ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, একজন গুলিবিদ্ধ
Published: 9th, February 2025 GMT
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আজ রোববার বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কয়েকটি গুলি ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। এতে এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন আরও একজন।
গুলিবিদ্ধ কাপ্তান মিয়া (১৬) হবিগঞ্জের মো. ডালিমের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার জামগড়া চৌরাস্তা এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে একটি দোকানের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। আহত অপরজন মো.
স্থানীয়, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামগড়া এলাকার প্রীতি গ্রুপের একটি কারখানা থেকে ঝুট নেন আশুলিয়া থানা তাঁতী দলের সহসভাপতি বকুল ভূঁইয়া। এর আগে ওই কারখানা থেকে ঝুট নিতেন আওয়ামী লীগ নেতা মিলন মীর। মাস দেড়েক আগে বকুল ভূইয়া ওই কারখানা থেকে ঝুট নেওয়ার সময় কারখানার বাইরে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ পরিবারকল্যাণ–বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুর অনুসারী আশুলিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি শরীফ চৌধুরীর লোকজন তাঁকে বাধা দেন। এরপর কিছুদিন ঝুট নেওয়া বন্ধ থাকলেও পরে আবার ঝুট নেওয়া শুরু করেন বকুল ভূঁইয়া।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে কারখানা থেকে ট্রাকে করে ঝুট নিয়ে বকুল ভূঁইয়ার লোকজন গুদামের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। ঝুটসহ ট্রাকটি জামগড়ায় শরীফ চৌধুরীর বাড়ির অদূরে ব্রুখিল মার্টের সামনে পৌঁছালে শরীফ চৌধুরীর লোকজন ট্রাক আটকে ট্রাক থেকে ঝুটের কয়েকটি বস্তা নামিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। বকুলের লোকজন সেখানে গেলে কয়েকটি গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কাপ্তান মিয়ার পিঠে গুলি লাগে। পরে তাঁকে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া মো. শেখ আবু জাফর নামের অপর একজন ইটের আঘাতে আহত হলে তাঁকে একই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, বেলা সোয়া তিনটার দিকে আহত দুজনকে হাসপাতালে আনা হয়। কাপ্তানের পিঠে গুলি লেগেছে। গুলি পিঠের বেশ গভীরে থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া আবু জাফর মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁর আঘাত খুব বেশি গুরুতর নয়।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে হেলমেট পরিহিত কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্র হাতে দেখা যায়। এ ছাড়া অন্তত তিনজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসদৃশ বস্তু দেখা যায়। একটি গুলির শব্দও শোনা যায়।
ঘটনার সময় শরীফ চৌধুরীর লোকজন গুলি ছুড়েছে বলে দাবি করেছেন বকুল ভূঁইয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে ঝুট বের করি। মাস দেড়েক আগে একবার শরীফ চৌধুরী লোকজন দিয়ে বাধা দিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে কিছুদিন ঝুট নেওয়া বন্ধ করেছিলাম। এর পর থেকে ঝুট নিচ্ছি। শরীফের বাড়ির সামনে দিয়েই ঝুট নিয়ে যেতে হয়। আজকে ঝুট নিয়ে বের হওয়ার পর তাঁর বাড়ির কাছাকাছি গেলে আমার লোকজনকে গুলি করেছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শরীফ চৌধুরী দাবি করেন, বকুল ভূঁইয়ার ছেলে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রনি ভূঁইয়ার সঙ্গে স্থানীয় রাজকুমার রাজুর লোকজনের সঙ্গে ব্যক্তিগত ঝামেলা রয়েছে। তাঁরা নিজেরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
শরীফ চৌধুরী আরও বলেন, ‘মূলত রনি ভূঁইয়া তাঁর বাবা বকুল ভূঁইয়াকে সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। রাজকুমার রাজুর সঙ্গে রনি ভূঁইয়ার পূর্ববিরোধ ছিল, আজকে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। ওই ঝামেলায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার, একাধিক হত্যা এবং অস্ত্র মামলার আসামি রনি ভূঁইয়া গত বছরের অক্টোবর মাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর তিনি জামিনে বের হন। জামিনে বের হয়েই তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূর আলম সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে জামগড়া এলাকার স্থানীয় দুটি গ্রুপের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। শুনেছি সেখানে কয়েকটি গুলির শব্দ হয়েছে। একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। যতটুকু জানতে পেরেছি স্থানীয় রনি ভূঁইয়া ও শরীফ গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল কজন কজন গ ল ব এনপ র ব যবস জ মগড়
এছাড়াও পড়ুন:
‘পাতাল লোক ২’, উন্নয়নের স্বপ্ন আর একজন হাতিরামের গল্প
মহামারির দিনগুলোতে ঘরবন্দী মানুষ একটু স্বস্তি খুঁজছে। নিজের আশপাশ, সমাজব্যবস্থা, পরিবেশ, রাজনীতি—নানা কিছু নিয়ে চিন্তা করছে। এমন সময় অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে মুক্তির পর অন্তর্জালে ব্যাপকভাবে চর্চিত হয় ‘পাতাল লোক’। জাতে ক্রাইম-থ্রিলার, তবে পরতে পরতে রাজনীতি, সমাজব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা। সহজেই সিরিজটি ভারতের অন্যতম সেরা সিরিজের একটি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। আলোচিত সেই সিরিজের দ্বিতীয় মৌসুম এল চার বছর অপেক্ষার পর! অনেকে হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন হাতিরাম চৌধুরী আর আনসারির গল্প। কিন্তু গত মাসে দীর্ঘ বিরতির পর ফিরে এসে তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।
একনজরেসিরিজ: `পাতাল লোক ২'
ধরন: ক্রাইম-থ্রিলার
ক্রিয়েটর: সুদীপ শর্মা
নির্মাতা: অবিনাশ অরুণ
পর্বসংখ্যা: ৮
অভিনয়: জয়দীপ আহলাওয়াত, ঈশ্বক সিং, তিলোত্তমা সোম
স্ট্রিমিং: অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও
কী ঘটেছিল প্রথম মৌসুমে
অনেক চরিত্র একই, তবে গল্পের দিক থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় মৌসুমের খুব একটা সম্পর্ক নেই। তবু একবার প্রথম কিস্তি ফিরে দেখে স্মৃতি ঝালিয়ে নেওয়া যাক। গল্প শুরু হয় সঞ্জীব মেহরাকে দিয়ে। ভারতের অন্যতম এক টিভি চ্যানেলের ডাকসাইটে উপস্থাপক তিনি। সঞ্জীব মেহরার কারণে বড় অনেক শিল্পপতি, এমনকি মন্ত্রীদেরও অপদস্থ হতে হয়েছে মিডিয়ার সামনে। সাংবাদিকতার দিক থেকে কাউকেই ছাড় দিতে রাজি নন সঞ্জীব। হয়তো তেমনই এক শত্রুতার জেরে দিল্লি পুলিশ এক বেনামি ফোনকল পেয়ে চার যুবককে গ্রেপ্তার করে। এই চার যুবক নাকি সঞ্জীব মেহরাকে খুন করার পরিকল্পনা করছিল। তদন্তের দায়ভার পড়ে আউটার যমুনা থানার ইন্সপেক্টর হাতিরাম চৌধুরীর ওপর।