টাইমের প্রচ্ছদ: মার্কিন প্রেসিডেন্টের ডেস্কের চেয়ারে ট্রাম্পের জায়গায় ইলন মাস্ক
Published: 9th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউস। সেখানে প্রেসিডেন্টের জন্য রয়েছে বিশেষ একটি টেবিল ও চেয়ার। ওই চেয়ারে বসেই দেশ শাসনের সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন তিনি। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওই টেবিল–চেয়ারে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী টাইমের প্রচ্ছদে ছাপা হয়েছে ভিন্ন এক চিত্র। তাতে দেখা যাচ্ছে, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ওই চেয়ারে বসে আছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই টেবিলটি ‘রেজল্যুট ডেস্ক’ নামে পরিচিত। টাইমের সর্বশেষ সংস্করণের প্রচ্ছদে দেখা যায়, প্রেসিডেন্টের ওই ডেস্কের পেছনে চেয়ারে বসে আছেন ইলন মাস্ক। হাতে কফির পাত্র। তাঁর দুই পাশে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেনশিয়াল পতাকা। টাইমের এই সংস্করণটিতে ‘ওয়াশিংটনে ইলন মাস্কের যুদ্ধের ভেতরের খবর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত এটাই মনে হচ্ছে, একমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছাড়া আর কারও কাছে জবাবদিহির জন্য বাধ্য নন মাস্ক।’
আরও পড়ুনইলন মাস্ক যেভাবে বিশ্বের ১ নম্বর সমস্যা হয়ে উঠলেন১৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্পের কাছাকাছি দেখা গেছে টেসলা, স্পেসএক্স ও এক্সের মালিক ধনকুবের ইলন মাস্ককে। নির্বাচন ঘিরে ট্রাম্পের প্রচারের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থও দিয়েছিলেন তিনি। এর বিনিময় দিতে ভোলেননি ট্রাম্প। ক্ষমতা পাকা হওয়ার পর সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) নামের নতুন একটি বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন মাস্ককে। এই বিভাগের মাধ্যমে ব্যয় সংকোচনের জন্য সরকারি কর্মচারীদের ছাঁটাই করার ক্ষমতা পেয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের ওপর তাঁর বড় প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুনট্রাম্পের সরকারে ইলন মাস্কের এত ক্ষমতা কি বিপদের০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বিগত কয়েক মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টাইমের প্রচ্ছদে এলেন ইলন মাস্ক। গত নভেম্বরের সংস্করণের ওই প্রচ্ছদে মাস্কের ছবি দিয়ে শিরোনামে লেখা হয়েছিল ‘নাগরিক মাস্ক: তাঁর কার্যতালিকায় কী কী রয়েছে’। এই দুই প্রচ্ছদ মিলে এটাই ইঙ্গিত করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে আসলে ট্রাম্প নন, আসল ক্ষমতায় রয়েছেন ইলন মাস্কই। সর্বশেষ এই প্রচ্ছদ নিয়ে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, ‘টাইম ম্যাগাজিন এখনো চালু আছে? জানতাম না।’
আরও পড়ুনইউএসএআইডি বন্ধে তৎপর ট্রাম্প–মাস্ক: ‘এটি আমাদের শত্রুদের জন্য উপহার’০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক র জন য ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিশোধ নিতেই বড় শাহীনকে খুন, নারীকে দিয়ে পাতা হয় ফাঁদ
৫ আগস্টের পর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর এবং বাবা-মাকে মারধরের প্রতিশোধ নিতেই শীর্ষ চরমপন্থি নেতা শেখ শাহিনুল হক শাহিন ওরফে বড় শাহিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার শিষ্য শাহনেওয়াজ পারভেজ রনি। হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হীরা ঢালিকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেন রনি। হীরার প্রেমের ফাঁদে পড়েই গত ১৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর থেকে নগরীর বাগমারায় যান বড় শাহীন। সেখানেই মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় বড় শাহীনকে।
গতকাল শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য স্বীকার করেছেন শাহনেওয়াজ পারভেজ রনি ও হীরা ঢালী। গত ৭ এপ্রিল তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জবানবন্দি গ্রহণের পর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১৫ মার্চ রাতে খুলনা নগরীর বাগমারা খালপাড় রোডের ফাঁকা রাস্তার উপর দুর্বৃত্তরা গুলি করে বড় শাহিনকে হত্যা করে। শাহীনের বিরুদ্ধে খুলনা নগরীর দৌলতপুরের আলোচিত শহীদ ওরফে হুজি শহীদ হত্যাসহ একাধিক মামলা ছিল। হত্যার ঘটনার শাহীনের মা রহিমা বেগম বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে খুলনা সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এসআই মনির হোসেন বলেন, ১৫ বছর পূর্বে শাহনেওয়াজ পারভেজ রনি পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শাহীন ওরফে বড় শাহীনকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর প্রতিশোধের সুযোগ খুঁজতে থাকেন শাহীন। গত বছর ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর এলাকায় ফিরে শাহীন লোকজন নিয়ে মহেশ্বরপাশায় রনির বাড়িতে হামলা চালায়। ওইদিন রনির বাবা-মাকে মারধর করে তারা। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী রনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী হীরাকে ব্যবহার করেন।
তিনি জানান, গত ডিসেম্বর থেকে শাহীনের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে রনি। জানুয়ারি মাসে শাহীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন হীরা। এক সময়ে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। বাগমারা এলাকার একটি বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন হীরা। সেখানেও যাতায়াত ছিল শাহীনের। শাহীনের যাবতীয় খবরাখবর রনির কাছে আদান প্রদান করতে থাকেন হীরা। বিষয়টি টের পাননি শাহীন। গত ১৫ মার্চ দৌলতপুর ছিলেন শাহীন। রাতে হীরা ঢালীর ভাড়া বাড়িতে ডেকে আনা হয় শাহীনকে। রাত সোয়া ১১টার দিকে সুযোগ বুঝে হীরা ঢালী এবং তার স্বামী রনির উপস্থিতিতে আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী খুব কাছ থেকে শাহীনের মাথায় দুটি গুলি করেন। ঘটনাস্থলে শাহীনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে রনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে খালিশপুর চলে যান এবং স্ত্রী হীরা ঢালী ঘরেই অবস্থান করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনাস্থলে হীরা ঢালী এবং রনির উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য হীরাকে কেউ যাতে সন্দেহ না করে সেজন্য বাগমারার ভাড়া বাসাটি ছাড়েননি হীরা। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করার জন্য পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম জানান, গত ৭ এপ্রিল নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমিনুর এবং হীরা ঢালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করতে চান রনি এবং হীরা ঢালী। শুক্রবার বিকেলে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের খাস কামরায় হত্যাকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন তারা দু’জন। জবানবন্দি পরবর্তী আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। বড় শাহীন হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত ছয়জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।