিবাজারের পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। মুদ্রানীতিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
মুদ্রানীতি ঘোষণায় পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, বিএসইসির নবনিযুক্ত নেতৃত্ব বাজার স্থিতিশীল করতে বেশকিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ। পাশাপাশি, বাজার অস্থিরতার মূল কারণ খুঁজে বের করতে এবং বাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
অর্ধবার্ষিকে সোনালী পেপারের মুনাফা বেড়েছে
যমুনা অয়েলের এজিএমের তারিখ পরিবর্তন
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, শুধু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, পুঁজিবাজার পুনরুদ্ধারে বিএসইসি একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো— পুঁজিবাজারকে পুনরুজ্জীবিত করা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা এবং সুশাসন নিশ্চিত করা। এই বহুমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল আর্থিক পরিবেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।
উল্লিখিত সময়ে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উল্লেখযোগ্যভাবে ২.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা ২০২৪ সালের জুন মাসে ৫৩২৮ পয়েন্ট থেকে কমে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ৫২০৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া, গড় দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও ১০ শতাংশ কমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে পুরো সময়ে এটি ছিল ৬২২ কোটি টাকা। এই পতন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ হ্রাস এবং বাজারে আগ্রহ কমার ইঙ্গিত দেয়।
মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে ডেপুটি গভর্নরগণ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এনটি/রফিক