মায়ের খন্ডিত মাথা উদ্ধারের পর মিলল তার শিশুর লাশ
Published: 9th, February 2025 GMT
রংপুরের পীরগঞ্জে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দেলোয়ারা নামে এক নারীর মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধারের দুইদিন পর তার পাঁচ বছরের কন্যাশিশু সাইমার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে বড় বদনপাড়া গ্রামের একটি বাড়ির পেছনে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের (৩৫) বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় তারা গ্রেপ্তার আতিকুলের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আরো পড়ুন:
কুমার নদে ভাই-বোন নিখোঁজ
বিদ্যালয়ে আগুনে পুড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৮ শিক্ষক বরখাস্ত
অভিযুক্ত আতিকুল পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়ার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামের একটি মরিচ ক্ষেত থেকে মাথাহীন এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয়, নিহত নারীর নাম দেলোয়ারা বেগম। তিনি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা। তার বিয়ে হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। পরবর্তীতে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেন এলাকাবাসী
মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আতিকুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার করতোয়া নদীর টোংরারদহ থেকে দেলোয়ারা বেগমের খণ্ডিত মাথা মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়। পরে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ বাদী হয়ে আতিকুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এরই মধ্যে দেলোয়ারা বেগমের তালাকপ্রাপ্ত স্বামী পুলিশকে জানান, তার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ বছরের মেয়ে সায়মাও ছিল। পুলিশ আজ সকালে অভিযুক্ত আতিকুলের বাড়ির পেছনে থাকা একটি বাগানে পুঁতে রাখা শিশু সাইমার মরদেহ উদ্ধার করে। এঘটনার পরপরই বিক্ষুদ্ধ জনতা আতিকুল ইসলামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার মোকলেছুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থল গিয়ে দেখি টিনশেড তিন-চারটি ঘরে আগুন জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে।”
পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক বলেন, “অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই নারীর শরীর থেকে খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়। শনিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদে দোলোয়ারা বেগমের পাঁচ বছর বয়সী শিশুকন্যাকে দেড় মাস আগে হত্যা করে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করেন তিনি।”
তিনি আরও বলেন, “রবিবার সকালে আতিকুলের বাড়ির পাশের সুপারি বাগানের গোবরের ভিড়ার পাশে থেকে শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি, ঘটনাটি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ জনতা আতিকুলের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। অভিযুক্ত আতিকুলকে হত্যা মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।”
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রগঞ জ র মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
গতকাল রোববার দুপুরে জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এক তরুণের হাতের কব্জিতে গুরুতর ক্ষত হয় এবং আরও একজন আহত হন।
জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।
রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর উভয় পক্ষ ঘণ্টা-ব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারি। পরে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক ব্যক্তির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক পক্ষের সমর্থকরা বালতিতে করে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করছেন। তাদের হাতে ছিল টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ডাল-সুরকি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।
সম্প্রতি জাজিরার বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আলোচিত হয়। গত ৫ এপ্রিল সেখানে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এখনও আলোচনায় রয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো ছাব্বিশপারা এলাকায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।