নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব
Published: 9th, February 2025 GMT
ইসলামি ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পেছনে কদমতলায় এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এর আগে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়।
ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে কৌতূহল এবং উৎসাহ দেখা গেছে। আগামীকাল সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এ প্রকাশনা উৎসব শেষ হবে।
আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিমা আশা বলেন, “এ উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। অনেকগুলো গিফট পেয়েছি। আমি একটা আম্মার জন্য আরেকটা নিজের জন্য বই কিনছি। আমি মনে করি, এ উৎসব ছাত্রসমাজে ভালো প্রভাব ফেলতে পারে।”
তিনি বলেন, “এই উৎসব উপলক্ষে রাখা বইগুলো ভালো। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগার মতো বই। ছাত্রশিবিরের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে ভালোই মনে করছি। যেহেতু ভালো উদ্যোগ, পরবর্তীতে আরো চলতেই পারে।”
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাঙ্কিংয়ের ওমর ফাহাদ বলেন, “উৎসবে খুব ভালো লাগছে। এখানে অনেকগুলো পচ্ছন্দের বই দেখলাম। তাছাড়া ইসলামি বই আমার পছন্দের। আমি এখান থেকে হাদিসের নামে জালিয়াতি বইটি কিনেছি। আমি মনে করি ভবিষ্যতে এমন প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ভালো হবে। শিক্ষার্থীরা ইসলাম সম্পর্কে এবং শিবির সম্পর্কে জানতে পারবে। শিবিরের পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠন এমন আয়োজন করলে শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে।”
উৎসব আয়োজকদের অন্যতম ছাত্রশিবির নেতা সাদ কবির বলেন, “দীর্ঘ ফ্যাসিস্ট শাসনামলে আমরা প্রকাশ্যে কোন কার্যক্রম চালাতে পারিনি। শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্র শিবির সম্পর্কে জানাতে এবং শিবিরফোবিয়া দূর করতে আমাদের এ আয়োজন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বলবো আমাদের স্টলে আসুন, বই দেখুন, পড়ুন।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছরে শিবির সম্পর্কে যে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে তা অবগত হতে পারবেন। আমরা চাচ্ছি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের বিস্তার ঘটাতে। এজন্যই মূলত আমাদের প্রকাশনা উৎসব। সে জায়গা থেকে বই দেখুন, বই পড়ুন, বই কিনুন এবং নিজের জ্ঞান সমৃদ্ধ করুন। কেননা একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে জ্ঞানের প্রাধান্য দিতেই হবে।”
ঢাকা/তৈয়ব/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নববর্ষ উপলক্ষে ব্যস্ততা বেড়েছে মৃৎশিল্পীদের
বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসব মেলা সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে তৈরি করা মাটির খেলনা, পুতুল ও ব্যাংকসহ নানান জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে ও রংতুলির আঁচড় শেষে বৈশাখী মেলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিল্পীরা।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই গ্রামে পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে মাটি দিয়ে তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, ব্যাংক, কলস, দইয়ের কাপ ও সরাসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী। এসব জিনিসপত্র তৈরি করার পর তা রোদে শুকানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন। পালপাড়ার ছোট-বড় ছেলেমেয়ে সবাই উৎসবের মতো করে এ কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ছোট ছোট শিশুরাও তাদের বাবা-মায়েদের এই কাজে সহযোগিতা করছে। শিল্পীরা বলছেন, পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের এই সময়টাতেই তাদের ভালো আয় রোজগার হয়।
স্থানীয়রা জানালেন, বাজারে প্লাস্টিক পণ্যের ছড়াছড়ির কারণে এক সময়ে গ্রামগঞ্জের জনপ্রিয় মাটির তৈরি জিনিসপত্র এখন তাদের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এ কারণে মৃৎশিল্পীদের আগের সুদিন নেই। পালপাড়ায় একসময় এই পেশার
সঙ্গে ৫০টিরও অধিক পরিবার জড়িত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন মাত্র ১০ থেকে ১৫টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। উপকরণের দাম বাড়ায় এ কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
পালপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষার্থী অনন্যা রানী পাল জানান, এটা আমাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি মা-বাবাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন। কারণ, এই মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করেই তার পড়ালেখাসহ সংসারের খরচ চলে।
রণজিত পাল নামে এক মৃৎশিল্পী বলেন, এ পেশায় এখন টিকে থাকা মুশকিল। সরকার সহযোগিতা না করলেই অচিরেই এই পেশা থেকে নতুন প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নেবে।
ইতোমধ্যে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা যারা এই পেশায় রয়েছি, খুব কষ্টে আছি। আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। –বলছিলেন তুলসী রানী পাল।
হবিগঞ্জ বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, মৃৎশিল্প গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র আধুনিকায়নে এবং মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ঋণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করতে চেষ্টা করবেন তারা।