বর্তমান কর ব্যবস্থা বিনিয়োগ পরিপন্থি: বিকেএমইএ সভাপতি
Published: 9th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং শিল্প বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়নযোগ্য নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, বর্তমান কর ব্যবস্থা বিনিয়োগ পরিপন্থি। কর ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা দরকার।
শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্টস ফোরামের (বিএলআরজেএফ) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিকেএমইএ সভাপতি এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বেশির ভাগ ব্যবসায়ী চান তাদের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পান। এটি উৎপাদন ও শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ক্রেতারা শুধু ট্রেড ইউনিয়নের কথা বলে। তারা যদি বাংলাদেশি পণ্যের ন্যায্য ও নৈতিক মূল্য না দেয়, তাহলে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা অসম্ভব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নীতি বাস্তবায়নের জন্য স্টেকহোল্ডার এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বা নীতিমালা তৈরি করার আহ্বান জানান বিকেএমই সভাপতি। তিনি বলেন, গত ছয় মাসে সরকার ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। সাবেক সরকার রপ্তানি নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছে। তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি পরিকল্পনা নিয়েছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের এটা সঠিক সময় নয়।
মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, শিল্প ইউনিটে পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক।
সভায় ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের (টিডব্লিউইউ) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে শ্রমিকদের জন্য ২৫ হাজার টাকা মজুরি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি সাভারে অপরিকল্পিত ট্যানারি এস্টেটের সমালোচনা করেন, শিল্পের বিকাশ এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে মিডিয়ার সহায়তাও চেয়েছেন।
ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ট্যানারি মালিকরা ঠিকই বছরের পর বছর ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কিন্তু শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও সুবিধা সুবিধা বাড়াতে গড়িমসি করেন। সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করা ট্যানারি শ্রমিকরা বেতন-ভাতার অনিশ্চয়তায় থাকেন। সরকার ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে, আমরা চাই দ্রুত এ মজুরি বাস্তবায়ন হোক।
বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের (বিএলএফ) ডেপুটি ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস মাহমুদুল হাসান খান বলেন, দেশের শিল্পের বিকাশের জন্য শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হলে উৎপাদনও বাড়বে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।
উল্লেখ্য, বিএলআরজেএফ ২০১৫ সালে গঠিত হয়। শনিবার ঢাকার তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্কে ফোরামের বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। বিএলআরজেএফের সভাপতি কাজী আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর র ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক ফেয়ার শুরু ১২ ফেব্রুয়ারি
দেশে চার দিনব্যাপী ১৭ ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক, প্যাকেজিং এবং প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফেয়ার শুরু ১২ ফেব্রুয়ারি। ঢাকার বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি (আইসিসিবি)-তে যা চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন ও হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইওর্কার ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস যৌথভাবে আয়োজন করছে এ মেলাটি। এটি দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের-বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় অন্যান্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা, আয়োজক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ জানান, ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক ফেয়ারে থাকবে ৮০০টিরও বেশি স্টল, যেখানে ১৮টি দেশ থেকে ৩৯০টিরও বেশি ব্র্যান্ড অংশগ্রহণ করবে। চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপান, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে এই মেলায়।
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ক্রমবর্ধনশীল প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং খাতে দ্রুতই বাড়ছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। যেখানে সম্মিলিতভাবে প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বিপিজিএমইর সদস্য প্রতিষ্ঠান। দেশীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও আধুনিক মেশিনারির ব্যবহার বাড়ানো এই আয়োজনের একটি প্রধান লক্ষ্য। শুধু প্রদর্শনী নয়, এই চার দিন থাকবে প্লাস্টিক খাত নিয়ে আয়োজিত সেমিনার। যেখানে টেকসই উৎপাদন, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি, রিসাইক্লিং নতুন উদ্ভাবন, বিশ্ব বাজার ও বাংলাদেশের প্লাস্টিক খাত নিয়ে বিশদ ও তথ্যবহুল আলোচনা হবে।’’
সামিম আহমেদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্লাস্টিক খাতের অগ্রযাত্রায় আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ফেয়ারের ব্যাপক অবদান রয়েছে। প্লাস্টিক ফেয়ারের মাধ্যমে প্লাস্টিক পণ্যের পরিচিতি, নতুন প্রযুক্তি সংযোজন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বাড়ছে ভোক্তা সাধারণ। প্লাস্টিক পণ্য দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশের উল্লেখযোগ্য সেক্টরের মধ্যে প্লাস্টিক একটি অন্যতম সেক্টর। আমরা প্লাস্টিক সেক্টরের রোডম্যাপ প্রণয়ন করছি। আগামী দিনে প্লাস্টিকের ব্যবহার ৫ কেজি থেকে বেড়ে হবে ৩০ কেজি এবং রপ্তানিও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। প্লাস্টিক অ্যাসোসিয়েশন প্লাস্টিক সেক্টরকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে অগ্রসর হচ্ছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘প্লাস্টিক পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশসহ সারা ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন চীন, ভারত, নেপালসহ ১২৬টি দেশে রপ্তানি হয়ে আসছে। প্লাস্টিক খাতের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে বেড়েছে। বাংলাদেশে প্লাস্টিক শিল্প লিঙ্কেজ শিল্প হিসাবে অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো ইপিবি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন হিসাবে এই পরিসংখ্যান উঠে আসে না।’’
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ