নীতি গ্রহণে সবসময় জনগণের চাওয়া পূরণ করা যায় না, বললেন অর্থ উপদেষ্টা
Published: 9th, February 2025 GMT
নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে সবসময় জনগণের চাওয়া পূরণ করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ভ্যাট বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ভ্যাট না বাড়িয়ে বিকল্প ছিল না। তাৎক্ষণিক কর বাড়ানোর সুযোগ ছিল না। রাজস্ব না বাড়ালে পুলিশের ৩০০ গাড়ি পুড়ে গেছে, সেই টাকা কোথায় পাব, কোথা থেকে আসবে?
আজ রোববার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত 'বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্সের ভূমিকা' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাকে এখন বলা হয়েছে- অনেক অর্থনীতিবিদ, অনেকেই, বেশিরভাগই আমার ছাত্র, সব ট্যাক্স কমিয়ে দেন। সব ভ্যাট কমিয়ে দেন। ইনকাম ট্যাক্স বাড়ান। রাজস্ব বাড়ান। সামনা সামনি হলে বলতাম, রাজস্ব বাড়াব কীভাবে, বলো তো?’
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভ্যাট কমিয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ঠিক আছে, ভ্যাটের চাপটা একটু কমানো দরকার। আয়কর হয়ত একটু বাড়বে। শুল্ক কমানো হবে। আবার এদিকে বলা হচ্ছে, আপনারা রাজস্ব বাড়ান। যখন বলা হয় যে বাংলাদেশে রাজস্ব খাতে কর-জিডিপি অনুপাত অনেক কম। তখন বলে যে হ্যাঁ এটা বাড়ানো উচিৎ।
তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে অস্থিতিশীলতার প্রভাব রয়েছে। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দাঁড়িয়েয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। এদিকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে বলেছে। সেটা করতে গিয়ে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে শতাধিক পণ্যে মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট, শুল্ক বাড়িয়ে ব্যবসায়ীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে এনবিআর।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড স ল হউদ দ ন আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণে বড় পরিবর্তন
সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণ নীতিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা ২০২৫’ এবং ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাতে এসব পরিবর্তনের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, লেখক ও চিত্রনাট্যকারদের সম্মানি বেড়েছে। গল্প লেখককে ২ লাখ এবং চিত্রনাট্যকারকে ৩ লাখ টাকা উৎসাহ পুরস্কার দেওয়া হবে। আগে গল্প লেখক ও চিত্রনাট্যকারকে দেওয়া হতো ৫০ হাজার টাকা করে।
এ ছাড়া পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য— দুই বিভাগেই নির্মাতা/ পরিচালকের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবকারী পরিচালককে পূর্বনির্মিত কমপক্ষে একটি চলচ্চিত্র অথবা নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক বা একাধিক চলচ্চিত্রে তার ভূমিকা থাকতে হবে।
আরো পড়ুন:
আমাকে নিয়ে বলিউডে ষড়যন্ত্র হয়েছে: গোবিন্দ
রুনা খানের বাবা মারা গেছেন
অন্যদিকে, আগের নীতিমালায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হতো ৯ মাস। কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাতারা বহুবার অভিযোগ করেছেন যে, সেই নির্ধারিত সময় পর্যাপ্ত নয়, যার ফলে নির্মাণে দেরি হয়।
এখন অনুদানের প্রথম চেক পাওয়ার পর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ মাস। সময় বেড়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও। স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মাণে ১২ মাস এবং প্রামাণ্যচিত্রের জন্য ২৪ মাস সময় পাবেন নির্মাতারা। তবে যৌক্তিক বিবেচনায় পূর্ণদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে ছয় মাস ও স্বল্পদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে তিন মাস করে সর্বোচ্চ দুবার সময় বাড়ানো যাবে।
নতুন নীতিমালায় অর্থ প্রদানের নিয়মেও পরিবর্তন এসেছে। এখন প্রথম কিস্তি হিসেবে দেওয়া হবে অনুদানের ২০ শতাংশ। এই অর্থ প্রাপ্তির দুই মাসের মধ্যে শুটিং শিডিউল, প্রোডাকশন প্ল্যান, লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি, শিল্পীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদনাসহ প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিতে হবে। চলচ্চিত্র বাছাই ও তত্ত্বাবধান কমিটি সন্তুষ্ট হলে অনুদানের ৫০ শতাংশ অর্থ দেওয়া হবে। অনুদানের সিনেমার পারিশ্রমিক নিয়ে অনেক শিল্পী অভিযোগ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে চিত্রায়িত অংশের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ রাফকাট, শিল্পীদের সম্মানি প্রাপ্তির প্রমাণপত্র দেখানোর পর মিলবে আরো ২০ শতাংশ অর্থ। সিনেমা মুক্তির পর মিলবে বাকি ১০ শতাংশ অর্থ।
এরই মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য চলচ্চিত্রে অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য আহ্বান করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। অনুদান পেতে আগ্রহীদের চলচ্চিত্রের গল্প, চিত্রনাট্য, অভিনয়শিল্পীদের নামসহ পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ আগামী ৭ এপ্রিল বিকেল ৪টার মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
এদিকে, প্রতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগের নীতিমালায় এই সংখ্যা ছিল ১০। এ ছাড়া স্বল্পদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে এখন থেকে প্রতিবছর ১০টির পরিবর্তে অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে ২০টি চলচ্চিত্র।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত