ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার প্রশংসা করে নেতানিয়াহু বললেন, ‘ইসরায়েল এটি বাস্তবায়ন করবে’
Published: 9th, February 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, এই পরিকল্পনা ‘বাস্তবায়ন করতে’ চায় ইসরায়েল।
গতকাল শনিবার রাতে টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজে সম্প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন নেতানিয়াহু। সাক্ষাৎকারে তিনি ট্রাম্পের পরিকল্পনার পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি মনে করি, বিগত বছরগুলোর মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবটি হচ্ছে একেবারে নতুন ধরনের চিন্তাভাবনা। আর এ প্রস্তাবটির মধ্যে গাজায় সবকিছু পরিবর্তন করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ নেতানিয়াহুর মতে, ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের ভবিষ্যতের দিকে সঠিকভাবে অগ্রসর হওয়ার উপায় তুলে ধরেছে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘ট্রাম্প যা কিছু বলছেন তা হলো, “আমি দ্বার খুলে দিতে চাই এবং এ জায়গাটি (গাজা) কাঠামোগতভাবে পুনর্গঠনের সময় তাঁদের (ফিলিস্তিনি) সাময়িক সময়ের জন্য অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে চাই।”’ তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প কখনোই বলেননি এ কাজটি মার্কিন সেনারা করবেন। অনুমান করুন তো কারা করবে? আমরা কাজটি করব।’
আরও পড়ুনগাজায় ‘জাতিগত নির্মূল’ চালানোর ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন কি সম্ভব৯ ঘণ্টা আগে১৯৬৭ সালের যুদ্ধে গাজা উপত্যকা দখল করে নেয় ইসরায়েল। ২০০৫ সাল পর্যন্ত সেখানে দেশটির সামরিক উপস্থিতি ছিল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর সেদিনই গাজায় নির্বিচার হামলা চালায় ইসরায়েল। উপত্যকাটি পুরোপুরি অবরোধ করে দেশটির সামরিক বাহিনী। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চলছে।
বিগত বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার যুদ্ধে জড়িয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। তবে এবারের সংঘাতে যে পরিমাণ রক্তপাত ও ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা নজিরবিহীন। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। আর তখন থেকে চালানো ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি।
আরও পড়ুনট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা সফল হবে না, তবে এর প্রভাব থাকবে০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার যেকোনো প্রচেষ্টা তাঁদের ১৯৪৮ সালের দুর্বিষহ স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেবে। তখন ইসরায়েল সৃষ্টির সময় বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে গাজা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আরব বিশ্বে ওই ঘটনা ‘নাকাবা’ নামে পরিচিত। সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, এবার ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ‘সন্ত্রাসবাদে জড়িত না থাকার প্রতিশ্রুতি’ দিলেই কেবল তাঁদের ফিরতে দেওয়া হবে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘সবাই গাজাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে আখ্যা দেন। সেখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিন, তাঁদের চলে যাওয়ার সুযোগ দিন। জোর করে কাউকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে না, জাতিগত নিধন হবে না। এই সব দেশ এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা যাকে সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার বলেন, সেখান থেকে মানুষকে সরিয়ে নিন। আপনারা কেন তাঁদের কারাগারে রাখতে চান?’
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের যেভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছেন ট্রাম্প২০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
৭ বছর পর চুয়েট ছাত্রলীগের ছয় নেতার নামে মামলা
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ২০১৮ সালে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর, চাঁদাবাজি এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের চুয়েট শাখার সাবেক ৬ নেতাকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সাত বছর পর মামলা দুটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম ও জামিল আহসান।
রাউজান থানায় ওই মামলায় আসামিরা হলেন– চুয়েটের তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ ইমাম বাকের, সাখাওয়াত হোসেন, অতনু মুখার্জি, নিলয় দে, মেহেদী হাসান ফরহাদ ও মোহাম্মদ ফখরুল হাসান ফাহাদ। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জামিল সমকালকে বলেন, নির্যাতন শেষে বাকের বলেছিল, হাসিনা আরও ১০ বছর ক্ষমতায় থাকবে। অর্থাৎ তারা ভেবে নিয়েছিল ওই নির্যাতনের জন্য তাদের কখনও জবাবদিহি করতে হবে না। এজন্যই মামলাটি করেছি।
মামলায় কারণে শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেননি মাহমুদুল। তিনি বলেন, ওই ঘটনার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে আমার জীবনে।