স্ত্রী সন্তানসহ সাবেক কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 9th, February 2025 GMT
সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তাঁর স্ত্রী শিরিন আখতার ও ছেলে রেজওয়ান শাহনেওয়াজের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খানসহ চারজনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
এর আগে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক।
দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানায়, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং তাঁর অন্য আত্মীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডার–বাণিজ্য, দলীয় পদ ও মনোনয়ন–বাণিজ্য, নিয়োগ–বাণিজ্য, সরকারি জমি আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ অবস্থায় আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ও ছেলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। শুনানি নিয়ে আদালত আব্দুর রাজ্জাক ও তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
এর বাইরে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এস এম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। এস এম পারভেজ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও দুদক জানতে পেরেছেন। আদালত শুনানি নিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
এদিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের ২৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১২ ডিসেম্বর জাহিদ মালেক ও রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, মামলায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
নাঈমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তাঁর স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত রোববার এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে তাঁদের স্ত্রী ও ছেলে–মেয়েদর ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তাঁদের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড
তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বগুড়ার বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা আব্দুল মতিন সরকারকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন বগুড়ার স্পেশাল জজ মো. শহীদুল্লাহ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের স্পেশাল পিপি আবুল কালাম আজাদ।
সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডজনখানেক হত্যা, অস্ত্র এবং মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন:
পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
রাঙ্গুনিয়া যুবলীগের নেতা ঢাকায় গ্রেপ্তার
এর আগে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিন সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলা করেন বগুড়ার সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। চার্জশীট দাখিল করেন ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
দুদকের আইনজীবী (পিপি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আব্দুল মতিন সরকারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই মাসেই আব্দুল মতিন সরকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। মতিনের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধান করে দুদক ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পায়। তিনি এই সম্পদের মধ্যে ১ কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৩ টাকার তথ্য গোপন করেন।”
তিনি আরো বলেন, “আব্দুল মতিন সরকারের বিরুদ্ধে এই দুই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তথ্য গোপনের জন্য তাকে ৩ বছর এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূথ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।”
প্রসঙ্গত, মতিন সরকার বগুড়ার আলোচিত ধর্ষণ এবং মা মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া কাণ্ডের নায়ক তুফান সরকারের বড় ভাই। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন নারী কাউন্সিলর এবং তুফানের লোকেরা ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৮ জুলাই রাতে মামলা করেন। মতিনের ছত্রছায়াতেই তুফান বেপরোয়া জীবযাপন করতেন। বর্তমানে তুফান হত্যা মামলা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকা/এনাম/মাসুদ