বগুড়ার ধুনট উপজেলা বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল আলম মামুন ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আপেল মাহমুদ ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা সদরের হুকুম আলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে আপেল মাহমুদ, তাঁর ছেলে ও কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন।

হামলার সময় ভাঙচুর করা হয়েছে পাঁচ থেকে ছয়টি মোটরসাইকেল। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আপেল মাহমুদ ও তাঁর ছেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবির মাহমুদ উৎসকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় আজ দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আহত আপেল মাহমুদ অভিযোগ করেন, কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিলের চেষ্টাকালে তৌহিদুল আলমের নির্দেশে তাঁর লোকজন হামলা চালিয়েছেন। ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা ও দেশজুড়ে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের ষড়যন্ত্র করছে। ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এসবের প্রতিবাদে আজ হুকুম আলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল নিয়ে উপজেলা সদর অভিমুখে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল আলমের নির্দেশে ধুনট সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কবির তালুকদারের নেতৃত্বে হঠাৎ মিছিলে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা পাঁচ থেকে ছয়টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনায় চিকিৎসা শেষে তিনি থানায় অভিযোগ করবেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলের রুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আমি রাজশাহীতে এসেছি। আপেল মাহমুদের ওপর হামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করে থাকলে তা ভিত্তিহীন।’

আপেল মাহমুদ বলেন, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ধুনট উপজেলার সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর ও মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিলটি করার কথা ছিল। ধুনট থানা–পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিএনপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল আলমের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পাদক আপেল মাহমুদের দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে আপেল মাহমুদের মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত হ দ ল আলম ব এনপ র স

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, এক দিনে চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’

মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে। শিশুটির সুস্থতার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, শিশুটি আজ (বুধবার) চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে। তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ মিমি পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী।

সিএমএইচের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ সর্বাধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন মাগুরার আদালত।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ