অমর একুশে বইমেলায় এসেছে লেখক ও বিশ্লেষক সরোজ মেহেদীর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘মায়াজাল’। জীবনের নানা ঘটনা, দুঃখ-হাসি-কান্না, সমাজে চলা অনিয়ম-অনাচার কখনো মানবিক বোধে, কখনো ব্যাঙ্গাত্মক উপায়ে গল্পে গল্পে তুলে ধরেছেন লেখক। গল্পে গল্পে প্রচলিত শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়ার বিদ্রোহের ডাক যেমন দিয়েছেন, আবার শুনিয়েছেন নতুন দিনের আশার কথা। 

সৃজন থেকে প্রকাশিত বইটি বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের ২৮৫ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। দাম ১৮০ টাকা। এ ছাড়া রকমারি-সহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বইটি পাওয়া যাবে। 

গত বছরের বইমেলায় সরোজ মেহেদীর করোনায় ভারত ভ্রমণ, বসবাস ও বন্দী জীবনের ভাবনা-দর্শনমূলক বই ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ সময়ে প্রকাশ হলে তা পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া জাগায়।

সরোজ মেহেদী বলেন, যে জীবন যাপন করছি; যে স্নেহ, প্রীতি, প্রেম নিয়ে আমাদের রোজকার বন্ধন; যে অনাচার আর অবিচারকে সঙ্গী করে এই দেশে আমাদের দিন গুজরান; সে জীবনটার চারপাশ গল্পে গল্পে উঠে এসেছে। কখনো ব্যঙ্গ প্রকাশে, কখনো বিদ্রোহে। কখনোবা মানবিক বোধে। কখনো-সখনো দুয়ারে এসে উঁকি দিয়েছে প্রেম। পুরুষ মানুষ শেষ পর্যন্ত প্রেমিক বলে কথা! তার জীবনে প্রেম বারবার আসে! সেইসব অনুভূতি আর কথাই পাঠক গল্পে গল্পে খুঁজে পাবেন। 

‘এই বই শুধু গল্পচ্ছলে বিনোদন দেয় না। পাঠককে নিয়ে যায় ইতিহাসের কাছে। একটি দুঃসময়ের সাক্ষ্য বহন করে এসব গল্প’, যোগ করেন লেখক। 

‘মায়াজাল’ বইয়ের গল্পগুলো ২০১১ থেকে ২০২২ সময়ের মধ্যে রচিত। যে সময়টাতে ভীষণভাবে প্রাণবিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছিল। এককেন্দ্রিক শাসনের চূড়ায় এসে এই সমাজকে যেন কিছু না বলার, না দেখার বোবায় ধরেছিল। সে সময়টায় লেখক গুটিকয় তাদের একজন; যারা কলমসহ বিক্রি হয়ে যাননি। ফলে প্রতিটি গল্পের পরতে পরতে সেই সমাজ, শাসনচিত্র, শাসক ও মানসচিত্র ফুটে উঠে। কখনো কথক নিজেকে নিজেই ভর্ৎসনা করেন। কখনো আবার তার জবানীতে সমাজপতিরা উঠে আসে ব্যঙ্গাত্মক উপমায়। এ শুধু গল্প নয়। গল্পচ্ছলে এক দশকের ইতিহাসের পাঠও। এই গল্প গল্পের আড়ালে সময়ের অনিবার্য সত্য তুলে ধরে। সময়ের কাছে সময়ের সাক্ষ্য বহন করে নিয়ে চলে। ফলে বহমান কাল ধরতে কখনো কেউ না কেউ এসব গল্পে চোখ তুলে তাকাবে বলে লেখক বিশ্বাস করেন। 

এই বইয়ের গল্পের সঙ্গে অন্য গল্পের পার্থক্য হলো, এ গল্প পাঠককে চিরায়ত আনন্দের সঙ্গে ইতিহাসেরও পাঠ দেয়। এ গল্প পাঠককে এমন এক দুঃসময়ের সাক্ষ্য দেয় যে সময়টাতে একটা জনপদ অন্ধকারে ঢাকা পড়েছিল। 
 
সরোজ মেহেদী একাধারে একজন একাডেমিশিয়ান, মিডিয়া বিশ্লেষক, গবেষক ও সাহিত্যিক। তিনি বর্তমানে ইউনিভাসির্টি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-ইউল্যাবের মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের লেকচারার।

২০১৯ সালে জার্মানি থেকে তুর্কি ভাষায় তার প্রথম বই প্রকাশ হয়। ২০২২ সালে প্রকাশ হয় করোনায় ভারত ভ্রমণ ও বন্দী জীবনের ভাবনা-দর্শনমূলক বই ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বইম ল সময় র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে এবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিজাত ইউনিটের পিটিশন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ এবং বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরো কয়েকশ’ সদস্য নতুন একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন।

ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল কান-এর বরাত দিয়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।

কান জানিয়েছে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) নতুন একটি চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সৈন্যরা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ এবং বিশেষায়িত বিভাগের সদস্য।যার মধ্যে রয়েছে গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০, বিশেষ বাহিনী এবং সায়েরেত মাতকাল, শায়েতেত এবং শালদাগের মতো অভিজাত ইউনিট।

আরো পড়ুন:

গাজা ‘পৃথিবীর নরকে’ পরিণত হয়েছে: রেড ক্রস

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শনিবার

কান আরো জানিয়েছে, স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সক্রিয় রিজার্ভ সেনা।

আনাদোলুর একটি হিসাব অনুসারে, বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি পিটিশন স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রথম চিঠিতে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। পরে এতে ১ হাজার ইসরায়েলি শিক্ষাবিদ যোগ দিয়েছেন।

দ্বিতীয় পিটিশনে ইসরায়েলি সাঁজোয়া বাহিনী এবং নৌবাহিনীর কয়েকশ’ সদস্য; তৃতীয়টিতে কয়েক ডজন রিজার্ভ সামরিক চিকিৎসক; চতুর্থটিতে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০ এর কয়েকশ’ সদস্য, পঞ্চমটিতে প্রায় ১০০ সামরিক চিকিৎসক এবং সর্বশেষ ষষ্ঠটিতে বিশেষ এবং অভিজাত বাহিনীসহ বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক’শ সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বেশ কয়েকটি বিবৃতিতে যেকোনো পিটিশনে স্বাক্ষরকারী সক্রিয় সেনাদের বরখাস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল।  তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এটি প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

গাজায় তাদের আচরণের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলাও চলছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ