উদীচীর সম্মেলন ঘিরে ষড়যন্ত্রের কথা বললেন সভাপতি বদিউর রহমান
Published: 9th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্মেলন শেষে দুটি আলাদা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর এই সম্মেলন ঘিরে ষড়যন্ত্র হওয়ার কথা বলেছেন সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। আজ রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, উদীচীর জাতীয় সম্মেলন ঘিরে একটি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আগে থেকেই তাঁদের শঙ্কা ছিল। যার প্রতিফলন ঘটে সম্মেলনের বিষয়নির্বাচনী কমিটি গঠনের সময়। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় সংসদ সভায় এমন একটি বিষয়নির্বাচনী কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে উদীচীর কর্মীদের যথাযথ প্রতিফলন হয়নি বলে তাঁর বিশ্বাস। এর পরের ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন তিনি।
উদীচীর তিন দিনের সম্মেলনের শেষ দিন গতকাল শনিবার রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন হয়। সেখানে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন নিয়ে গোলযোগ হয়। পরে আলাদা করে দুটি কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। উভয় পক্ষ অধ্যাপক বদিউর রহমানকে সভাপতি ঘোষণা করে। সাধারণ সম্পাদক পদে এক পক্ষে জামসেদ আনোয়ার তপন এবং আরেক পক্ষে বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের নাম ঘোষণা করা হয়।
আজ এক বিবৃতিতে বদিউর রহমান বলেন, কাউন্সিলে বিষয়নির্বাচনী কমিটি নতুন কেন্দ্রীয় সংসদের প্রস্তাব উত্থাপন করে। এরপর অধিবেশনের সভাপতি (বিষয়নির্বাচনী কমিটির সভাপতি ও সংগঠনের সহসভাপতি হাবিবুল আলম) নতুন নামের প্রস্তাব এবং কেউ নাম প্রত্যাহার করতে চান কি না, তা জানতে চান। এ সময় প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদের জন্য নতুন অনেকগুলো নাম প্রস্তাব করা হয়। সব নাম যাচাই-বাছাই শেষে কেউ নাম প্রত্যাহার করতে চান কি না, তা জানানোর আহ্বান জানান সভাপতি। তখন অনেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। এমনকি বিষয়নির্বাচনী কমিটির প্রস্তাবিত প্যানেল থেকেও অনেকে নাম প্রত্যাহার করেন। ফলে বিষয়নির্বাচনী কমিটির প্যানেলটি পূর্ণতা হারায়। তা সত্ত্বেও সভাপতি বিষয়নির্বাচনী কমিটির খণ্ডিত প্যানেল পাস করানোর চেষ্টা চালান। এ অবস্থায় কাউন্সিল হাউস ক্রমেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সবাইকে শান্ত করার উদ্যোগ নেন বলে জানান বদিউর রহমান। তাঁর অভিযোগ, হাবিবুল আলমের কাছে মাইক্রোফোন দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি (হাবিবুল) খারাপ ব্যবহার করেন এবং তাঁকে মাইক দেননি। একবার কথা বলা শুরু করতে পারলেও সঙ্গে সঙ্গে হাবিবুল মাইক নিয়ে নেন বলেও তাঁর অভিযোগ। একপর্যায়ে সম্মেলনের দুজন স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তাঝুঁকির কথা বলে তাঁকে ভেতরে নিয়ে যান এবং কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বাইরে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘গেটের কাছে গেলে জামসেদ আনোয়ার তপন এসে আমার পাশে দাঁড়ান এবং বলেন, চলুন উদীচী অফিসে যাই।’ পরে একজন হৃষ্টপুষ্ট কর্মী রিকশায় তাঁকে প্রায় জড়িয়ে ধরে বসে উদীচী কার্যালয়ে নিয়ে আসেন বলে জানান বদিউর রহমান।
উদীচীর কার্যালয়ের ভেতরে একটি চেয়ারে বসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই জামসেদ আনোয়ার তপন এসে তাঁর বাঁ পাশে বসেন বলে জানান বদিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘এ সময় সামনে বসা ছিলেন হাবিবুল আলমসহ কয়েকজন। একপর্যায়ে হাবিবুল আলম আমাকে বলেন, “আমরা আপনাকে মাথায় তুলে রাখব।” বিষয়টি শুনে আমার হাসি পেয়েছে। এরপর আরিফ নুর, রহমান মুফিজা এসে জামসেদ আনোয়ার তপনকে বলতে থাকেন, “আমাদের নতুন কমিটির প্রথম সভা এখানেই করতে হবে।” জামসেদ আনোয়ার তপনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আমি নিজের অবস্থান বুঝে ফেলি এবং সভা না করার কথা বলি। বিষয়টি সামাল দেওয়ার জন্য তখন আমি নিজের অসুস্থতার কথা বলতে থাকি এবং হাবিবুল আলম ও জামসেদ আনোয়ার তপনকে কাছে টেনে আমার শারীরিক অবস্থার কথা বলে আমার কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় সংগঠনকে নিতে হবে বলে জানাই। আমি এ-ও বলি যে আমার মনে হয় এখনই হাসপাতালে যাওয়া উচিত, অ্যাম্বুলেন্স ডাকো। পরক্ষণেই বলি, আমি আগে বাসায় যাই, সেখানে প্রেশার ও সুগার মেপে প্রয়োজনে বাসা থেকেই হাসপাতালে যাব। তখন হাবিবুল আলম দয়াপরবশ হয়ে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে আমাকে বাসায় পৌঁছে দেন। বাসার পৌঁছে আমি মোবাইল বন্ধ করে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।’
ভোরে ঘুম ভাঙলে নিজের দায়বদ্ধতা ও কর্তব্যবোধ থেকে সারা দেশের উদীচীর কর্মীদের বিষয়গুলো জানানোর তাগিদ অনুভব করে এই বিবৃতি দিয়েছেন বলে জানান অধ্যাপক বদিউর রহমান।
এদিকে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বদিউর রহমানকে সভাপতি ও জামসেদ আনোয়ার তপনকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষণা করা উদীচীর নতুন কমিটিকে বৈধ বলে দাবি করেছে সংগঠনটির একটি পক্ষ। বিকেলে তোপখানা রোডে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি করেন উদীচীর সহসভাপতি হাবিবুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন।
সংবাদ সম্মেলনে জামসেদ আনোয়ার তপন দাবি করেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রতিনিধিরা কাউন্সিলে একটি বিষয়নির্বাচনী কমিটি গঠন করেন। সেই বিষয়নির্বাচনী কমিটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একটি খসড়া প্রস্তাব প্রতিনিধিদের সামনে উত্থাপন করে এবং তার ওপর নানা মত-দ্বিমত উঠে আসে। এরপর গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হাউসের চূড়ান্ত মত জানতে চাওয়া হয়। হাউসে উপস্থিত প্রতিনিধিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের বা সমর্থনের ভিত্তিতে অনুমোদন পায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি। এবার অধ্যাপক বদিউর রহমানকে সভাপতি ও জামসেদ আনোয়ার তপনকে সাধারণ সম্পাদক করে বিষয়নির্বাচনী কমিটি ৯১ সদস্যের যে খসড়া প্রস্তাব প্রতিনিধিদের সামনে উত্থাপন করেছিল, সেটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অনুমোদন পায়। এরপর সংগঠনের রীতি অনুযায়ী বিষয়নির্বাচনী কমিটির সভাপতি অধিবেশনে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে কমিটির নেতৃবৃন্দকে শপথবাক্য পাঠ করান। সেই শপথবাক্য পাঠ করে কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃত্ব হিসেবে তাঁরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
জামসেদ আনোয়ার আরও বলেন, নবনির্বাচিত এই কমিটির সদস্যরা যখন উদীচী কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন, তখন জানতে পারেন সম্মেলনকক্ষের বাইরে, প্রায় জনশূন্য মাঠে, হাউসে হেরে যাওয়া উদীচীর একটি ক্ষুদ্র অংশ (অমিত রঞ্জন দের অংশ) পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেছে। মাহমুদ সেলিম তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন।
বিষয়টিকে স্পষ্টত সাংগঠনিক বিধি লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক রীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন বলেও দাবি করেন জামসেদ আনোয়ার। তিনি বলেন, এটা রীতিমতো অপরাধ। এই কমিটির কোনো বৈধতা নেই। এই সংবাদ সম্মেলনে উদীচীর সভাপতি বদিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আরেক কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেছেন, উদীচীর সভাপতি বদিউর রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটাকে তিনি সমর্থন করেন। অমিত রঞ্জন বলেন, উদীচীর কাউন্সিলে প্রতিনিধিরা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। সংগঠনের গঠনতন্ত্র সেটাই বলে। সেই প্রতিনিধিদের মতামত না নিয়ে একটি কমিটি ঘোষণা করে এবং তার পক্ষে স্লোগান দিয়ে, রাস্তায় বেরিয়ে মিছিল করে চলে গেলে সেটা বৈধ কমিটি হয়ে যায় না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় কম ট হ ব ব ল আলম কম ট র স র রহম ন অবস থ স গঠন গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি মঙ্গলবার থেকে জেলা-মহানগরে সভা-সমাবেশ করবে
নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে সারা দেশের জেলা ও মহানগরে পর্যায়ক্রমে সভা-সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী মঙ্গলবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণার দাবিতে এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে এই কর্মসূচি হবে। তিনি আরও বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা এখন প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে। যারা ৫ আগস্টের পরিবর্তনকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি, এমন লোকদের চিহ্নিত করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন।
রিজভী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্ধৃত করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সব পদক্ষেপ সবার কাছে সাফল্য হিসেবে বিবেচিত না–ও হতে পারে। কিন্তু এই সরকারের ব্যর্থতা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির ব্যর্থতা হিসেবেই পরিগণিত হবে। এ কারণে বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল দেখতে চায়। কিন্তু সরকার নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না, এটিও ভাবার বিষয় রয়েছে। সরকারের ‘কর্ম–পরিকল্পনার রোডম্যাপে’ কম গুরুত্তপূর্ণ ইস্যু বাদ দিয়ে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
‘গাজীপুরের জাহাঙ্গীর মাস্টারপ্ল্যানারদের একজন’রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছে এবং ষড়যন্ত্রমূলক অডিও রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একের পর এক উসকানি প্রদান করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানিতে ইতিমধ্যে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সারা দেশে গুপ্ত হামলা, ঝটিকা মিছিল ও গণসংযোগ শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর নারকীয় আক্রমণ চালিয়েছে। ১৫ জনের বেশি গুরুতর জখম হয়েছেন।
পতিত সরকারের গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর ফ্যাসিস্টদের নিয়ে ভার্চ্যুয়ালি মিটিং করে বলেছেন, ‘যে শহরে আমরা দিনের বেলা ঘুরতে পারি না, সে শহরের কাউকে আমরা ঘুমাইতে দেব না।’ আওয়ামী লীগের নয়া প্রজেক্টের মাস্টারপ্ল্যানারদের একজন সে। এমন ভয়ংকর সন্ত্রাসীকে এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতা।
‘বেনজীর ষড়যন্ত্রমূলক সভা করছেন’সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে ষড়যন্ত্রমূলক সভা করছেন বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বেনজীরের গোপনীয় ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসার পরও প্রশাসন নির্বিকার। বেনজীরের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
‘আওয়ামী দুর্বৃত্তদের বিচারে সরকার কঠোর নয়’রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের বিষয়ে যতটা কঠোর হওয়া দরকার ছিল, উল্টো বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি বলেন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই গণহত্যার বিচার হতে হবে। কিন্তু আসামিদের গ্রেপ্তার, জেলে ও দেশের বাইরে রেখে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।