ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
Published: 9th, February 2025 GMT
যাঁরা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। সেখানেই প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
পরে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বলেন, যাঁরা যাঁরা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাঁদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তাঁরা যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকেন। যে করেই হোক, তাঁদের আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি জোর দিয়েছেন।
প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, এস আলমের যত সম্পদ আছে, সব জব্দ করা হয়েছে। মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদের বিরুদ্ধেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব সম্পদ দেশের বাইরে চলে গেছে, সেগুলো ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কথার প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব বলেন, ১২ অলিগার্ক বা যাঁরা ব্যাংক লুটপাটের সঙ্গে জড়িত বা বিদেশে টাকা নিয়ে গেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে গভর্নরকে বলেছেন বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব। ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কাজ করছেন বলে গভর্নর জানিয়েছেন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনের কয়েকটি তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সভায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল সূচকগুলোতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ৫ মাসে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ, আমদানির প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। নতুন চাকরি তৈরি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি একসময় ১২ শতাংশের মতো উঠেছিল, এখন সেটি ৯ শতাংশে, মানে ‘সিঙ্গেল ডিজিটে’ নেমে এসেছে। কাজ করার কারণে মূল্যস্ফীতি কমে আসছে। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, জুলাইয়ের মধ্যে এটি সাড়ে ৭ শতাংশের মধ্যে আসবে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, হল খুলে না দেওয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মার্চ ফর কুয়েট’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলেও উল্লেখ করেছেন।
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
দাবিতে অনড় কুয়েট শিক্ষার্থীরা, সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ সিন্ডিকেট সভার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি হামলার ঘটনায় ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯৮ তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সভায় উপস্থাপন করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।”
তিসি আরো বলেন, “সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে থেকে শুরু করার এবং সব আবাসিক হলসমূহ আগামী ২ মে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েজন শিক্ষার্থী সোমবার রাতে জানান, তারা সবাই সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত জানার জন্য প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষা করেন। তারা আশাবাদী ছিলেন, সিন্ডিকেট মেম্বাররা মিটিং শেষে তাদের আপডেট জানাবেন। মিটিং শেষ হলে তারা আপডেট জানতে চান শিক্ষকদের কাছে। কিন্তু, তারা কোনো সাড়া পাননি। এ কারণে পূর্বঘষিত কর্মসূচি অনুসারে হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত হল খোলা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও জানান তারা।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ