জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আন্তঃ কলেজ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় না’গঞ্জ কলেজ শিক্ষার্থীদের সাফল্য
Published: 9th, February 2025 GMT
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তঃ কলেজ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন ও দশটি ইভেন্টের মধ্যে সাতটি ইভেন্টেই বিজয়ী হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ অর্জন করেছে নারায়ণগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ রবিবার সরকারি তোলারাম কলেজে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে নারায়ণগঞ্জ কলেজ সরকারি তোলারাম কলেজ কে হারিয়ে জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিতর্কের বিষয় ছিল 'সুশাসন নিশ্চিত করতে জনগণের ভূমিকা মুখ্য'।পক্ষে ছিল নারায়ণগঞ্জ কলেজের অবস্থান।
নারায়ণগঞ্জ কলেজ বিতর্ক দলে সদস্যরা হলেন মৌমিতা আক্তার (দলনেতা), মোঃ ইফতেখার আহমেদ ও মুক্তা রাণী।
জেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় দশটি ইভেন্টের মধ্যে ৭টি ইভেন্টেই নারায়ণগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। রবীন্দ্র সংগীতে সূমাইয়া জাহান ছোঁয়া,গণসংগীতে সাদমান সাকিব,লোকগীতিতে উজ্জ্বল রায় পার্থ, আবৃত্তিতে স্বরূপ সেনগুপ্ত, একক অভিনয়ে সোহাগ গাজী,নৃত্যে পুষ্পিতা-সাহা,সৃজনশীল দলীয় নৃত্যে পুষ্পিতা সাহা ও তার দল বিজয়ী হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে।
উল্লেখ্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ড আয়োজিত আনতে কলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের ছেলেরা ফুটবল ও ক্রিকেটে এবং মেয়েরা ভলিবল,হ্যান্ডবল ও ফুটবলে জেলা ও জোন পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়েছে।
অ্যাথলেটিক্সে নারায়ণগঞ্জ কলেজের মেয়েরা চারটি ইভেন্টে জেলা ও জোন পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে বিভাগীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
এই প্রথম ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ জেলার কোন কলেজ এতগুলো ইভেন্টে জোন চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ পর য য
এছাড়াও পড়ুন:
ঈশ্বরদীর অর্ধেকেরও বেশি গাছে আসেনি লিচুর মুকুল
লিচুর রাজধানীখ্যাত পাবনার ঈশ্বরদীতে এবার অর্ধেকেরও বেশি গাছে আসেনি মুকুল। চাষিরা বলছেন, ফাল্গুন মাসে যখন লিচুর মুকুলের ম-ম গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার কথা বাগানগুলোয়, তখন গাছে গাছে দেখা যাচ্ছে কচিপাতা। ফলে এবার লিচুর উৎপাদনে ধস নামার শঙ্কায় তারা। লিচুর মুকুলের এমন করুণ দশা গত পাঁচ দশকে দেখা যায়নি। তবে গাছে মুকুল কম আসার জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
ঈশ্বরদীর ‘লিচু গ্রাম’ বলে পরিচিত উপজেলার মানিকনগর, মিরকামারী, চরমিরকামারী, কদিমপাড়া ও আওতাপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, বহু বাগানের গাছেই মুকুল নেই। কৃষকরা বলেন, এই সময়ে গাছে নতুন পাতা গজালে মুকুল আসে না। লিচুচাষি আমিরুল ইসলাম সরদার জানান, তাঁর বাগানে ১০০টি গাছ থাকলেও মাত্র ১০-২০টিতে মুকুল এসেছে। মুকুলের পরিমাণও অনেক কম। নিকট অতীতে এত কম মুকুল আর দেখা যায়নি। এ বছর কেন এমন হলো বুঝতে পারছি না। আবহাওয়ার কারণে এ বছর মুকুলের বিপর্যয় হতে পারে বলে তারা ধারণা করেছেন।
সাহাপুর গ্রামের লিচুচাষি সহিদুল ইসলাম বলেন, এত কম লিচুর ফলন আগে কখনও দেখিনি। এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ লিচু চাষের ওপর নির্ভরশীল। আমার বাগানের অর্ধেকেরও বেশি গাছে এবার মুকুল আসেনি। লিচু বেচে সারা বছর আমরা সংসারের খরচ চালাই। এবার কীভাবে চলব বুঝতে পারছি না।
লিচুর আবাদ করে জাতীয়ভাবে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ঈশ্বরদীর কৃষক আব্দুল জলিল কিতাব। তিনি বলেন, ৪৫ বছর ধরে লিচুর আবাদ করছি– এমন বিপর্যয় আগে কখনো হয়নি। পুরো এলাকাতেই এ অবস্থা। পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আগামীতে লিচুর ভালো আবাদ আর হবে কিনা সন্দেহ আছে। এ বছর লিচুর ১০ শতাংশও ফলন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে। লিচু আবাদের সঙ্গে এই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এরা সবাই এবার বিপদের সম্মুখীন হবেন।
উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর কারিগরপাড়া গ্রামের লিচুচাষি শামসুল আলম বলেন, আমার প্রায় ১২ বিঘা জমিতে লিচুর বাগান আছে। এ বছর এত কম মুকুল এসেছে, যা আগে কখনও দেখিনি।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এখলাছুর রহমান বলেন, ‘লিচুগাছে সমানভাবে প্রতিবছর মুকুল আসে না। কখনও বেশি বা কখনও কম হয়। তবে এবার তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যক গাছে মুকুল এসেছে। এটি প্রাকৃতিক কারণে হতে পারে। এ বছর যেহেতু কম হয়েছে, তাই ধারণা করা যায় আগামী বছর মুকুলের পরিমাণ সব গাছেই বেশি এবং ভালো ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, ঈশ্বরদীতে এবার ৩১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। তবে এ বছর গাছগুলোয় মুকুলের পরিমাণ আগের চেয়ে অনেক কম। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে বলে অনুমান করছি।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামের জমিতে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০টি লিচু গাছ রয়েছে। বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ১৫টি গাছ অর্থাৎ এক একর জমিতে ৪২টি, এক হেক্টর জমিতে ৯০টি গাছ আছে। ছোট-বড় বাগান মিলিয়ে ১১ হাজার ২৭০টি গাছে লিচুর বাগান রয়েছে। উপজেলায় লিচু আবাদি কৃষকদের সংখ্যা ৯ হাজার ৬২০ জন। বাণিজ্যিক আকারে লিচু বাগান রয়েছে ২৬০০ হেক্টর জমিতে। বিচ্ছিন্নভাবে বসতবাড়িতে আবাদ হয়েছে ৫০০ হেক্টরে। ফলন্ত আবাদি জমির পরিমাণ ২৮৩৫ হেক্টর। প্রতিবছর এ উপজেলায় ৫০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হয়।