সিটি ও আইডিয়াল শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে হাসপাতালে ৫
Published: 9th, February 2025 GMT
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর সড়ক থেকে সরেছেন সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে বলে জানান ধানমন্ডি থানার ওসি আলী আহমেদ মাসুদ।
তিনি বলেন, “সংঘর্ষের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল, বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এই ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।’’
এদিকে, সংঘর্ষে আহত হয়ে আইডিয়াল কলেজের ৫ শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা ‘গুরুতর’ বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো.
চিকিৎসকের বরাতে তিনি বলেন, “আহতদের মধ্যে ইরফানের শরীরে ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে। বাকিদের শরীরে ইটপাটকেলের আঘাত।”
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা হলেন- ইরফান আহমেদ (১৮), মাহিন আহামেদ (২০), রিয়ন (১৮), ইয়ামিন (১৭) ও আরমান (১৮)।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যান আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আহমেদ ইমন।
তিনি বলেন, “আজ দুপুরে দিকে আমাদের এক শিক্ষার্থীকে আজিমপুর এলাকায় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মারধর করে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় তারা দফায় দফায় রাস্তায় আমাদের যাকে পেয়েছে, তাকেই মারধর করেছে। এরপর বিকালে আমাদের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে কলেজ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময়ে তারা হামলা চালালে সংর্ঘষ শুরু হয়।”
সংঘর্ষ শুরুর পর ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক বলেন, “আগে থেকেই এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। কয়েক দিন পর পর ‘সামান্য বিষয়’ নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। আজও কথা কাটাকাটির জেরে নিজেদের ‘ইগো’ থেকে সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই পক্ষকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
এর আগে, গত ১০ সেপ্টেম্বর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে সেদিন ১৮ জন আহত হন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে ওই দিন আইডিয়াল কলেজের নামফলকও খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এর পাঁচদিন পর ঢাকা সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ঢাকা কলেজের একটি বাস ভাঙচুর করেন আইডিয়ালের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকার সায়েন্স ল্যাব মোড়ের কাছে এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের ক্যাম্পাস। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই কয়েকবার করে সংঘর্ষে জড়ায় নানা কারণে।
গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন দুপুরে কলেজের দুটি বাস সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জেরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই মারামারি চলে, যাতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার তথ্য দেয় ঢাকা কলেজ।
এরপর ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের প্রতিনিধিসহ পুলিশের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ধানমন্ডি এলাকার এসব কলেজগুলোর ছোট ছোট সমস্যা যেন বড় রূপ না নেয়, তা নিশ্চিত করতে এই কমিটি কাজ করবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এর মধ্যে আবারো ‘সামান্য বিষয়’ নিয়ে সংঘর্ষে জড়াল শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র শ ক ষ র থ র ও আইড য় ল এল ক য় কল জ ও স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা
গাজীপুরের রাজবাড়ীতে আজ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থল গাজীপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ি মাঠের দিকে যাচ্ছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশের কথা জানানো হয়। তবে সমাবেশটি বেলা দেড়টার দিকে হবে বলে জানা গেছে। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দাখিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং এর প্রেক্ষিতে স্থানীয়দের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত তিনজনের অবস্থা গুরুতর মনে করা হচ্ছে।
এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান সংগঠক সারজিস আলম তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষ দিন। আমরা আসছি...।’
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই আ ক ম মোজ্জামেলের ধীরাশ্রমের বাড়ির আশপাশে বেশ কয়েকজন লোক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। হঠাৎ তারা বাড়িতে হামলা চালায়, তারপর ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর করতে থাকেন। এ সময় ডাকাত এসেছে বলে পাশের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও এলাকার লোকজন প্রতিরোধ করতে আসেন। তখন তাদের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর ৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আহতদের উদ্ধার করে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো দেশীয় অস্ত্রের আঘাতজনিত রক্তাক্ত জখম দেখা যায়।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, হামলার খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই। আহত অবস্থায় ১৫ জনের মতো উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার বিষয়ে কোনো পক্ষের কাউকেই আমরা পাইনি। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বা তথ্য নেওয়ার জন্য কথা বলতে পারিনি। ফলে এখানে আসলে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, আমাদের রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে, আপনারা এসে তাদের বাঁচান। পরে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে তাদের উদ্ধার করতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে নিয়ে আটকে মারধর করে।
এদিকে পুলিশ আসতে দেরি করেছে অভিযোগ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা ফাঁদে পড়েছে, এটা বুঝতে পেরে আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি। তারা ঘটনার দুই ঘণ্টা পর এসেছে। যারা হামলা করেছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের লোক।