ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই নির্বাচনের জন্য ইসি পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে।’’

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইসি এই মুহূর্তে কী করছে, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে প্রস্তুতি কী, এ বিষয়গুলো নিয়েই কমিশনের সঙ্গে তারা মতবিনিময় করেছেন।

“সবকিছু আলাপের পর আমাদের কাছে মনে হয়েছে তাদের কথায় যে, আগামী মে মাস-জুন মাসের মধ্যে তারা (ইসি) পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবেন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে। তবে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন তাদের নেই।”

আরো পড়ুন:

এখন গণতন্ত্র ও ভোটের শত্রু চতুর দিকে: আহমেদ আযম

ঝালকাঠিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু

দেশের প্রচলিত সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সরকার পদত্যাগ করলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “কিন্তু এখন তো ওই আইনে দেশ চলছে না, তাই না। এই মুহূর্তে তাহলে পলিটিক্যাল কনসেনসাসের ভিত্তিতে সরকারের তরফ থেকে অনুরোধ হতে হবে এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। তবে এতটুকু বুঝেছি যে, যদি মে-জুন মাসের মধ্যে পূর্ণ প্রস্তুতি থাকে তাহলে প্রাসঙ্গিক আর কোনো সমস্যা থাকলে সেটা দূর করে খুব দ্রুতই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।”

আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসি এ এমএম নাসির উদ্দিনসহ ও অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

৫২ মিনিট বৈঠকের পর সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান।

কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে, আভাস মিলেছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “না। আমি তো বললাম, নির্বাচনের ঘোষণা তো উনারা করতে পারেন না। কারণ সংবিধানের নরমাল নিয়ম অনুযায়ী সেই নির্বাচন হচ্ছে না।”

আপনারা নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা কোনো প্রস্তাব দিইনি। আমরা তো উনাদের কাছে এটা বলব না।

“যেহেতু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দায়িত্ব এখন সরকারের…তারপরে শিডিউল ঘোষণা তো কমিশনই করবে। আপনারা জানেন যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সোমবার আমাদের আলোচনা আছে, সেখানে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত নভেম্বরে অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। তাদের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই বিএনপির সঙ্গে প্রথম বৈঠক।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও সেলিমা রহমান।

আর সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো.

সানাউল্লাহ বৈঠকে ছিলেন। ইসি সচিব আখতার আহমেদও ছিলেন বৈঠকে।

‘বুঝতে পারছি তারা সঠিকভাবে করছেন’

ইসির নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন এবং সেটি নিয়ে বিএনপি সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাওয়া হয় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামের কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, “ওয়েল। আইন অনুযায়ী তাদের যা করার কথা আমরা বুঝতে পারছি যে, তারা সঠিকভাবে সেটা করছেন।”

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, “দেখুন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সরকার স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করবে, সেটা করে যদি সিদ্ধান্তের আলোকে আইনের পরিবর্তন হয় বা বিধানের পরিবর্তন হয়, তাহলে সেটা নির্বাচন কমিশনকে মানতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, সেটা তো এখনও হয়নি।”

এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘ইসি বলেছিল যে, সংস্কার কমিশন প্রস্তাবে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে’- এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না?

জবাবে বিএনপি নেতা নজরুল বলেন, “দেখুন এটা তো তাদের ব্যাপার, সেটা তারা বলবেন। আমরাও যদি মনে করি যে, সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে অন্তরায়, এটা নির্বাচন কমিশন কেন, আমরাও বাধা দেব।

“কিন্তু বিষয়টা তাদের সঙ্গে আলোচনার বিষয় না। এটা তো কোনো কোলাবরেশনের ব্যাপার না। তাদের মতামত তারা বলবে, আমাদের মতামত আমরা বলব।”

‘বাদ পড়া ১৫ লাখ ভোটার হবে’

ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে ইসিতে আলোচনার প্রসঙ্গ ধরে নজরুল ইসলাম বলেন, “তাদের কাছ থেকে যেটুকু জানলাম যে প্রায় ৩০ লাখ নতুন ভোটার আগামী দিনে যুক্ত হবে, যারা বাদ পড়েছিলেন। তাদের ভোটার আগে করা হয়নি। আর এই সময়ে নতুন ভোটার যারা হবেন তারা ১৮ বছর হবেন আগামী বছরের পহেলা জানুয়ারি। কাজেই ওটা হিসাব না।

“হিসাব হল, বাদ পড়া প্রায় ৩০ লাখের মধ্যে ১৫ লাখ মারা গেছেন, তারা বাদ পড়বেন। আল্টিমেটলি ১৫ লাখ ভোটার বিদ্যমান তালিকায় যুক্ত হওয়ার কথা। তবে এরপরে আরো কিছু যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, আপনারা জানেন যে, যারা মারা গেছেন সেই তালিকা করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যুর রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে।

“আমরা সবাই জানি, দেশের বহু জায়গায় বহু মানুষ মারা যাওয়ার পরে ইউনিয়ন পরিষদে রেজিস্ট্রেশন করেন না। অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্ট্রেশনে তাদের নাম নেই। কিন্তু আসলে মারা গেছেন তারা। এগুলো অনুসন্ধান করার কাজ চলছেন বলে আমাদের কমিশন জানিয়েছে।”

ঢাকা/নাজমুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ নজর ল ইসল ম র ল ইসল ম আম দ র ব এনপ সরক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় পাস আরাফাত সানি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সদ্য সমাপ্ত আসরে বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন আম্পায়াররা। যদিও বিপিএল চলাকালীন তার খেলায় কোনো বাধা আসেনি এবং চিটাগং কিংসের হয়ে ফাইনালেও মাঠে নেমেছিলেন তিনি।

তবে সানির বোলিং ভবিষ্যৎ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেটি কেটে গেছে। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন তিনি। বিসিবির একটি সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে, তার বোলিংয়ে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি, ফলে বোলিং চালিয়ে যেতে তার আর কোনো বাধা নেই।

গত ১ ফেব্রুয়ারি লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ২৪ রানে জয় পায় চিটাগং কিংস। সে ম্যাচে চার ওভারে ৪১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন সানি। এরপরই তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন আম্পায়াররা।

পরবর্তীতে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন তিনি এবং আজ সেই পরীক্ষার ফলাফল হাতে পান। বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে যদি আবারও তার অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ ওঠে, তবে তাকে দেশের বাইরে নিরপেক্ষ ল্যাবে পরীক্ষা দিতে হবে। এবারের বিপিএলে ১১ ম্যাচে ৮.১৭ ইকোনমি রেটে মোট ১১ উইকেট শিকার করেছেন সানি।

উল্লেখ্য, এর আগেও সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে তার এবং পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে অ্যাকশন সংশোধন করে তারা দুজনই আবার প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরে আসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ